আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ০৭ আগস্ট ২০২৫ ০১:১৬ এএম
পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার, যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করল রাশিয়া
মধ্য ও স্বল্পপাল্লার পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের ওপর দীর্ঘদিনের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নিয়েছে রাশিয়া। সোমবার (৪ আগস্ট) দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ ঘোষণা দেয়। ন্যাটো ও যুক্তরাষ্ট্রের ‘রাশিয়াবিরোধী নীতি’-কে এই সিদ্ধান্তের জন্য দায়ী করেছেন রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম 'এক্স'-এ দেওয়া এক পোস্টে মেদভেদেভ বলেন, “রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই সিদ্ধান্ত ন্যাটো দেশগুলোর দীর্ঘদিনের রাশিয়াবিরোধী অবস্থানেরই প্রতিফলন। এটি এক নতুন বাস্তবতা, যা আমাদের প্রতিপক্ষদের মেনে নিতে হবে। আরও পদক্ষেপের জন্য প্রস্তুত থাকুন।”
তবে ওই ‘অতিরিক্ত পদক্ষেপ’ কী হতে পারে—তা স্পষ্ট করেননি মেদভেদেভ।
এই সিদ্ধান্ত এমন এক সময় এলো, যখন মাত্র কয়েক দিন আগে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মেদভেদেভের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার জেরে রাশিয়ার ‘উপযুক্ত অঞ্চলে’ দুটি মার্কিন পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েনের নির্দেশ দেন।
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ইউরোপ ও এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তা সংকট, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য ও স্বল্পপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের পরিকল্পনা, রাশিয়াকে তাদের একতরফা প্রতিশ্রুতি পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য করেছে।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ এর আগেও একাধিকবার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, ন্যাটোর উসকানিমূলক পদক্ষেপ অব্যাহত থাকলে রাশিয়া এই স্থগিতাদেশ তুলে নিতে পারে।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ‘রিয়া নভোস্তি’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে লাভরভ বলেন, “একতরফা স্থগিতাদেশ কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়েছে এবং তা প্রত্যাহার করা হবে।” তিনি অভিযোগ করেন, যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে এরই মধ্যে এই শ্রেণির অস্ত্র মোতায়েন শুরু করেছে, চীন ও রাশিয়ার সতর্কতা সত্ত্বেও।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প তার প্রথম প্রেসিডেন্ট মেয়াদে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ‘মধ্যমপাল্লার পারমাণবিক অস্ত্র চুক্তি’ (INF Treaty) লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে যুক্তরাষ্ট্রকে চুক্তি থেকে প্রত্যাহার করে নেন। মস্কো সে সময় জানায়, ওয়াশিংটন যদি এই শ্রেণির অস্ত্র মোতায়েন না করে, তবে তারাও একই নীতিতে চলবে।
INF চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছিল ১৯৮৭ সালে, যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান এবং সোভিয়েত নেতা মিখাইল গর্বাচেভের মধ্যে। ইউরোপে ভূমিভিত্তিক পারমাণবিক ও প্রচলিত মধ্যমপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন নিষিদ্ধ করতে এই ঐতিহাসিক চুক্তির সূচনা হয়।
সূত্র: আলজাজিরা
ভোরের আকাশ//হ.র