আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ২৭ জুন ২০২৫ ১১:২৭ পিএম
গাজায় তিন দিনে প্রাণ হারাল ১৫ ইসরায়েলি সেনা
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় সাম্প্রতিক সংঘাতে গত তিন দিনে অন্তত ১৫ জন ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছেন। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর বরাতে এ তথ্য জানা গেছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানায়, শুক্রবার উত্তর গাজার তুফাহ এলাকায় একটি সাঁজোয়া যান লক্ষ্য করে রকেট হামলা চালায় হামাসের সামরিক শাখা আল কাসাম ব্রিগেড। এতে ওই যানে থাকা ১৭ সেনার মধ্যে ৭ জন নিহত হন এবং বাকিরা আহত হন।
এর আগে বৃহস্পতিবার গাজা সিটি এলাকায় আল কাসামের হামলায় আরও একজন সেনা নিহত হন বলে জানায় তুরস্কের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি। এদিন ইসরায়েলি বাহিনীর দুটি ট্যাংক, একটি সাঁজোয়া যান ও একটি বুলডোজার ধ্বংস করা হয় বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
বুধবার দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস এলাকায় আল কাসাম ব্রিগেডের গুলি ও রকেট হামলায় প্রাণ হারান আরও ৭ সেনা, যাদের মধ্যে একজন ছিলেন লেফটেন্যান্ট পদমর্যাদার।
রয়টার্স-এর মতে, গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর ফের অভিযানে যাওয়ার পর এত অল্প সময়ে সেনা হতাহতের এমন ঘটনা এবারই প্রথম ঘটল।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলের ভূখণ্ডে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায়, যাতে ১ হাজার ২০০ জন নিহত এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েল, যা এখনও অব্যাহত রয়েছে।
সরকারি হিসাব অনুযায়ী, এই অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৫৬ হাজার ৩৬৫ জন এবং আহত হয়েছেন ১ লাখ ৩২ হাজার ২৩৯ জন।
চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিলেও মাত্র দুই মাসের মাথায় ১৮ মার্চ থেকে আবারও অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। পাশাপাশি গাজায় খাদ্য ও ত্রাণ সরবরাহে বাধা দেওয়ার ফলে সেখানে মারাত্মক মানবিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে, হামাসের হেফাজতে থাকা ২৫১ জন জিম্মির মধ্যে অন্তত ৩৫ জন এখনও জীবিত। তাদের উদ্ধারে সামরিক অভিযান চালানোর ঘোষণা দিয়েছে আইডিএফ।
গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধে বারবার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) গণহত্যার অভিযোগে একটি মামলাও চলমান রয়েছে।
যুদ্ধ থামাতে যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতার শুরু থেকেই মধ্যস্থতার চেষ্টা চালিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির বিষয়ে কোনো পক্ষই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছায়নি।
ভোরের আকাশ/হ.র