ভোরের আকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০১ জুন ২০২৫ ০৯:১৪ পিএম
ঈদের দিন কেমন থাকবে আবহাওয়া
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কয়েক দিন ধরে টানা বা থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। আট বিভাগেই আকাশের একই অবস্থা বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এমন এক সময় এই মেঘবৃষ্টি চলছে যখন মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে দেশজুড়ে।
ঈদের ছুটি শুরু হলেই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কর্মকর্তারা নিজ নিজ জেলায় ফিরতে শুরু করবেন। ঈদের দিনের জামাত বা পশু কোরবানির সময় আবহাওয়া কেমন থাকবে, তা নিয়েও এক ধরনের দুঃশ্চিন্তা রয়েছে। ২ জুনের পর সপ্তাহ জুড়ে সারা দেশেই হালকা থেকে মাঝারি মাত্রার বৃষ্টিপাত হবে এবং রাজশাহী ও রংপুরে বৃষ্টিপাতের তীব্রতা তুলনামূলক কম থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়াবিদরা।
গত ২৭ মে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে যে লঘুচাপ তৈরি হয়েছিল, তার প্রভাবেই সারা দেশে বৃষ্টি হচ্ছে বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে। লঘুচাপটি পরে আর ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়নি, বরং গভীর নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার পর তা গত বৃহস্পতিবার রাতে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করেছে।
গত শনিবার দুপুরে আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক জানিয়েছেন, বাংলাদেশে আগামী কয়েক দিনে ঘূর্ণিঝড় বা লঘুচাপ সৃষ্টির কোনো আভাস নেই। তবে এখন যেহেতু দেশব্যাপী মৌসুমি বায়ু বইছে, তাই আগামী কয়েক দিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে থেমে থেমে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও তিনি জানান।
আবুল কালাম মল্লিক জানান, ২ জুনের দিকে বৃষ্টিপাত কমে আসবে। কিন্তু একেবারে থেমে যাবে না। এ সপ্তাহ জুড়ে সারা দেশেই হালকা থেকে মাঝারি মাত্রার বৃষ্টিপাত হবে। তবে উত্তরাঞ্চলের বিভাগ রাজশাহী ও রংপুরে বৃষ্টিপাতের তীব্রতা তুলনামূলক কম থাকবে।
আবুল কালাম মল্লিক জানান, ঈদের দিন সারা দেশেই বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। তবে তিন দিন আগে আরো স্পেসিফিক করে বলা সম্ভব। এই পুরো সময়টা জুড়ে ভ্যাপসা গরম থাকবে। কারণ বাতাসে জলীয় বাষ্পের আধিক্য থাকবে বলে গরম পড়বে। মূলত বাতাসে যখন জলীয় বাষ্পের উপস্থিতি বেশি থাকে, তখন গরম অনুভূত হয়।
এই আবহাওয়াবিদ আরও জানান, ‘আগামী ২ তারিখের পর গরম কিছুটা বাড়বে এবং আগামী ৭ জুনের পর ৩২ থেকে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মাঝে ওঠানামা করবে।’
গত বছর জুনের মাঝা-মাঝিতে কোরবানির ঈদ হয়েছিল। তখন টানা বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটের অনেক অঞ্চল বন্যায় প্লাবিত হয়েছিল। ঘরবাড়িতে পানি উঠে যাওয়ায় অনেকেই সেবার পশু কোরবানি দিতে পারেননি। পানি কমে গেলে ঈদের দ্বিতীয় বা তৃতীয় দিন অনেকে কোরবানি দিয়েছেন।
এ বছরও তেমন কোনো শঙ্কা আছে কি-না জানতে চাইলে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত তেমন কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। তবে টানা বৃষ্টির কারণে দেশের কোনো কোনো নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পেয়েছে।
আকস্মিক বন্যাপ্রবণ নদীগুলোতে পানি বাড়ার তথ্য সাধারণত তিনদিন আগে সঠিকভাবে দেওয়া সম্ভব উল্লেখ করে তিনি বলেন, নদীর পানি বাড়লেও আগামী ১০ দিনের মাঝে বন্যা হবে না।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, সোমবার ময়মনসিংহ, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা ও খুলনা বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো/হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি-বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে ময়মনসিংহ, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।
মঙ্গলবার ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায়; ঢাকা ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো/হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি-বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।
আগামী বুধবার রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো/হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
আগামী বৃহস্পতিবার রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো/হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
ভোরের আকাশ/এসএইচ