আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ২৮ আগস্ট ২০২৫ ০৫:৫৮ এএম
চলতি বছরেই কিম জং উনের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চান ট্রাম্প
চলতি বছরেই উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে বৈঠক করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পাশাপাশি দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে আরও বাণিজ্য আলোচনায়ও আগ্রহী তিনি। সোমবার (২৬ আগস্ট) ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।
সেদিনই প্রথমবারের মতো হোয়াইট হাউসে দক্ষিণ কোরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্ট লি জে মিউংকে স্বাগত জানান ট্রাম্প। ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, “আমি ভবিষ্যতে উপযুক্ত সময়ে কিম জং উনের সঙ্গে বৈঠকের অপেক্ষায় আছি। চলতি বছরেই আমি তার সঙ্গে বসতে চাই।”
গত জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর হয়, যা দক্ষিণ কোরিয়ার রপ্তানি পণ্যকে কঠোর মার্কিন শুল্ক থেকে রক্ষা করে। তবুও দুই দেশ বর্তমানে পারমাণবিক শক্তি, সামরিক ব্যয় এবং যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষিণ কোরিয়ার ৩৫০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতির মতো নানা বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
বৈঠকের পর দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে একটি ব্যবসায়িক ফোরামে অংশ নেন। এ সময় কোরিয়ান এয়ার তাদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিমান কেনার অর্ডার দেয়—বোয়িংয়ের কাছ থেকে ১০৩টি বিমান কেনার ঘোষণা দেয় সংস্থাটি।
ট্রাম্পের বৈঠক সংক্রান্ত মন্তব্যের বিষয়ে উত্তর কোরিয়া তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে পরে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, যুক্তরাষ্ট্র-দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ সামরিক মহড়া প্রমাণ করে যে ওয়াশিংটনের উদ্দেশ্য কোরীয় উপদ্বীপ দখল এবং অঞ্চলটির দেশগুলোকে লক্ষ্যবস্তু বানানো।
উল্লেখ্য, ট্রাম্প ২০১৭ থেকে ২০২১ সালের প্রথম মেয়াদে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সরাসরি কূটনীতি শুরু করলেও কিম জং উনের সঙ্গে পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধের বিষয়ে কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে পারেননি। চলতি মেয়াদেও তিনি কূটনৈতিক সম্পর্ক মেরামতের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
হোয়াইট হাউসে বৈঠকে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি বলেন, “আমি আশা করি, আপনি বিশ্বের একমাত্র বিভাজিত কোরীয় উপদ্বীপে শান্তি আনতে পারবেন। আপনি কিম জং উনের সঙ্গে বৈঠক করলে সেখানে ট্রাম্প ওয়ার্ল্ড গড়ে উঠবে, যেখানে আমি গলফ খেলতে পারব। এতে আপনিই ইতিহাসে শান্তির দূত হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।”
লি আরও জানান, বৈঠকে জাহাজ নির্মাণ, তাদের দু’জনের ওপর হওয়া হত্যাচেষ্টা এবং এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন (এপিইসি) সম্মেলন নিয়েও আলোচনা হয়। আগামী অক্টোবরে অনুষ্ঠেয় এ সম্মেলনে অংশ নিতে ট্রাম্পকে আমন্ত্রণ জানান তিনি এবং একই সফরে কিম জং উনের সঙ্গে বৈঠকেরও প্রস্তাব দেন।
ওয়াশিংটনের সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে লি বলেন, উত্তর কোরিয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলেও দেশটি পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে তাদের বছরে ১০ থেকে ২০টি পারমাণবিক ওয়ারহেড তৈরির সক্ষমতা রয়েছে। শুধু একটি নিখুঁত রিএন্ট্রি যান তৈরি করতে পারলেই এসব ওয়ারহেড যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছাতে সক্ষম ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রে বহন করা সম্ভব হবে।
সূত্র: রয়টার্স
ভোরের আকাশ//হ.র