আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ১৯ আগস্ট ২০২৫ ০৩:০৯ এএম
চুক্তির পরও ১১ দিনে যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছে আড়াই হাজার অভিবাসী
ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে যুক্তরাজ্যে অভিবাসীদের প্রবাহ থামেনি। ফ্রান্স–যুক্তরাজ্যের যৌথ ‘ওয়ান ইন, ওয়ান আউট’ চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর মাত্র ১১ দিনেই আরও আড়াই হাজারের বেশি অভিবাসী ব্রিটিশ উপকূলে পৌঁছেছে। ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রোববার এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
চুক্তি অনুযায়ী, ফ্রান্সের উপকূল থেকে ছোট নৌকায় যেসব অভিবাসী ইংল্যান্ডে প্রবেশ করবে, তাদের আটক করে ফেরত পাঠানো হবে। বিনিময়ে সমানসংখ্যক অভিবাসীকে বৈধভাবে ফ্রান্স থেকে যুক্তরাজ্যে নেওয়া হবে।
তবে চুক্তি সত্ত্বেও চলতি বছর এখন পর্যন্ত অন্তত ২৮ হাজার অভিবাসী ছোট নৌকায় চ্যানেল পাড়ি দিয়েছে। শুধু লেবার পার্টি ক্ষমতায় আসার পর থেকে এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫০ হাজারে।
ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, মানবপাচারকারীরা অভিবাসীদের জীবন নিয়ে চিন্তা করে না, তারা শুধু অর্থ আদায়েই ব্যস্ত। এজন্য সরকার পাচারচক্রের ব্যবসায়িক মডেল ভাঙতে ফ্রান্সের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়িয়েছে এবং পরীক্ষামূলকভাবে আটক অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
এনজিওকর্মী রব লরি বিবিসিকে বলেন, পাচারকারীরা একটি নৌকায় ১৫০ জন পর্যন্ত তুলতে চায়। ফলে গাদাগাদি ও তাড়াহুড়ার কারণে ডিঙ্গি নৌকায় পদপিষ্ট হয়ে শিশু মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। কতজন সমুদ্রে ভেসে গেছে, তার সঠিক তথ্য নেই।
তথ্য বলছে, গ্রীষ্মে আবহাওয়া শান্ত থাকায় চ্যানেল পাড়ি বাড়ে। গত বছরের আগস্টেই চার হাজারের বেশি অভিবাসী নৌকায় যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছিল।
উল্লেখ্য, গত জুলাইয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ও ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ এ সংক্রান্ত চুক্তি সই করেন। ৬ আগস্ট আটক হওয়া প্রথম দলকে এখনো ফ্রান্সে ফেরত পাঠানো হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে তিন মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
এদিকে অভিবাসী সংকট সামলাতে না পারায় রাজনৈতিক চাপের মুখে পড়েছে ব্রিটিশ সরকার। ডানপন্থী দলগুলোর উত্থানও বাড়ছে। বিরোধী কনজারভেটিভ পার্টির অভিযোগ, নতুন চুক্তিতে কোনো কার্যকর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেই।
তবে ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি জানিয়েছে, পাচারচক্র মোকাবিলায় কিছু সাফল্য মিলেছে। সম্প্রতি বুলগেরিয়া থেকে চ্যানেলের উদ্দেশে রওনা হওয়া ২০টি নৌকা জব্দ করা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ছোট নৌকায় যুক্তরাজ্যে আসা অভিবাসীদের মধ্যে আফগানরা শীর্ষে। এরপর সিরিয়া, ইরান, ভিয়েতনাম ও ইরিত্রিয়ার নাগরিকরা রয়েছে। মোট আগমনের ৬১ শতাংশই এই পাঁচ দেশের নাগরিক।
২০২৪ সালে যুক্তরাজ্যে আশ্রয় চেয়েছিল এক লাখ আট হাজার মানুষ, যার এক-তৃতীয়াংশ এসেছিল ছোট নৌকায় ইংলিশ চ্যানেল পেরিয়ে।
ভোরের আকাশ//হ.র