‘যুদ্ধ থামিয়ে’ নোবেল শান্তি পুরস্কারের মনোনয়ন পেলেন ট্রাম্প
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে মধ্যস্থতাকারী ভূমিকার স্বীকৃতি হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
মার্কিন কংগ্রেসের রিপ্রেজেনটেটিভ বাডি কার্টার মঙ্গলবার (২৪ জুন) আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রাম্পকে মনোনীত করেন। তিনি নরওয়ের নোবেল কমিটির কাছে পাঠানো চিঠিতে ট্রাম্পের নাম সুপারিশ করেন।
চিঠিতে কার্টার উল্লেখ করেন, “ট্রাম্পের নেতৃত্ব ও কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে দ্রুত যুদ্ধবিরতি সম্ভব হয়েছে, যা আগে অনেকের কাছে কল্পনাতীত ছিল। আন্তর্জাতিক শান্তি, সহনশীলতা ও যুদ্ধ বন্ধে তার এই অবদান স্বীকৃতি পাওয়ার যোগ্য।”
সোমবার মধ্যরাতে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি জানান, দুই পক্ষ পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে এবং এটি কার্যকর হয় মঙ্গলবার সকাল থেকে। এখনও পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির শর্তাবলি বহাল রয়েছে।
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে সাম্প্রতিক সংঘাত নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে গভীর উদ্বেগ বিরাজ করছিল। এই সময় একটি কার্যকর যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোকে একটি কূটনৈতিক বিজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। ট্রাম্প প্রশাসনের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, কূটনৈতিক তৎপরতা ও চীনের মধ্যস্থতার পাশাপাশি ট্রাম্পের ব্যক্তিগত যোগাযোগই এ চুক্তিতে বড় ভূমিকা রেখেছে।
ট্রাম্প এর আগেও একাধিকবার নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পেয়েছেন, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি চুক্তির জন্য। তবে এবার ইরান-ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতিতে সরাসরি জড়িত থাকায় তার মনোনয়ন নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোচনা ও বিতর্ক শুরু হয়েছে।
সূত্র: নিউইয়র্ক পোস্ট
ভোরের আকাশ//হ.র
সংশ্লিষ্ট
ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে তিন নাগরিকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে ইরান। বুধবার (২৫ জুন) দেশটির বিচার বিভাগের অনলাইন নিউজ পোর্টাল মিজান অনলাইন-এর বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর উর্মিয়ার একটি কারাগারে বুধবার সকালে তিনজনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়।এদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে “আল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা” এবং “পৃথিবীতে অশান্তি ছড়ানো”র অভিযোগ আনা হয়েছিল। ইরানে এসব অভিযোগের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, অভিযুক্তরা ছিল বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত গুপ্তচর। তারা ‘মদ্যপানযোগ্য পণ্যের চালান’ আড়াল করে দেশে “হত্যার সরঞ্জাম” পাচার করছিলেন বলে দাবি করা হয়েছে।তবে কখন বা কীভাবে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।উল্লেখ্য, এর আগে গত ১৩ জুন ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরুর পর ইরান আরও অন্তত তিনজনকে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেয়।সূত্র: আল জাজিরা, মিজান অনলাইন।ভোরের আকাশ//হ.র
পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য আগামী সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুধবার নেদারল্যান্ডসের হেগে ন্যাটো সম্মেলনের ফাঁকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই ঘোষণা দেন।ট্রাম্প বলেন, সাম্প্রতিক ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধের কারণে যে সংলাপ প্রক্রিয়া থমকে গিয়েছিল, সেটি আবার শুরু হতে যাচ্ছে। তিনি বলেন, “আমি তোমাদের একটা কথা বলি, আমরা আগামী সপ্তাহে ইরানের সঙ্গে কথা বলতে যাচ্ছি। আমরা হয়তো একটি চুক্তিও করতে পারি—তবে আমি জানি না।”যদিও তিনি ইরানের সঙ্গে আবার আলোচনা শুরু করতে আগ্রহী নন বলেও মন্তব্য করেন। তার দাবি, যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি কার্যত ধ্বংস হয়েছে।ট্রাম্প বলেন, “আমার দৃষ্টিতে তারা যুদ্ধে লড়েছে, এবং যুদ্ধ শেষ হয়েছে।”সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের হামলার আগে ইরান পারমাণবিক সামগ্রী সরিয়ে নেওয়ার পর্যাপ্ত সময় পায়নি। তিনি বলেন, “এসব জিনিস খুবই ভারী, সরানো সহজ নয়।”সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, ট্রাম্প শান্তির পক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন এবং যারা শান্তি চায়, তাদের সঙ্গে আলোচনার দরজা খোলা রাখতে চান।রুবিও জানান, আলোচনা শুরু হবে কি না, তা নির্ভর করবে ইরানের অংশগ্রহণের ইচ্ছার ওপর।অন্যদিকে ট্রাম্প বলেন, “আমি মনে করি না এটা খুব প্রয়োজনীয়। তারা একটি যুদ্ধে ছিল, তারা লড়েছে, এখন তারা নিজেদের পথে ফিরে গেছে। কোনও সমঝোতা হলো কি না, সেটা আমি খুব একটা পরোয়া করি না। আমরা শুধু তাদের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছি।”সূত্র: বিবিসি, আল জাজিরা।ভোরের আকাশ//হ.র
ইরানের পার্লামেন্ট বুধবার (২৫ জুন) আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত রাখার প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। এ সিদ্ধান্তে কোনো বিরোধী ভোট পড়েনি বলে জানা গেছে।পার্লামেন্টের জাতীয় নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্রনীতি কমিশন আগেই একটি খসড়া অনুমোদন করেছিল, যাতে সরকারকে আইএইএ-এর সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কমিশন আইএইএ-এর প্রতিবেদনকে ইরানের ওপর হামলার অজুহাত হিসেবে অভিহিত করেছে।নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত “নিরীক্ষণ ক্যামেরা স্থাপন, পরিদর্শন এবং সংস্থায় রিপোর্ট প্রদান” কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।ইসলামী পরামর্শদাতা পরিষদের স্পিকার মোহাম্মদ বাকের কালিবাফ বলেন, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে চায় না, তবে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে এবং রাজনৈতিক হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে।আইএইএ’র সর্বশেষ প্রতিবেদনে ইরানকে অসহযোগিতার জন্য সমালোচনা করা হয়েছে। সংস্থাটি ইরানকে গোপন পারমাণবিক স্থাপনাগুলো সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছে এবং ইরানের সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুদ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।গত সপ্তাহে ইরানের তিনটি পারমাণবিক কেন্দ্র লক্ষ্য করে যুক্তরাষ্ট্র হামলা চালায়, যার মধ্যে ছিল অত্যাধুনিক বি-২ স্টিলথ বোমারু দিয়ে ফোর্দো পারমাণবিক কেন্দ্রে আঘাত। তবে মার্কিন গোয়েন্দারা জানায়, হামলায় পারমাণবিক কর্মসূচির মূল উপাদান ধ্বংস হয়নি এবং এই হামলা ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রম মাত্র কয়েক মাস পিছিয়ে দিয়েছে।মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের গোয়েন্দা শাখা ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি এবং ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ড এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। তাদের মতে, ইরানের সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুদ এবং বেশিরভাগ পারমাণবিক সেন্ট্রিফিউজ অক্ষত রয়েছে।এই সিদ্ধান্ত ও ঘটনার প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক আরো উত্তেজনাপূর্ণ হতে পারে এবং এর ফলে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তায় উদ্বেগ বাড়তে পারে।সূত্র: বিবিসি, স্থানীয় সংবাদমাধ্যম।ভোরের আকাশ//হ.র
কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি এবং ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান মঙ্গলবার টেলিফোনে আলোচনা করেছেন। আলাপকালে তারা কাতারে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের আল উদেইদ সামরিক ঘাঁটিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিষয়ে কথা বলেন।কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম জানিয়েছেন, টেলিফোনালাপে কাতারের আমির তার দেশ সবসময় সুসম্পর্ক বজায় রাখা এবং ভালো প্রতিবেশীর নীতি অনুসরণ করে আসছে বলে ইরানের প্রেসিডেন্টকে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এমন শত্রুতাপূর্ণ আচরণের প্রত্যাশা কাতারের পক্ষ থেকে ছিল না।কাতারের আমির এই ঘটনার পর সম্ভাব্য কূটনৈতিক ও আইনি প্রতিক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং দ্রুত এই পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণে আনার গুরুত্ব আরোপ করেছেন। তিনি এ বিষয়টি অতীতের ঘটনা হিসেবে রাখার ওপর জোর দিয়েছেন।শেখ মোহাম্মদ বলেন, আঞ্চলিক উত্তেজনার মূল কারণ গাজার ওপর ইসরায়েলের ক্রমবর্ধমান আগ্রাসন ও যুদ্ধবিরোধী মনোভাব। কাতার কাজ করে যাচ্ছে যাতে এই সংকট পুরো অঞ্চলে ছড়িয়ে না পড়ে।তিনি আরও বলেন, “সারা বিশ্বকে এক হয়ে ইসরায়েলের দায়িত্বহীন কার্যকলাপের অবসান ঘটানোর সময় এসেছে।”সূত্র: আল জাজিরা।ভোরের আকাশ//হ.র