নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০১:৩৫ এএম
নিউইয়র্ক আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় বাংলাদেশের বিশ্বমুখী সম্ভাবনা
নিউইয়র্কের প্রাণকেন্দ্র টাইমস স্কয়ারে আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর শুরু হচ্ছে চতুর্থ নিউইয়র্ক আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা ও চেম্বার এক্সপো ২০২৫। ম্যারিয়ট মার্কুইস হোটেলে আয়োজনটি কেবল প্রবাসীদের প্রদর্শনী নয়, বরং বাংলাদেশের বৈশ্বিক বাণিজ্য সম্ভাবনার প্রতিফলন।
গ্রেটার নিউইয়র্ক চেম্বার অব কমার্স এবং বাংলাদেশ ইউএসএ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এই আয়োজনের প্রতিপাদ্য ঘোষণা করেছে—“ক্রিয়েটিং ইকোনমিক অপরচুনিটিজ, শেইপিং এ বেটার ফিউচার টুগেদার”। অর্থাৎ অর্থনৈতিক সুযোগ তৈরি করে উন্নত ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে আয়োজনটি হচ্ছে।
বাংলাদেশ এবারও বিশেষভাবে আলোচনায় থাকবে। পোশাক শিল্প, তথ্যপ্রযুক্তি এবং পাটজাত পণ্যকে আলাদা করে উপস্থাপন করা হচ্ছে। যে দেশ একসময় কেবল পোশাক শিল্পের ওপর নির্ভরশীল ছিল, আজ সে তথ্যপ্রযুক্তি ও পাটজাত পণ্যেও আন্তর্জাতিক বাজারে নতুন দিগন্ত তৈরি করছে।
উদ্বোধনী আসরে উপস্থিত থাকবেন নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের গভর্নর ক্যাথি হকুল, যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর ক্রিস্টিন জিলিব্র্যান্ড, ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রশাসনের প্রধান কেলি লোফলার এবং বাণিজ্য দপ্তরের উপসচিব পল ডেবর। এই উপস্থিতি প্রমাণ করে যে, অনুষ্ঠানটি শুধু প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য নয়, বরং আমেরিকার মূল অর্থনৈতিক অঙ্গনেরও নজর কেড়ে নিয়েছে।
প্রথমবারের মতো ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে দশ সদস্যের প্রতিনিধি দল যোগ দিচ্ছে। ইতালি, যুক্তরাজ্য, স্কটল্যান্ড ও পোল্যান্ড থেকে শিল্পপতি, ব্যবসায়ী ও নীতিনির্ধারকরা অংশ নিচ্ছেন। ইতালি থেকে আসছেন মোহাম্মদ ইরাদ আলী, এমদাদুর রহমান চৌধুরী, সিরাজুল ইসলাম, এম এম রহমান ও মাকসুদা বেগম, ম্যাকমার্ট গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক ফায়সাল আলম। যুক্তরাজ্য থেকে থাকছেন সাবরিনা হুসাইন, অলি খান, স্কটল্যান্ড থেকে ফয়সাল চৌধুরী, পোল্যান্ড থেকে মনসুর মাহবুব।
এই এক্সপো প্রবাসী তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে, যেখানে তারা বিশ্ববাজারের প্রবণতা বুঝতে পারে, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে নেটওয়ার্ক তৈরি করতে পারে এবং বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় খাতগুলো নতুনভাবে উপস্থাপন করতে পারে। দুই শতাধিক স্টলের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের দুটি প্রতিষ্ঠান।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতির পর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য পুনর্বিন্যাসের প্রেক্ষাপটে এই মেলা বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন সম্ভাবনার সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে। পোশাক শিল্পে ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক বাজারে আস্থা তৈরি হলেও পাট, চামড়া, তথ্যপ্রযুক্তি ও কৃষিজাত পণ্যে দেশটি নতুন সম্ভাবনার সন্ধান করছে।
নিউইয়র্ক আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা শুধুই বাণিজ্য প্রদর্শনী নয়; এটি বাংলাদেশি স্বপ্ন, পরিশ্রম ও আত্মবিশ্বাসের প্রতীক। প্রবাসীরা এখন দেশকে বৈশ্বিক অর্থনীতির মঞ্চে তুলে ধরছেন, যেখানে একসময় শুধু সাংস্কৃতিক পরিচয় প্রদর্শন করতেন।
মেলার আহ্বায়ক ডা. জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশি ব্যবসায়ী ও তরুণ উদ্যোক্তাদের এক্সপোতে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে দেশি শিল্প ও ব্যবসার বৈশ্বিক প্রতিভা আরও উজ্জ্বলভাবে তুলে ধরা যায়।
ভোরের আকাশ // হ.র