আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ২১ মে ২০২৫ ০৭:২৯ এএম
যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষা খাতে বড় সাইবার হামলা: ৬ কোটির বেশি শিক্ষার্থীর তথ্য চুরি
যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা খাতে বড় ধরনের সাইবার হামলার ঘটনা ঘটেছে। দেশের সবচেয়ে বড় শিক্ষা সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান PowerSchool-এর সাইবার সুরক্ষা ভেঙে চুরি হয়েছে কোটি কোটি শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের সংবেদনশীল তথ্য। এই ঘটনায় ম্যাসাচুসেটসের ১৯ বছর বয়সী তরুণ ম্যাথিউ লেন দায় স্বীকার করেছেন।
ফেডারেল আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিতে লেন জানান, তিনি ও তার সহযোগীরা PowerSchool-এর ডেটাবেজ থেকে শিক্ষার্থীদের নাম, ঠিকানা, জন্মতারিখ, এমনকি সোশ্যাল সিকিউরিটি নাম্বারের মতো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চুরি করেন এবং বিনিময়ে ২.৮৫ মিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ বিটকয়েন মুক্তিপণ দাবি করেন।
PowerSchool বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ১৮ হাজার স্কুলে ব্যবহৃত হয় এবং প্রায় ৬ কোটির বেশি শিক্ষার্থী ও ১ কোটির মতো শিক্ষক এর তথ্য এতে সংরক্ষিত থাকে। ফলে এই হামলার পরিসর ও প্রভাব অত্যন্ত ভয়াবহ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রসিকিউশনের তথ্যমতে, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ম্যাথিউ লেন PowerSchool-এর এক কন্ট্রাক্টরের ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে সিস্টেমে অননুমোদিত প্রবেশ করেন। পরবর্তী মাসগুলোতে তারা কোটি কোটি তথ্য চুরি করে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের শেষে ইউক্রেনে অবস্থিত একটি ক্লাউড সার্ভারে স্থানান্তর করেন।
সাইবার হামলাকারীরা হুমকি দেয় যে, নির্ধারিত মুক্তিপণ না দিলে তারা এই সকল তথ্য জনসমক্ষে ফাঁস করে দেবে।
PowerSchool কর্তৃপক্ষ প্রথম ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪ সালে হামলার বিষয়টি শনাক্ত করে এবং ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে জনসমক্ষে বিষয়টি প্রকাশ করে। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, তারা তড়িৎ ব্যবস্থা নিয়েছে, তবে মুক্তিপণ প্রদান করেছে কিনা সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
ফেডারেল তদন্তকারীরা আরও জানান, ম্যাথিউ লেন ও তার দল পূর্বেও একই কৌশলে একটি নাম প্রকাশ না করা টেলিকম কোম্পানির তথ্য চুরি করে মুক্তিপণ দাবি করেছিল।
লেন বর্তমানে সাইবার অপরাধ, পরিচয় চুরি ও কম্পিউটার সিস্টেমে অননুমোদিত প্রবেশ সংক্রান্ত অভিযোগে দোষ স্বীকার করেছেন। তার বিরুদ্ধে মামলা চলছে এবং কমপক্ষে দুই বছরের কারাদণ্ড হতে পারে বলে জানা গেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ঘটনা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের তথ্য নিরাপত্তা আরও শক্তিশালী করার জন্য একটি জোরালো বার্তা দিয়েছে। ভবিষ্যতে এমন সাইবার হামলা ঠেকাতে তথ্য সুরক্ষায় কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান তারা।
ভোরের আকাশ//হ.র