আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ১১ আগস্ট ২০২৫ ১২:০৪ এএম
নেতানিয়াহুর গাজা দখল পরিকল্পনার বিরুদ্ধে তেল আবিবে লাখো মানুষের বিক্ষোভ
গাজা সিটি দখলের পরিকল্পনা নিয়ে দেশ-বিদেশে তীব্র বিরোধিতার মুখে পড়েছে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকার। সেনাবাহিনীও সতর্ক করেছে, এ পদক্ষেপ জিম্মিদের জীবনকে বিপন্ন করতে পারে।
শনিবার রাতে তেল আবিবে লাখো মানুষ রাস্তায় নেমে সরকারের গাজা অভিযান অবিলম্বে বন্ধ ও জিম্মিদের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেন। আয়োজকদের দাবি, অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়েছে। হাতে ইসরায়েলি পতাকা, জিম্মিদের ছবি এবং সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশকারী পোস্টার নিয়ে অংশ নেন তারা। অনেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি যুদ্ধ বন্ধে হস্তক্ষেপের আহ্বান জানান।
এর আগের দিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় জানিয়েছিল, নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা গাজা সিটি দখলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পরই পরিকল্পনা কার্যকর হবে। রোববারই অনুমোদন মিলতে পারে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া জিম্মি ওমরি মিরানের স্ত্রী লিশে মিরান লাভি বলেন, “এটা কেবল সামরিক সিদ্ধান্ত নয়, বরং আমাদের সবচেয়ে প্রিয় মানুষগুলোর মৃত্যুদণ্ডের সমান।” তিনি ট্রাম্পকে অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান।
ইসরায়েলি জরিপগুলোতে দেখা গেছে, অধিকাংশ নাগরিক জিম্মিদের মুক্তির জন্য যুদ্ধ বন্ধের পক্ষে। বর্তমানে ২০ জন জিম্মি জীবিত আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর আগে মুক্তিপ্রাপ্তদের বেশিরভাগই কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে ছাড়া পেয়েছেন।
ইউরোপের মিত্র দেশগুলোও গাজা সিটি দখল পরিকল্পনার সমালোচনা করেছে। এমনকি জার্মানি অস্ত্র সরবরাহ স্থগিত করেছে, আশঙ্কা করছে—সেগুলো গাজায় ব্যবহৃত হতে পারে।
২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাসের হামলার পর ইসরায়েলের সর্বাত্মক অভিযানে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে এখন পর্যন্ত ৬১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে ইসরায়েলেরও ৪০০-এর বেশি সেনা প্রাণ হারিয়েছে।
এদিকে নেতানিয়াহুর কট্টর-ডানপন্থি মিত্ররা পুরো গাজা দখলের দাবিতে চাপ দিচ্ছেন। কট্টর ডানপন্থি মন্ত্রী বেজালেল স্মতরিচ শনিবার এক বিবৃতিতে গাজার বড় অংশ দখলের আহ্বান জানিয়েছেন। তবে নেতানিয়াহু ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, সামরিক বাহিনী গাজার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চাইছে, যদিও এ ভূখণ্ড স্থায়ীভাবে দখলে রাখার ইচ্ছা নেই।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ৫৫ বছর বয়সী হাইস্কুল শিক্ষক তাল বলেন, “আমাদের সেখানে কিছু করার নেই। ভূখণ্ডটা আমাদের নয়। যুদ্ধ সম্প্রসারণ ভয়ঙ্কর হবে, এতে সৈন্য ও জিম্মি উভয়েই মারা পড়বে।”
ভোরের আকাশ//হ.র