ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধাংদেহী মনোভাব
রাজীব দাস
প্রকাশ : ২৭ এপ্রিল ২০২৫ ০১:২০ পিএম
মধ্যস্থতার প্রস্থাব ইরান-সৌদির
দীর্ঘদিন ধরেই ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্ক ছিল অবিশ্বাস, সংঘাত ও উত্তেজনায় ভরা। ইতিহাসের পাতা উল্টালে দেখা যায়, ১৯৪৭ সালে উপমহাদেশের বিভাজনের পর থেকে এই দুই দেশের মধ্যে তিনটি পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ এবং অসংখ্য সীমান্তসংঘর্ষ হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে পেহেলগাম হামলা যেন সেই পুরনো শত্রুতা ও দ্বন্দ্বকে নতুন করে জাগিয়ে তুলেছে।
২২ এপ্রিল কাশ্মিরের পর্যটন শহর পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন প্রাণ হারানোর পর ভারতীয় রাজনৈতিক মহল ও জনমনে প্রবল ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটেছে। হতাহতদের মধ্যে ছিলেন একাধিক স্থানীয় নাগরিক এবং এক নেপালি পর্যটক। এই হামলার দায় স্বীকার করেছে দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) নামে একটি সশস্ত্রগোষ্ঠী। ভারত সরকার সরাসরি পাকিস্তানকে দোষারোপ করেছে। পাল্টা পাকিস্তানও কঠোর ভাষায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। দুই পক্ষই একের পর এক প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধের আশঙ্কা আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।
সীমান্তে বাড়তি সেনা মোতায়েন, কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি, বাণিজ্যিক যোগাযোগ স্থগিতসহ একের পর এক উত্তেজক সিদ্ধান্তে গোটা উপমহাদেশ যেন টগবগ করে ফুটছে। বিশ্ব সম্প্রদায় গভীর উদ্বেগের সঙ্গে পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে। কারণ, দুই দেশের হাতেই রয়েছে পরমাণু অস্ত্রের শক্তি আর তা যেকোনো সংঘর্ষকে কেবল সীমিত লড়াই নয়, ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞে রূপ দিতে পারে। এমন এক সংকটময় মুহূর্তে শান্তি ফেরাতে ইরান ও সৌদি আরবের মতো মধ্যপ্রাচ্যের দুই প্রধান শক্তি মধ্যস্থতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।
তারা সরাসরি আলোচনার মাধ্যমে উত্তেজনা প্রশমনের প্রস্তাব দিয়েছে, যা পরিস্থিতিকে নতুন দিকে নিয়ে যেতে পারে। তবে প্রশ্ন রয়ে গেছে যুদ্ধের দিকেই কি এগিয়ে যাচ্ছে উপমহাদেশ, নাকি শেষ পর্যন্ত শান্তির পথ খুঁজে পাবে ভারত ও পাকিস্তান? হামলার পরপরই ভারত পাকিস্তানের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলে। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ দাবি করে, পাকিস্তান সমর্থিত গোষ্ঠীগুলো পরিকল্পিতভাবেই এই হামলা চালিয়েছে, যাতে কাশ্মিরে অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে এবং ভারতীয় নিরাপত্তাব্যবস্থা দুর্বল হয়।
ভারতের পাল্টা প্রতিক্রিয়া : হামলার পর ভারতের প্রতিক্রিয়া ছিল অত্যন্ত কঠোর, পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য স্থগিত করা হয়েছে। পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য ভিসা বাতিল করা হয়েছে। ঐতিহাসিক সিন্ধু পানি চুক্তি পুনর্বিবেচনার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
ভারত সরকার স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছে, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান ‘জিরো টলারেন্স’ এবং পাকিস্তানকে আন্তর্জাতিক মঞ্চেও বিচ্ছিন্ন করার কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালানো হবে।
পাকিস্তানের পাল্টা পদক্ষেপ: পাকিস্তানও ভারতের পদক্ষেপের কড়া জবাব দিয়েছে। ভারতীয় নাগরিকদের ভিসা বাতিল করা হয়েছে। পাকিস্তানের আকাশসীমা ভারতীয় বিমানের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ভারতীয় পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
পাকিস্তান দাবি করেছে, পেহেলগাম হামলায় তাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই এবং ভারতের অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং উসকানিমূলক। ইসলামাবাদ এটিকে ভারতের ‘ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশন’ বলে অভিহিত করেছে, যা নিজেদের অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলো আড়াল করার জন্য সাজানো হয়েছে বলে দাবি করা হয়।
যুদ্ধের আশঙ্কা বাড়ছে: দুই দেশই পরস্পরের বিরুদ্ধে কঠোর ভাষায় বিবৃতি দিয়েছে। সীমান্ত এলাকায় সেনা মোতায়েন বেড়েছে এবং দুই দেশের সামরিক বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্কতায় রাখা হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি দ্রুত কূটনৈতিক সমঝোতা না হয়, তাহলে পরিস্থিতি সামরিক সংঘাতে রূপ নিতে পারে। বিশেষ করে, উভয় দেশের পরমাণু শক্তি-সমৃদ্ধ বাহিনী থাকা অবস্থায় সংঘাতের ঝুঁকি আরও মারাত্মক হয়ে দাঁড়াতে পারে।
বিশ্ব সম্প্রদায়ের উদ্বেগ: উপমহাদেশের দুই প্রধান শক্তির এই উত্তেজনায় বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বেশ কয়েকটি দেশ ও সংস্থা সংযম দেখাতে এবং উত্তেজনা নিরসনে সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ কেবল এই অঞ্চলের জন্য নয়, গোটা বিশ্বের জন্য ভয়াবহ ফলাফল বয়ে আনবে।
শান্তি প্রচেষ্টায় ইরান ও সৌদি আরব: এই সংকট নিরসনে এবার মধ্যপ্রাচ্যের দুই গুরুত্বপূর্ণ দেশ ইরান ও সৌদি আরব এগিয়ে এসেছে। ইরান ও সৌদি আরব তারা উভয়ই ভারত-পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার ও মিত্র। তারা শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সরাসরি মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছে।
ইরানের মধ্যস্থতার উদ্যোগ: ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি এক্স পোস্টে (সাবেক টুইটার) লিখেছেন, ভারত ও পাকিস্তান আমাদের ঘনিষ্ট প্রতিবেশী। তাদের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ইরান আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। ইরান নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদে অবস্থিত তাদের দূতাবাসের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে বৃহত্তর বোঝাপড়া তৈরির কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
ইরান মনে করছে, দুই দেশকেই আলোচনার মাধ্যমে উত্তেজনা কমাতে হবে এবং সশস্ত্র সংঘাত এড়াতে হবে।
সৌদি আরবের ভূমিকা: সৌদি আরবও ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সরাসরি আলোচনার ব্যবস্থা করতে চায়।
সৌদি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা দুই পক্ষের মধ্যে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি নিরপেক্ষ আলোচনা মঞ্চ তৈরি করতে আগ্রহী।
সৌদি আরবের মতে, সামরিক সংঘাতের মাধ্যমে কোনো পক্ষই লাভবান হবে না, বরং ক্ষতিগ্রস্ত হবে সাধারণ জনগণ এবং গোটা অঞ্চলের স্থিতিশীলতা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন সবকিছু নির্ভর করছে ভারত ও পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতৃত্বের সিদ্ধান্তের ওপর। যদি দুই দেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আহ্বানে সাড়া দিয়ে সংলাপে বসে, তাহলে হয়তো ভয়াবহ সংঘাত এড়ানো সম্ভব হবে।
তবে ইতিহাস বলছে, দুই দেশের মধ্যে পুরনো অবিশ্বাস এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতা দ্রুত কাটানো সহজ নয়। শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে এবং বিশ্ব সম্প্রদায়কেও চাপ সৃষ্টি করে রাখতে হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যস্থতা চেষ্টা এই সংকটে একটি নতুন দিক খুলে দিতে পারে, তবে শেষ পর্যন্ত শান্তির চাবিকাঠি রয়েছে ভারত ও পাকিস্তানের হাতেই।
ভোরের আকাশ/এসএইচ
ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধাংদেহী মনোভাব
রাজীব দাস
প্রকাশ : ২ দিন আগে
আপডেট : ২ দিন আগে
মধ্যস্থতার প্রস্থাব ইরান-সৌদির
দীর্ঘদিন ধরেই ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্ক ছিল অবিশ্বাস, সংঘাত ও উত্তেজনায় ভরা। ইতিহাসের পাতা উল্টালে দেখা যায়, ১৯৪৭ সালে উপমহাদেশের বিভাজনের পর থেকে এই দুই দেশের মধ্যে তিনটি পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ এবং অসংখ্য সীমান্তসংঘর্ষ হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে পেহেলগাম হামলা যেন সেই পুরনো শত্রুতা ও দ্বন্দ্বকে নতুন করে জাগিয়ে তুলেছে।
২২ এপ্রিল কাশ্মিরের পর্যটন শহর পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন প্রাণ হারানোর পর ভারতীয় রাজনৈতিক মহল ও জনমনে প্রবল ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটেছে। হতাহতদের মধ্যে ছিলেন একাধিক স্থানীয় নাগরিক এবং এক নেপালি পর্যটক। এই হামলার দায় স্বীকার করেছে দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) নামে একটি সশস্ত্রগোষ্ঠী। ভারত সরকার সরাসরি পাকিস্তানকে দোষারোপ করেছে। পাল্টা পাকিস্তানও কঠোর ভাষায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। দুই পক্ষই একের পর এক প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধের আশঙ্কা আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।
সীমান্তে বাড়তি সেনা মোতায়েন, কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি, বাণিজ্যিক যোগাযোগ স্থগিতসহ একের পর এক উত্তেজক সিদ্ধান্তে গোটা উপমহাদেশ যেন টগবগ করে ফুটছে। বিশ্ব সম্প্রদায় গভীর উদ্বেগের সঙ্গে পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে। কারণ, দুই দেশের হাতেই রয়েছে পরমাণু অস্ত্রের শক্তি আর তা যেকোনো সংঘর্ষকে কেবল সীমিত লড়াই নয়, ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞে রূপ দিতে পারে। এমন এক সংকটময় মুহূর্তে শান্তি ফেরাতে ইরান ও সৌদি আরবের মতো মধ্যপ্রাচ্যের দুই প্রধান শক্তি মধ্যস্থতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।
তারা সরাসরি আলোচনার মাধ্যমে উত্তেজনা প্রশমনের প্রস্তাব দিয়েছে, যা পরিস্থিতিকে নতুন দিকে নিয়ে যেতে পারে। তবে প্রশ্ন রয়ে গেছে যুদ্ধের দিকেই কি এগিয়ে যাচ্ছে উপমহাদেশ, নাকি শেষ পর্যন্ত শান্তির পথ খুঁজে পাবে ভারত ও পাকিস্তান? হামলার পরপরই ভারত পাকিস্তানের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলে। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ দাবি করে, পাকিস্তান সমর্থিত গোষ্ঠীগুলো পরিকল্পিতভাবেই এই হামলা চালিয়েছে, যাতে কাশ্মিরে অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে এবং ভারতীয় নিরাপত্তাব্যবস্থা দুর্বল হয়।
ভারতের পাল্টা প্রতিক্রিয়া : হামলার পর ভারতের প্রতিক্রিয়া ছিল অত্যন্ত কঠোর, পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য স্থগিত করা হয়েছে। পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য ভিসা বাতিল করা হয়েছে। ঐতিহাসিক সিন্ধু পানি চুক্তি পুনর্বিবেচনার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
ভারত সরকার স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছে, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান ‘জিরো টলারেন্স’ এবং পাকিস্তানকে আন্তর্জাতিক মঞ্চেও বিচ্ছিন্ন করার কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালানো হবে।
পাকিস্তানের পাল্টা পদক্ষেপ: পাকিস্তানও ভারতের পদক্ষেপের কড়া জবাব দিয়েছে। ভারতীয় নাগরিকদের ভিসা বাতিল করা হয়েছে। পাকিস্তানের আকাশসীমা ভারতীয় বিমানের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ভারতীয় পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
পাকিস্তান দাবি করেছে, পেহেলগাম হামলায় তাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই এবং ভারতের অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং উসকানিমূলক। ইসলামাবাদ এটিকে ভারতের ‘ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশন’ বলে অভিহিত করেছে, যা নিজেদের অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলো আড়াল করার জন্য সাজানো হয়েছে বলে দাবি করা হয়।
যুদ্ধের আশঙ্কা বাড়ছে: দুই দেশই পরস্পরের বিরুদ্ধে কঠোর ভাষায় বিবৃতি দিয়েছে। সীমান্ত এলাকায় সেনা মোতায়েন বেড়েছে এবং দুই দেশের সামরিক বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্কতায় রাখা হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যদি দ্রুত কূটনৈতিক সমঝোতা না হয়, তাহলে পরিস্থিতি সামরিক সংঘাতে রূপ নিতে পারে। বিশেষ করে, উভয় দেশের পরমাণু শক্তি-সমৃদ্ধ বাহিনী থাকা অবস্থায় সংঘাতের ঝুঁকি আরও মারাত্মক হয়ে দাঁড়াতে পারে।
বিশ্ব সম্প্রদায়ের উদ্বেগ: উপমহাদেশের দুই প্রধান শক্তির এই উত্তেজনায় বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বেশ কয়েকটি দেশ ও সংস্থা সংযম দেখাতে এবং উত্তেজনা নিরসনে সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ কেবল এই অঞ্চলের জন্য নয়, গোটা বিশ্বের জন্য ভয়াবহ ফলাফল বয়ে আনবে।
শান্তি প্রচেষ্টায় ইরান ও সৌদি আরব: এই সংকট নিরসনে এবার মধ্যপ্রাচ্যের দুই গুরুত্বপূর্ণ দেশ ইরান ও সৌদি আরব এগিয়ে এসেছে। ইরান ও সৌদি আরব তারা উভয়ই ভারত-পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার ও মিত্র। তারা শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সরাসরি মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছে।
ইরানের মধ্যস্থতার উদ্যোগ: ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি এক্স পোস্টে (সাবেক টুইটার) লিখেছেন, ভারত ও পাকিস্তান আমাদের ঘনিষ্ট প্রতিবেশী। তাদের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ইরান আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। ইরান নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদে অবস্থিত তাদের দূতাবাসের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে বৃহত্তর বোঝাপড়া তৈরির কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
ইরান মনে করছে, দুই দেশকেই আলোচনার মাধ্যমে উত্তেজনা কমাতে হবে এবং সশস্ত্র সংঘাত এড়াতে হবে।
সৌদি আরবের ভূমিকা: সৌদি আরবও ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সরাসরি আলোচনার ব্যবস্থা করতে চায়।
সৌদি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা দুই পক্ষের মধ্যে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি নিরপেক্ষ আলোচনা মঞ্চ তৈরি করতে আগ্রহী।
সৌদি আরবের মতে, সামরিক সংঘাতের মাধ্যমে কোনো পক্ষই লাভবান হবে না, বরং ক্ষতিগ্রস্ত হবে সাধারণ জনগণ এবং গোটা অঞ্চলের স্থিতিশীলতা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন সবকিছু নির্ভর করছে ভারত ও পাকিস্তানের রাজনৈতিক নেতৃত্বের সিদ্ধান্তের ওপর। যদি দুই দেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আহ্বানে সাড়া দিয়ে সংলাপে বসে, তাহলে হয়তো ভয়াবহ সংঘাত এড়ানো সম্ভব হবে।
তবে ইতিহাস বলছে, দুই দেশের মধ্যে পুরনো অবিশ্বাস এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতা দ্রুত কাটানো সহজ নয়। শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে এবং বিশ্ব সম্প্রদায়কেও চাপ সৃষ্টি করে রাখতে হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যস্থতা চেষ্টা এই সংকটে একটি নতুন দিক খুলে দিতে পারে, তবে শেষ পর্যন্ত শান্তির চাবিকাঠি রয়েছে ভারত ও পাকিস্তানের হাতেই।
ভোরের আকাশ/এসএইচ