আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ০৫ জুন ২০২৫ ১১:৪২ পিএম
যেভাবে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে যুক্তরাজ্য
বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি ও রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসনের প্রেক্ষাপটে যুদ্ধের প্রস্তুতি আরও জোরালো করছে যুক্তরাজ্য। সোমবার (২ জুন) স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে এক ভাষণে প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেন, “বিশ্বে ক্রমবর্ধমান অস্থিরতা ও রাশিয়ার আগ্রাসনের মুখে দেশকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।” একই দিন প্রকাশ করা হয় যুক্তরাজ্যের ‘স্ট্র্যাটেজিক ডিফেন্স রিভিউ’ (এসডিআর), যেখানে প্রতিরক্ষা খাত নিয়ে বিস্তারিত পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়।
এসডিআর অনুসারে, ব্রিটিশ সরকার অস্ত্র উৎপাদন ও মজুদ বাড়াতে ১.৫ বিলিয়ন পাউন্ড ব্যয়ে অন্তত ছয়টি নতুন অস্ত্র কারখানা স্থাপন করবে। এসব কারখানায় বছরে ৭ হাজার পর্যন্ত দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। একইসঙ্গে, পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি আধুনিকায়নে আরও ১৫ বিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে।
যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ার সমন্বয়ে গঠিত অকাস সামরিক চুক্তির অংশ হিসেবে ২০৩০ সালের মধ্যে ১২টি নতুন অ্যাটাক সাবমেরিন তৈরি করবে যুক্তরাজ্য। এসব সাবমেরিন তৈরিতে প্রতি ১৮ মাসে একটি করে ইউনিট তৈরি করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, নতুন এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান এবং জাপান ও ইতালির সঙ্গে যৌথভাবে ষষ্ঠ প্রজন্মের যুদ্ধবিমান উৎপাদনেরও ঘোষণা এসেছে এসডিআর-এ।
সেনাবাহিনীর আকারে নাটকীয় পরিবর্তন না এনে প্রযুক্তি ব্যবহারে জোর দিচ্ছে যুক্তরাজ্য। বর্তমানে সেনাসদস্য রয়েছে প্রায় ৭১ হাজার। তবে যুদ্ধ সক্ষমতা বাড়াতে এআই-চালিত সফটওয়্যার, ড্রোন ও আধুনিক সেন্সরের মাধ্যমে “প্রাণঘাতী শক্তি দশগুণ বৃদ্ধি” করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এজন্য প্রায় ১ বিলিয়ন পাউন্ড ব্যয়ে ‘ডিজিটাল টার্গেটিং ওয়েব’ নামের একটি উন্নত সফটওয়্যার সিস্টেম চালু করা হবে।
স্টারমার বলেন, “রাশিয়ার হুমকি, ইউরোপে যুদ্ধ, পারমাণবিক অনিশ্চয়তা ও প্রতিনিয়ত সাইবার আক্রমণের মতো ঝুঁকিগুলো আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে। সংঘাত ঠেকাতে হলে আগে থেকেই প্রস্তুত থাকতে হবে।” যুক্তরাজ্যের এই সামরিক পরিকল্পনা শুধু ইউরোপ নয়, বৈশ্বিক রাজনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা
ভোরের আকাশ/হ.র