আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ০৭ আগস্ট ২০২৫ ০১:১৬ এএম
ফ্রান্স-ব্রিটেনের নতুন অভিবাসন চুক্তি শিগগিরই কার্যকর
ইউরোপজুড়ে অভিবাসন ইস্যুতে উত্তেজনা যখন তুঙ্গে, ঠিক তখনই যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের মধ্যকার নতুন অভিবাসন চুক্তি শিগগিরই কার্যকর হতে যাচ্ছে। চলতি বছরের জুলাই মাসে চুক্তিটি ঘোষণা করা হলেও সম্প্রতি ইউরোপীয় কমিশন ও ইইউ সদস্য দেশগুলোর চূড়ান্ত অনুমোদনের পর এর বাস্তবায়নের পথ পুরোপুরি উন্মুক্ত হয়েছে।
ব্রিটিশ সরকার জানিয়েছে, এই চুক্তির আওতায় ইংলিশ চ্যানেল পেরিয়ে ছোট নৌকায় যুক্তরাজ্যে প্রবেশকারী কিছু অভিবাসীকে কয়েক দিনের মধ্যেই ফ্রান্সে ফেরত পাঠানো শুরু হবে। একইসঙ্গে যুক্তরাজ্যে বৈধভাবে অবস্থান করা অভিবাসীদের পরিবারের সদস্যদের ফ্রান্স থেকে লন্ডনে নেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে।
এই পদ্ধতিকে ‘ওয়ান ইন, ওয়ান আউট’ বা ‘একজনের বদলে একজন’ পরিকল্পনা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। গত মাসে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার যৌথভাবে এই উদ্যোগের ঘোষণা দেন।
এ বছর এখন পর্যন্ত ২৫ হাজারেরও বেশি মানুষ ছোট নৌকায় করে ইংলিশ চ্যানেল পেরিয়ে যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছে। এই প্রবণতা নিয়ন্ত্রণে ও মানবপাচার রোধে স্টারমার সরকার চাপে রয়েছে। নির্বাচনে বড় জয়ের পরও তার জনপ্রিয়তা হ্রাস পাওয়ায় রাজনৈতিক চাপ আরও বেড়েছে, বিশেষ করে অভিবাসনবিরোধী রিফর্ম ইউকে পার্টির নেতা নাইজেল ফারাজের সমর্থন বৃদ্ধির কারণে।
অভিবাসন ইস্যুতে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় ইতিমধ্যে পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ হয়েছে। অভিবাসনপন্থী ও অভিবাসনবিরোধী গোষ্ঠীগুলোর এই অবস্থান চুক্তিকে ঘিরে বিতর্ক আরও বাড়াতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে ফরাসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রোতাইয়ো বলেন, “এই চুক্তির মূল লক্ষ্য হলো পাচারকারী চক্রগুলোকে দুর্বল করা।” অন্যদিকে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার স্কাই নিউজকে জানিয়েছেন, “প্রথমে অল্পসংখ্যক অভিবাসীকে ফেরত পাঠানো হবে। পরে ধীরে ধীরে সেই সংখ্যা বাড়ানো হবে।”
প্রাথমিকভাবে প্রতি সপ্তাহে ৫০ জন অভিবাসীকে ফ্রান্সে ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে, যা বছরে দাঁড়াবে আনুমানিক ২,৬০০ জনে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০২৪ সালে ৩৫ হাজারেরও বেশি অভিবাসী যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করেছে— সে প্রেক্ষিতে এই সংখ্যা অপর্যাপ্ত।
তবে কুপার স্পষ্ট করেছেন, “শুধুমাত্র সম্প্রতি যারা ছোট নৌকায় করে এসেছেন, তারাই এই চুক্তির আওতায় থাকবেন। যারা আগে থেকে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন, তারা এর আওতায় পড়বেন না।”
ব্রিটিশ সরকারের মতে, এই নতুন চুক্তি পাচারকারীদের বিরুদ্ধে তাদের বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ। এই পরিকল্পনায় রয়েছে— পাচারকারীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত অবৈধ বিজ্ঞাপন বন্ধে পদক্ষেপ এবং অভিবাসীদের টার্গেট করে দেওয়া অবৈধ কাজ ঠেকাতে ফুড ডেলিভারি কোম্পানিগুলোর সঙ্গে সমন্বয়।
সূত্র: ইনফোমাইগ্রেন্টস
ভোরের আকাশ//হ.র