নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৩ জুলাই ২০২৫ ১১:৪৪ পিএম
ডলারের বিপরীতে শক্তিশালী হচ্ছে টাকা, রেমিট্যান্স ও রপ্তানি প্রবাহে বাজারে স্থিতি
প্রবাসী আয়ের রেকর্ড প্রবাহ ও রপ্তানি আয়ের উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধির ফলে ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশি টাকার মান দৃঢ় হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের মাত্র ১১ মাসের ব্যবধানে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে এই ইতিবাচক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ১০ দিনে টাকার বিপরীতে ডলারের দাম কমেছে। আজ দেশের বেশিরভাগ ব্যাংক প্রতি ডলার ১২০.৩০ টাকা থেকে ১২১.২০ টাকায় বিক্রি করেছে। অথচ গত সপ্তাহের শুরুতে এই দর ছিল ১২২.৮০ থেকে ১২২.৯০ টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন রেকর্ড ৩০.৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা আগের অর্থবছরের ২৩.৯১ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় ২৬.৮০ শতাংশ বেশি।
চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসের প্রথম ১২ দিনেই প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন প্রায় ১,০৭১ মিলিয়ন ডলার, যেখানে গত বছরের একই সময়ে এই পরিমাণ ছিল ৯৪৮ মিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ রেমিট্যান্স প্রবাহেও দেখা যাচ্ছে ইতিবাচক ধারাবাহিকতা।
এই সময়কালে গড়ে প্রতিদিন ৮৯.২৫ মিলিয়ন ডলার দেশে এসেছে রেমিট্যান্স হিসেবে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশের রপ্তানি আয় ৮.৫৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৮.২৮ বিলিয়ন ডলারে। যা দেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ও ডলারের সরবরাহ বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, “বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালু করলেও ডলারের দাম কমছে এবং টাকার মান শক্তিশালী হচ্ছে, যা আমাদের অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক সংকেত।”
তিনি বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকার অর্থনীতি, প্রশাসন ও প্রতিষ্ঠান সংস্কারে বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এতে জনগণের মধ্যে আস্থা বাড়ছে এবং বাজারে স্থিতি ফিরেছে।”
ডলারের দরপতনের মূল কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন সরবরাহ বৃদ্ধি। তার ভাষায়, “গত দুই বছরের মধ্যে বর্তমানে ডলারের সরবরাহ সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “হঠাৎ রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধির পেছনে রয়েছে বিভিন্ন সরকারি উদ্যোগ, যেমন—মূলধনী বাজারে কারসাজি রোধে কঠোর ব্যবস্থা ও রপ্তানিমুখী খাতকে প্রণোদনা দেওয়া। এর ফলেই রপ্তানি আয় ৪৮ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা বাজারে ডলার সরবরাহে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে।”
ভোরের আকাশ//হ.র