কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৪ মে ২০২৫ ১০:১৮ এএম
কক্সবাজারের ইনানী সৈকতে ভেসে এলো তিমি
কক্সবাজারের ইনানী সমুদ্র সৈকতে ভেসে এলো প্রায় ১০০ কেজি ওজনের একটি তিমি। প্রাণীটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৮-১০ ফুট। এটি ‘বামন শুক্রাণু তিমি’ নামে পরিচিত । শুক্রবার (২৩ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে সৈকতের পাথরে আটকা পড়ে তিমিটি ।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের ইনানী রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. ফিরোজ আল আমিন।
বনবিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ইনানী সৈকতের পাথরে আটকা পড়ে প্রায় ১০০ কেজি ওজনের একটি তিমি। প্রথমে পর্যটকেরা তিমিটি নিয়ে ছবি তুলেন এবং পরবর্তীতে তিমিটি টেনে বালিয়াড়িতে আনার চেষ্টা করা হয়। এ সময় খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে বন বিভাগের লোকজন পৌঁছে পর্যটকদের বুঝানোর পর তিমিটি উদ্ধার করা হয়। দেখা গেছে তিমির মাথায় এবং পেটে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে পাথর অথবা জেলেদের মাছ ধরার জালে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে তিমিটি। বিচ কর্মী ও বন বিভাগের কর্মীরা বেশ কয়েকবার পানিতে ছেড়ে দেয়ার চেষ্টা করেও তাকে সাগরে ফেরানো যাচ্ছিলনা। পরে প্রায় ২ ঘণ্টা টানা চেষ্টা চালিয়ে তাকে গভীর সাগরে অবমুক্ত করা হয়েছে।
ইনানী সৈকতের বীচ কর্মী বেলাল উদ্দিন বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় তিমিটি সৈকতের পাথরে এসে আটকা পড়ে। পরে বনবিভাগে খবর দেয়া হলে স্থানীয় লোকজন, বীচকর্মী ও বনবিভাগ চেষ্টা চালিয়ে তিমিটি গভীর সাগরে অবমুক্ত করা হয়েছে।
ইনানী রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. ফিরোজ আল আমিন বলেন, খবর পেয়ে দ্রুত টিম নিয়ে ইনানী সৈকতে আসি। প্রাথমিক অবস্থায় তিমির মাথায় ও পেটে আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়। হয়তো পাথরে আঘাত পেয়েছে। এটি বামন শুক্রাণু তিমি, এর ওজন প্রায় ১০০ কেজি এবং দৈর্ঘ্য ৮-১০ ফুটের মতো হবে।
তিমি প্রায় সময় সাগর উপকূলে চলে আসে। হয়তো কোনো কারণে এটি উপকূলে চলে এসেছে। এসব প্রাণী মূলত অল্প পানিতে সাঁতার কাটতে পারেনা। তাই তিমিটি বনবিভাগের কর্মীসহ বিচ কর্মীদের সহায়তায় রাত ৮টা ১৫ মিনিটের দিকে সাগরের গভীর পানিতে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। পরে এটি গভীর সাগরে ফিরে যেতে দেখা গেছে। এই প্রজাতির তিমি বাংলাদেশে সর্বশেষ ২০২২ সালের দিকে কুয়াকাটা বিচে দেখা গিয়েছিল বলে জানান এই বনকর্মকর্তা।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, বামন শুক্রাণু তিমি (কড়মরধ ংরসধ) হল একটি শুক্রাণু তিমি যা বিশ্বব্যাপী নাতিশীতোষ্ণ এবং গ্রীষ্মমন্ডলীয় মহাসাগরে বাস করে, বিশেষ করে মহাদেশীয় তাক এবং ঢালে। প্রকৃতিবিদ স্যার ওয়াল্টার এলিয়টের চিত্রের উপর ভিত্তি করে জীববিজ্ঞানী রিচার্ড ওয়েন ১৮৬৬ সালে এটির প্রথম বর্ণনা দিয়েছিলেন ।
১৮৭৮ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত এই প্রজাতিটিকে পিগমি শুক্রাণু তিমি, এর সমার্থক হিসেবে বিবেচনা করা হত। বামন শুক্রাণু তিমি হল একটি ছোট তিমি । যার রঙ ধূসর, মাথা বর্গাকার, চোয়াল ছোট এবং দেহ শক্ত। এর চেহারা পিগমি শুক্রাণু তিমির মতো, যা মূলত শরীরের পৃষ্ঠীয় পাখনার অবস্থান দ্বারা আলাদা করা হয়।
ভোরের আকাশ/আজাসা