আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ০১ জুন ২০২৫ ০৬:৩৪ এএম
গাজা এখন বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুধার্ত এলাকা
গাজা উপত্যকা এখন বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ খাদ্যসংকটে ভোগা এলাকা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। ৩০ মে শুক্রবার এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সংস্থা (OCHA) জানায়, গাজার জনগণ চরম অনাহারের ঝুঁকিতে রয়েছে। অবিলম্বে সহায়তা পৌঁছাতে না পারলে পরিস্থিতি ভয়াবহ দুর্ভিক্ষে রূপ নিতে পারে।
OCHA-এর মুখপাত্র জেন্স লারকে জানান, ইসরায়েলের বাধার কারণে এখনও গাজায় পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে পারছে না। সম্প্রতি অনুমোদিত ৯০০টি সাহায্যবাহী ট্রাকের মধ্যে মাত্র ৬০০টি গাজায় ঢুকেছে।
তিনি বলেন, “আমরা যা নিয়ে যেতে পেরেছি, তা কেবল ময়দা। অথচ শতভাগ গাজাবাসী এখন দুর্ভিক্ষের চরম ঝুঁকিতে রয়েছে। ময়দা রান্না ছাড়া খাওয়ার উপযোগী নয়, কিন্তু সেখানকার অবস্থা এতটাই শোচনীয় যে অনেকের কাছে রান্নারও সুযোগ নেই।”
গত দুই সপ্তাহে নতুন করে আরও ২ লাখ মানুষ গাজায় বাস্তুচ্যুত হয়েছেন বলে জানান লারকে। সীমান্তে নিরাপত্তাজনিত জটিলতা এবং সহায়তা প্রবেশে নানা বাধার কারণে পরিস্থিতি আরও সংকটময় হয়ে উঠেছে।
এদিকে, জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ (UNRWA) জানায়, জর্ডানের আম্মানে সংস্থাটির গুদামে গাজার জন্য এক মাসের প্রয়োজনীয় খাদ্য, ওষুধ ও অন্যান্য মানবিক উপকরণ মজুত রয়েছে, যা একবারে ২ লাখ মানুষের জন্য পর্যাপ্ত। তবে সীমান্ত না খুললে এসব সহায়তা পৌঁছানো সম্ভব নয়।
সংস্থাটি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলে, “গাজার মানুষ এখন জরুরি মানবিক সহায়তার জন্য অপেক্ষা করছে। সামান্য দেরিতেও চরম বিপর্যয় নেমে আসবে।”
এর আগে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক একাধিক সংস্থা প্রকাশিত এক যৌথ প্রতিবেদনে জানানো হয়, মার্চ মাসের শুরু থেকে গাজায় সব ধরনের সহায়তা কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে এলাকাজুড়ে অনাহার, অপুষ্টি ও দুর্ভিক্ষ ভয়াবহ আকার নিচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, অব্যাহত অবরোধ ও সহায়তা সংকট শুধু গাজার মানবিক বিপর্যয়কেই ত্বরান্বিত করছে না, বরং তা গোটা বিশ্বের জন্য এক করুণ বাস্তবতা তুলে ধরছে। পরিস্থিতির অবসানে দ্রুত আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ জরুরি।
ভোরের আকাশ//হ.র