আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ২৬ জুলাই ২০২৫ ০৮:৩৬ এএম
রুশ নাগরিকদের ওপর নজরদারি করতে ‘ম্যাক্স’ নামের নতুন অ্যাপ চালু করছে ক্রেমলিন?
রাশিয়ার বাজারে আসছে নতুন একটি মেসেঞ্জার অ্যাপ ‘ম্যাক্স’। আগামী সেপ্টেম্বর থেকে দেশটিতে বিক্রি হওয়া সব ডিজিটাল ডিভাইসে এই অ্যাপটি প্রি-ইনস্টল থাকবে। এর মাধ্যমে রুশ সরকারের গোপন নজরদারির আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। বৃহস্পতিবার এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
গুপ্তচরবৃত্তির শঙ্কা
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দি ইন্ডিপেনডেন্ট-এর বরাতে বলা হয়, ‘ম্যাক্স’ শুধু মেসেজিং ও ভিডিও কলের জন্যই নয়, বরং সরকারি সেবা, মোবাইল পেমেন্টসহ একাধিক সুবিধা দেবে। তবে প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের দাবি, এই অ্যাপে এমন সফটওয়্যার রয়েছে, যা রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা এফএসবিকে নাগরিকদের তথ্য ও কার্যক্রম নজরদারির সুযোগ করে দেবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেহেতু অ্যাপটির সার্ভার রাশিয়ার অভ্যন্তরে, তাই এটি দেশটির আইনের অধীন থাকবে। ফলে রুশ কর্তৃপক্ষ চাইলে নির্দিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করতে পারবে।
হোয়াটসঅ্যাপ নিষিদ্ধের শঙ্কা
বিশ্লেষকেরা আশঙ্কা করছেন, এই অ্যাপ চালু হওয়ার পর রাশিয়ায় জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ নিষিদ্ধ হয়ে যেতে পারে। বর্তমানে দেশটিতে প্রায় ৭০ শতাংশ নাগরিক হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করেন। মায়াক ইন্টেলিজেন্সের পরিচালক ও রাশিয়া-সংক্রান্ত বিশ্লেষক মার্ক গ্যালিওটি জানিয়েছেন, ‘ম্যাক্স ব্যবহারে নাগরিকদের চাপ দেওয়া হবে।’
রাশিয়ার একজন বিরোধী সাংবাদিক আনদ্রে ওকুন আরও কড়া ভাষায় বলেছেন, “ম্যাক্স অ্যাপ হচ্ছে ‘ডিজিটাল গুলাগ’—যেখানে নাগরিকদের ব্যক্তিগত সময়, পরিকল্পনা এমনকি চিন্তার ওপরও নিয়ন্ত্রণ থাকবে।”
অনলাইন নিয়ন্ত্রণের ধারাবাহিক পদক্ষেপ
বিভিন্ন প্রযুক্তি বিশ্লেষক বলছেন, ‘ম্যাক্স’ অ্যাপ রাশিয়ার অনলাইন নিয়ন্ত্রণ পরিকল্পনার সর্বশেষ সংযোজন মাত্র। রাশিয়া-বিষয়ক বই War on Everybody-এর লেখক কেইর জাইলস মনে করেন, এটি ইন্টারনেট নজরদারিকে স্বাভাবিক করার চেষ্টা। তিনি বলেন, “গুগল, স্কাইপ, হটমেইলের মতো আন্তর্জাতিক অ্যাপ ব্যবহার করায় নাগরিকদের বার্তা পড়তে না পারায় রুশ গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বরাবরই হতাশ। তাই দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী দীর্ঘদিন ধরেই হোয়াটসঅ্যাপের মতো প্ল্যাটফর্মকে সরিয়ে নিজস্ব অ্যাপ ব্যবহারে জনগণকে বাধ্য করার পরিকল্পনা করছে।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নেতৃত্বে তৈরি হওয়া এই অ্যাপ রুশ নাগরিকদের ডিজিটাল স্বাধীনতা ও গোপনীয়তার জন্য নতুন হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
সূত্র: এনডিটিভি, দি ইন্ডিপেনডেন্ট
ভোরের আকাশ//হ.র