ভোরের আকাশ ডেস্ক
প্রকাশ : ৩০ আগস্ট ২০২৫ ০৯:৩১ এএম
সংগৃহীত ছবি
গাজায় চলমান দখল, গণহত্যা, জাতিগত নিধন ও ধ্বংসযজ্ঞের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে ঢাকায় ‘মার্চ ফর গাজা’ সমাবেশ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে অংশ নেন বিভিন্ন ওলামায়ে কেরাম এবং সাধারণ মুসল্লিরা।
শুক্রবার (২৯ আগস্ট) বায়তুল মোকাররমের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসূচিতে আরবি, ইংরেজি ও বাংলা ভাষায় একটি ঘোষণাপত্র ও অঙ্গীকারনামা পাঠ করা হয়। বাংলায় ঘোষণাপত্র পাঠ করেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম।
সমাবেশ থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও জাতিসংঘকে অবিলম্বে গাজায় গণহত্যা বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। পাশাপাশি মুসলিম উম্মাহর নেতাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ফিলিস্তিন রক্ষায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নিতে অনুরোধ করা হয়।
মিছিলে উপস্থিত ছিলেন মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ভিসি প্রফেসর ড. আব্দুর রব, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, জাইনুল আবেদীন, আশরাফ আলী আকন, আবদুল হালিম, মুজিবুর রহমান হামিদী প্রমুখ।
জাহিদুল ইসলাম বলেন, দখলদার ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজা মৃত্যুপূর্ণ এলাকায় পরিণত হয়েছে। খাদ্য ও জ্বালানি সরবরাহ অবরুদ্ধ করে পুরো জনসংখ্যাকে অনাহারে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত হাজার হাজার শিশু, বৃদ্ধ, সাংবাদিকসহ লক্ষাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। ক্রমাগত বোমা বর্ষণে হাসপাতাল, স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয় ও মসজিদগুলো ধ্বংস করা হচ্ছে। রাতের আশ্রয়স্থল লক্ষ্য করেও বিমান হামলা চালানো হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, সরাসরি গুলি চালিয়ে হত্যা করা হচ্ছে উদ্ধারকর্মীদের। গাজা এখন কসাইখানায় পরিণত হয়েছে, যেখানে নতুন নতুন কবর খনন করা হচ্ছে। প্রতিনিয়ত সেই কবরের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, নারী ও শিশুদের লাশের সারি দীর্ঘ হচ্ছে।
সাংবাদিকদের হত্যা করা হচ্ছে যাতে গণহত্যার সত্যতা বিশ্ববাসীর কাছে না পৌঁছায়। এ পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছে, লক্ষাধিক মানুষ কর্মহীন হয়েছে। এই পরিকল্পিত হত্যার প্রতিবাদে বিশ্বের মানুষ রাজপথে নেমেছে। এশিয়া, ইউরোপসহ যেসব অঞ্চলে ন্যায় ও মানবতা আছে, সেখানে গাজার পক্ষে প্রতিবাদ গড়ে উঠেছে। বাংলাদেশও এর অংশ।
মিছিলে যেসব দাবি উপস্থাপন করা হয় সেগুলো হলো:-
১. অবিলম্বে গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যা বন্ধ করতে হবে।
২. জায়নবাদী ইসরায়েলের গণহত্যার বিচার আন্তর্জাতিক আদালতে নিশ্চিত করতে হবে।
৩. শুধু যুদ্ধবিরতি নয়, গণহত্যা বন্ধে কার্যকর ও সম্মিলিত পদক্ষেপ নিতে হবে।
৪. ১৯৬৭ সালের পূর্ববর্তী ভূমি ফিরিয়ে দিতে বাধ্যবাধকতা তৈরি করতে হবে।
৫. পূর্ব জেরুজালেমকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিতে হবে।
৬. ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণ, নিরাপত্তা ও রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার পথ উন্মুক্ত করতে হবে।
৭. ইসরায়েলি পণ্য, প্রযুক্তি, অস্ত্র ও বিনিয়োগের ওপর বৈশ্বিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে।
৮. গাজার অবরোধ ভেঙে খাদ্য, পানীয়, ঔষধ ও মানবিক সহায়তা প্রবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
৯. জায়নিস্ট অর্থনীতিকে সহযোগিতা করা বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে কালো তালিকাভুক্ত করতে হবে।
১০. আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ও গণমাধ্যমকে গাজায় প্রবেশাধিকার দিয়ে গণহত্যার সত্য বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরতে হবে।
ভোরের আকাশ/তা.কা