আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ২০ মে ২০২৫ ১২:৪৩ এএম
এক হাজার ফিলিস্তিনিকে বিনামূল্যে হজের আমন্ত্রণ সৌদি আরবের
ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘর্ষে প্রাণ হারানোদের পরিবারের সদস্যসহ এক হাজার ফিলিস্তিনিকে বিনামূল্যে হজ পালনের সুযোগ দিচ্ছে সৌদি আরব। দেশটির বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজের নির্দেশনায় এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়।
সোমবার (১৯ মে) খালিজ টাইমসের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, গাজা ও পশ্চিম তীর থেকে নির্বাচিত হজযাত্রীরা এই সুবিধা পাবেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন ইসরায়েলি হামলায় আহতদের পরিবার, নিহতদের স্বজন, এবং ইসরায়েলের কারাগারে আটক ব্যক্তিদের নিকটজনরাও।
এই হজ কার্যক্রমের আওতায় ফিলিস্তিনি হজযাত্রীরা পাবেন বিশেষ ভিসা, পাশাপাশি ফ্লাইট, আবাসন, খাবারসহ সব ধরনের ব্যয়ভার বহন করবে সৌদি সরকার। হজযাত্রা শুরুর প্রথম মুহূর্ত থেকে সৌদি আরব হাজিদের জন্য বিশেষ তদারকি নিশ্চিত করবে বলে জানিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
এক ফিলিস্তিনি নাগরিক জানান, “এই হজ আমাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে এক মহা দয়া। যুদ্ধে স্ত্রী-সন্তান হারিয়ে আমি ভেঙে পড়েছিলাম। এই সুযোগ আমাদের কিছুটা হলেও সান্ত্বনা দিয়েছে।”
সৌদি আরবের এই উদ্যোগকে হামাস ও ফাতাহ উভয়েই স্বাগত জানালেও, ইসরায়েলি মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির মন্তব্য করেছেন, “সৌদি আরব সন্ত্রাসীদের পুরস্কৃত করছে।”
বিশ্লেষকদের মতে, এটি একদিকে যেমন মানবিক সংহতির নিদর্শন, তেমনি মধ্যপ্রাচ্যে সৌদি প্রভাব বিস্তারের কৌশল হিসেবেও দেখা হচ্ছে।
তবে, হজে অংশগ্রহণে বেশ কিছু বাস্তব সংকটও সামনে এসেছে। গাজার অবরোধ এবং ইসরায়েলি নিষেধাজ্ঞার কারণে রাফাহ সীমান্ত পাড়ি দেওয়া দুরূহ হয়ে পড়েছে অনেক ফিলিস্তিনির জন্য। এ ছাড়া যুদ্ধবিধ্বস্ত বহু পরিবার তাদের বাসস্থান, পাসপোর্ট ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হারিয়েছে, যা হজ যাত্রার পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
এদিকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ঘোষণা দেওয়ায় আরও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে— আসলে এই ফিলিস্তিনিরা আদৌ হজে যেতে পারবেন কিনা।
এই উদ্যোগ সৌদি আরবের “গড’স গেস্টস” প্রোগ্রামের অংশ হিসেবে বাস্তবায়ন হচ্ছে। এর আগে ২০২২ সালে দেশটি ২,০০০ ইউক্রেনীয় শরণার্থী এবং গত বছর কাশ্মিরি কিছু পরিবারকে বিনামূল্যে হজের সুযোগ দিয়েছিল।
ভোরের আকাশ//হ.র