যুদ্ধবিরতির পক্ষে কম্বোডিয়া, সীমান্তে সামরিক শক্তি বাড়াচ্ছে থাইল্যান্ড
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে চলমান সংঘাত নিরসনে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে কম্বোডিয়া। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে দেশটি। তবে থাইল্যান্ড এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক সম্মতি দেয়নি, বরং সীমান্ত এলাকায় সামরিক শক্তি আরও বাড়াচ্ছে তারা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী হুন মানেত শুক্রবার এক ফেসবুক পোস্টে বলেন, “থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে সংঘাত নিরসনের জন্য মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবকে আমি স্বাগত জানাই। তবে এই সংকটের সমাধানের চাবিকাঠি এখন থাইল্যান্ডের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করছে।”
উল্লেখ্য, দুই দেশের মধ্যে এক দশকের মধ্যে এটি সবচেয়ে তীব্র সংঘাত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এ সংকট সমাধানে মধ্যস্থতা করছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম, যিনি বর্তমানে আসিয়ান জোটের সভাপতিও।
এদিকে চীনও দ্বিপক্ষীয় এই সংঘাতে মধ্যস্থতার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেন, “এই বিরোধের মূল কারণ ঐতিহাসিকভাবে পশ্চিমা উপনিবেশবাদের রেখে যাওয়া দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব। এখন সময় এসেছে শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমস্যার সমাধানে এগিয়ে আসার।” তিনি আরও জানান, চীন সংকট নিরসনে গঠনমূলক এবং নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রাখবে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, বেইজিংয়ে আসিয়ান মহাসচিব কাও কিম হোর্নের সঙ্গে বৈঠকে চীনের পক্ষ থেকে উদ্বেগ জানানো হয়েছে। চীন মনে করছে, হতাহতের প্রতিটি ঘটনা অত্যন্ত বেদনাদায়ক এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে সংঘাত বন্ধ হওয়া উচিত।
অন্যদিকে সীমান্ত অঞ্চলে দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে পাল্টাপাল্টি হামলা। শুক্রবার সকাল থেকে উভয় পক্ষই ভারী অস্ত্র ব্যবহার করছে, যা পুরো এলাকাকে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ঠেলে দিয়েছে।
আঞ্চলিক পর্যবেক্ষকদের মতে, যদি দ্রুত কোনো সমাধানে পৌঁছানো না যায়, তাহলে সীমান্ত সংঘাত আরও বিস্তৃত আকার ধারণ করতে পারে, যা পুরো আসিয়ান অঞ্চলের স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।
ভোরের আকাশ//হ.র
সংশ্লিষ্ট
রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ড্রোন হামলায় কমপক্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে রাশিয়ায় দুজন এবং ইউক্রেনে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। একই দিনে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে দুই দেশের মধ্যকার যুদ্ধবিরতি ইস্যুতে তৃতীয় দফার আলোচনা হলেও তাতে তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি।ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় খারকিভে একটি বাড়িতে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া চেরকাসি ও জাপোরিঝঝিয়া শহরে হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। ঐতিহাসিক ওডেসা শহরের ইউনেসকো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্য স্থান প্রিভোজ বাজারেও হামলা চালানো হয়, যার ফলে শহরের বিভিন্ন এলাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে। সকালে খারকিভে আরেকটি হামলায় আহত হন আরও ৩৩ জন।অন্যদিকে রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় সোচি শহরে ইউক্রেনের ড্রোন হামলায় দুইজন নিহত এবং ১১ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে রুশ কর্তৃপক্ষ।এই হামলার কয়েক ঘণ্টা আগে ইস্তাম্বুলে যুদ্ধবিরতি নিয়ে সংক্ষিপ্ত বৈঠকে বসে দুই দেশের প্রতিনিধিদল। তবে এক ঘণ্টার সেই বৈঠক থেকে খুব একটা আশাব্যঞ্জক বার্তা মেলেনি। ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিদলের প্রধান জানান, বড় কোনো অগ্রগতির আশা করেই তারা আলোচনা শুরু করেননি। রুশ প্রতিনিধিদলের প্রধান ভ্লাদিমির মেদিনস্কি জানিয়েছেন, আলোচনায় উভয় পক্ষ ১,২০০ যুদ্ধবন্দি বিনিময়ে সম্মত হয়েছে এবং রাশিয়া তিন হাজার ইউক্রেনীয় সেনার মরদেহ ফেরত পাঠাতে চেয়েছে।তবে এই আলোচনা থেকে যুদ্ধ থামানোর মতো কোনো বাস্তব পদক্ষেপ আসেনি। বরং উভয় পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের অভিযোগ তুলেছে।ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, “আমরা কোনো বড় অগ্রগতির প্রত্যাশা করিনি। এই ধরনের অগ্রগতি অর্জন খুবই কঠিন।” তিনি আরও বলেন, ইউক্রেন সরাসরি বৈঠকের যে প্রস্তাব দিয়েছে তা এখনো সময়ের আগেই উঠে এসেছে। “তারা ঘোড়ার আগেই গাড়ি টানতে চাইছে,”—উল্লেখ করেন পেসকভ।ইউক্রেনীয় প্রতিনিধি রুস্তেম উমেরভ জানিয়েছেন, আগস্টের মধ্যে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ও প্রেসিডেন্ট পুতিনের সরাসরি বৈঠকের আয়োজন করাই তাদের প্রধান লক্ষ্য। কিন্তু এর আগে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ বাকি বলে মনে করছে মস্কো।এর আগে মে ও জুনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আহ্বানে প্রথম ও দ্বিতীয় দফার আলোচনা হয়। তিনি যুদ্ধ বন্ধে ৫০ দিনের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন এবং সময়মতো সমাধান না হলে রাশিয়ার ওপর কঠোর শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন।রাশিয়ার অবস্থান এখনো অপরিবর্তিত। তারা চায় ইউক্রেনকে নিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা, সামরিক সক্ষমতা হ্রাস এবং ন্যাটোতে যোগদানের আকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করতে হবে। তবে কিয়েভ ও পশ্চিমা মিত্ররা এই শর্তগুলো মানতে নারাজ।বৈঠকের পর এক বিবৃতিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, “আমরা কূটনৈতিক সমাধানে সবকিছু করব, কিন্তু যুদ্ধ শেষ করতে হবে রাশিয়াকেই—কারণ তারাই এটা শুরু করেছিল।”ভোরের আকাশ//হ.র
জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য এক দেশ এখন অন্য দেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইনে মামলা করতে পারবে—জাতিসংঘের শীর্ষ আদালত আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) এই ঐতিহাসিক রায় দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, অতীতে কোন দেশ কতটা গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ করেছে, সেটিও মামলার বিবেচনায় আনা যাবে।বুধবার (২৩ জুলাই) রাতে বিবিসির খবরে জানানো হয়, নেদারল্যান্ডসের হেগে অবস্থিত আইসিজে জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত এই যুগান্তকারী রায় দেয়। যদিও রায়টি আইনি দিক থেকে বাধ্যতামূলক নয়, তবে বিশেষজ্ঞদের মতে এর বিশ্বজুড়ে প্রভাব হতে পারে গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী।বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ছোট দ্বীপরাষ্ট্রগুলোর জন্য এটি এক বড় অর্জন। বহু বছর ধরে আন্তর্জাতিকভাবে কার্যকর পদক্ষেপের অভাবে হতাশ এসব দেশ এখন আইনি পথে ন্যায়বিচার পাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে।এই মামলার সূচনা হয়েছিল ২০১৯ সালে, প্যাসিফিক অঞ্চলের কয়েকজন তরুণ আইন শিক্ষার্থীর ব্যতিক্রমী উদ্যোগে। তাদের একজন ছিলেন টোঙ্গার সিওসিউয়া ভেইকুনে, যিনি রায় ঘোষণার সময় হেগে উপস্থিত ছিলেন। উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে তিনি বলেন, “এই জয় আমাদের সমাজের জন্য গর্বের মুহূর্ত। আদালত আমাদের কষ্টকে স্বীকৃতি দিয়েছে।”ভানুয়াতুর জলবায়ু অধিকারকর্মী ফ্লোরা ভানো বলেন, “এই রায় শুধু আমাদের নয়, পৃথিবীর সেইসব মানুষের পক্ষে যারা বহুদিন ধরে অবহেলিত ছিলেন।”আইসিজের বিচারপতি ইওয়াসাওয়া ইউজি বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তন রোধে উচ্চাকাঙ্ক্ষী পদক্ষেপ না নিলে তা প্যারিস চুক্তির লঙ্ঘন হিসেবে গণ্য হতে পারে।” তিনি আরও বলেন, এমনকি যেসব দেশ প্যারিস চুক্তিতে স্বাক্ষর করেনি কিংবা তা থেকে সরে গেছে (যেমন—যুক্তরাষ্ট্র), তাদেরও আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় পরিবেশ রক্ষার দায়িত্ব পালন করতে হবে।রায়ে আরও বলা হয়, উন্নয়নশীল দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হওয়া ক্ষতির জন্য ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারবে। যদি কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত বলে প্রমাণিত হয়, তবে সেটির জন্যও ক্ষতিপূরণ প্রযোজ্য হবে। এমনকি, কোনো দেশ যদি নতুন করে জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক প্রকল্পে বিনিয়োগ বা ভর্তুকি দেয়, সেটিও আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে অসঙ্গত হতে পারে।যদিও এই রায় বাধ্যতামূলক নয়, তবে এটি জাতিসংঘ ও বিভিন্ন দেশের আদালতের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ আইনি দৃষ্টান্ত হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। তবে আইসিজেতে মামলা করতে হলে সংশ্লিষ্ট দেশকে আদালতের এখতিয়ার স্বীকার করতে হবে। যেমন—যুক্তরাজ্য স্বীকার করলেও যুক্তরাষ্ট্র ও চীন এখনো তা করেনি।এই রায়কে জলবায়ু ন্যায়ের পথে এক বিশাল অগ্রগতি হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। অনেকের মতে, এটি ভবিষ্যতের আন্তর্জাতিক পরিবেশ নীতিতে নতুন দিগন্ত খুলে দেবে।ভোরের আকাশ//হ.র
রাশিয়ার বাজারে আসছে নতুন একটি মেসেঞ্জার অ্যাপ ‘ম্যাক্স’। আগামী সেপ্টেম্বর থেকে দেশটিতে বিক্রি হওয়া সব ডিজিটাল ডিভাইসে এই অ্যাপটি প্রি-ইনস্টল থাকবে। এর মাধ্যমে রুশ সরকারের গোপন নজরদারির আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। বৃহস্পতিবার এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।গুপ্তচরবৃত্তির শঙ্কাব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দি ইন্ডিপেনডেন্ট-এর বরাতে বলা হয়, ‘ম্যাক্স’ শুধু মেসেজিং ও ভিডিও কলের জন্যই নয়, বরং সরকারি সেবা, মোবাইল পেমেন্টসহ একাধিক সুবিধা দেবে। তবে প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের দাবি, এই অ্যাপে এমন সফটওয়্যার রয়েছে, যা রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা এফএসবিকে নাগরিকদের তথ্য ও কার্যক্রম নজরদারির সুযোগ করে দেবে।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেহেতু অ্যাপটির সার্ভার রাশিয়ার অভ্যন্তরে, তাই এটি দেশটির আইনের অধীন থাকবে। ফলে রুশ কর্তৃপক্ষ চাইলে নির্দিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করতে পারবে।হোয়াটসঅ্যাপ নিষিদ্ধের শঙ্কাবিশ্লেষকেরা আশঙ্কা করছেন, এই অ্যাপ চালু হওয়ার পর রাশিয়ায় জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ নিষিদ্ধ হয়ে যেতে পারে। বর্তমানে দেশটিতে প্রায় ৭০ শতাংশ নাগরিক হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করেন। মায়াক ইন্টেলিজেন্সের পরিচালক ও রাশিয়া-সংক্রান্ত বিশ্লেষক মার্ক গ্যালিওটি জানিয়েছেন, ‘ম্যাক্স ব্যবহারে নাগরিকদের চাপ দেওয়া হবে।’রাশিয়ার একজন বিরোধী সাংবাদিক আনদ্রে ওকুন আরও কড়া ভাষায় বলেছেন, “ম্যাক্স অ্যাপ হচ্ছে ‘ডিজিটাল গুলাগ’—যেখানে নাগরিকদের ব্যক্তিগত সময়, পরিকল্পনা এমনকি চিন্তার ওপরও নিয়ন্ত্রণ থাকবে।”অনলাইন নিয়ন্ত্রণের ধারাবাহিক পদক্ষেপবিভিন্ন প্রযুক্তি বিশ্লেষক বলছেন, ‘ম্যাক্স’ অ্যাপ রাশিয়ার অনলাইন নিয়ন্ত্রণ পরিকল্পনার সর্বশেষ সংযোজন মাত্র। রাশিয়া-বিষয়ক বই War on Everybody-এর লেখক কেইর জাইলস মনে করেন, এটি ইন্টারনেট নজরদারিকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা। তিনি বলেন, “গুগল, স্কাইপ, হটমেইলের মতো আন্তর্জাতিক অ্যাপ ব্যবহার করায় নাগরিকদের বার্তা পড়তে না পারায় রুশ গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বরাবরই হতাশ। তাই দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী দীর্ঘদিন ধরেই হোয়াটসঅ্যাপের মতো প্ল্যাটফর্মকে সরিয়ে নিজস্ব অ্যাপ ব্যবহারে জনগণকে বাধ্য করার পরিকল্পনা করছে।”বিশেষজ্ঞদের মতে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নেতৃত্বে তৈরি হওয়া এই অ্যাপ রুশ নাগরিকদের ডিজিটাল স্বাধীনতা ও গোপনীয়তার জন্য নতুন হুমকি হয়ে উঠতে পারে।সূত্র: এনডিটিভি, দি ইন্ডিপেনডেন্টভোরের আকাশ//হ.র
উত্তর কোরিয়ার সেনাবাহিনীকে ‘প্রকৃত যুদ্ধের জন্য সবসময় প্রস্তুত’ থাকার নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন। সামরিক বাহিনীর আর্টিলারি ইউনিটের গোলাবর্ষণ প্রতিযোগিতা পর্যবেক্ষণের সময় এই বার্তা দেন তিনি। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ ও কোরিয়া সেন্ট্রাল টেলিভিশনের খবরে এই তথ্য জানানো হয়েছে।প্রচারিত ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, সৈন্যরা সাগরের দিকে ভারী গোলাবর্ষণ চালাচ্ছেন। কিম জং উন দূরবীন হাতে একটি পর্যবেক্ষণ পোস্টে দাঁড়িয়ে সেই মহড়া মনোযোগ সহকারে দেখছেন। তার পাশে ছিলেন সামরিক বাহিনীর শীর্ষ দুই কর্মকর্তা। তবে এই মহড়াটি ঠিক কোথায় অনুষ্ঠিত হয়েছে, সে বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।কেসিএনএ জানিয়েছে, কিম সৈন্যদের যুদ্ধ প্রস্তুতি নিয়ে বলেন— "তোমাদের এমনভাবে প্রস্তুত হতে হবে, যেন যেকোনো সময় শত্রুপক্ষকে ধ্বংস করে দেওয়া সম্ভব হয়। প্রতিটি লড়াইয়ে তোমাদের জয়ী হতেই হবে।"বিশ্লেষকরা মনে করছেন, কিমের এমন হুশিয়ারি এবং মহড়ার সময়সূচি আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বর্তমানে উত্তর কোরিয়া রাশিয়াকে ইউক্রেন যুদ্ধে সরাসরি সামরিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।দক্ষিণ কোরিয়া ও পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, গত বছর উত্তর কোরিয়া রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে অন্তত ১০ হাজার সৈন্য, বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ, ক্ষেপণাস্ত্র ও দূরপাল্লার রকেট পাঠিয়েছে। সিউলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, যুদ্ধের ময়দানে রাশিয়ার পক্ষে লড়তে গিয়ে এখন পর্যন্ত অন্তত ৬০০ জন উত্তর কোরিয়ান সেনা নিহত হয়েছেন এবং কয়েক হাজার আহত হয়েছেন।সম্প্রতি রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের সঙ্গে বৈঠকে কিম জং উন ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার প্রতি ‘পূর্ণ সমর্থন’ দেওয়ার ঘোষণা দেন। এর আগে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঐতিহাসিক পিয়ংইয়ং সফরে দুই দেশের মধ্যে একটি সামরিক সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর হয়, যেখানে পারস্পরিক প্রতিরক্ষার ধারাও যুক্ত রয়েছে।সূত্র: এএফপিভোরের আকাশ//হ.র