সংগৃহীত ছবি
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় ৫৫৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গুবিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়াদের মধ্যে ঢাকা সিটি করপোরেশনের ২১৪ জন এবং বাকিরা ঢাকা সিটির বাইরের।
চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪৭ হাজার ৩৪২ জন। এর মধ্যে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৪৪ হাজার ৭৯৬ জন। মারা গেছেন ১৯৮ জন।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক ড. আতিকুর রহমান জানান, ডেঙ্গু এখন সারা বছরই হচ্ছে। বৃষ্টি শুরু হলে এটা বাড়ছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশা নিরোধক ওষুধ ব্যবহারের পাশাপাশি সব জায়গায় প্রচার চালাতে হবে। একইসঙ্গে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।
কীটতত্ত্ববিদ ড. মনজুর চৌধুরী বলছেন, মশানিধনে শুধু জেল-জরিমানা আর জনসচেতনতা বাড়িয়ে কাজ হবে না। সঠিকভাবে জরিপ চালিয়ে দক্ষ জনবল দিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
ভোরের আকাশ/জাআ
সংশ্লিষ্ট
নিয়ন্ত্রণে আসা অনেক সংক্রামক রোগের প্রাদুুর্ভাব বেড়েছে। গত কয়েক যুগ ধরে সংক্রামক রোগের বিষয়টি অনেকটা আলোচনার বাইরে চলে গিয়েছিল। এইসব জটিল অসংক্রামক রোগ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাসেবা সংশ্লিষ্টরা। হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পৃথিবীজুড়ে নতুন নতুন সংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব হচ্ছে। এর মধ্যে যেমন রয়েছে নতুন আবির্ভাব হওয়া রোগজীবাণু ও ভাইরাস, তেমনি রয়েছে নতুন বৈশিষ্ট্য নিয়ে পুরোনো রোগের ফিরে আসা। যেমন কোনো একটি রোগ হয়তো আগে বেশি বয়স্ক ব্যক্তিদের হতো, সেটা এখন তরুণ-যুবকদের মধ্যেও দেখা যাচ্ছে। চিকিৎসার ক্ষেত্রে দেখা যেতে পারে, প্রচলিত চিকিৎসার বিরুদ্ধে রোগটির প্রতিরোধক্ষমতা সৃষ্টি হয়েছে, রোগীর সংখ্যা ও রোগের বিস্তার আগের চেয়ে বেড়েছে অত্যন্ত দ্রুত।পৃথিবীতে যত মানুষ মৃত্যুবরণ করছে, তার ২৬ শতাংশ এ ধরনের নতুন আবির্ভূত রোগের কারণে মারা যাচ্ছে। বর্তমানে নতুন করে আলোচনায় রয়েছে অ্যানথ্রাক্স ও স্ক্যাবি রোগ। চুয়াডাঙ্গায় আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে ছোঁয়াচে চর্মরোগ স্ক্যাবিসের সংক্রমণ। শিশু, নারী, বয়স্ক সব বয়সী মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন এই রোগে। জেলার সদর হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ১৫০ থেকে ২০০ জন মানুষ চিকিৎসা নিচ্ছেন। ফলে পরিস্থিতি সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। তবে অভিযোগ উঠেছে, হাসপাতালে পর্যাপ্ত ওষুধের মজুত না থাকায় রোগীদের বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। এভাবে জনমনে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে অ্যানথ্রাক্স।গত ২৭ সেপ্টেম্বর সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের কিশামত সদর গ্রামে অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত একটি গরু জবাই করা হয়। এতে ওই গ্রামের ১১ জন অংশ নেন। দুই দিন পর তাদের শরীরে বিভিন্ন অংশে ফোসকা পড়ে এবং মাংসে পচন ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়। বিশেষ করে হাত, নাক, মুখ, চোখে এসব উপসর্গ দেখা যায়। এ ছাড়া অ্যানথ্রাক্স রোগের উপসর্গ নিয়ে রোজিনা বেগম (৪৫) নামের এক নারী রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। অসুস্থ ছাগল জবাই করে তিনি আক্রান্ত হয়েছিলেন।সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন ভোরের আকাশকে বলেন, মানুষ-প্রাণীর ক্রমবর্ধমান ঘনত্ব ও ঘনিষ্ঠতা, পরিবেশের প্রতিরক্ষাসক্ষমতা ক্রমবর্ধমান হারে ক্ষয়প্রাপ্ত হওয়া প্রভৃতি কারণে প্রাণী ও প্রকৃতি থেকে নতুন নতুন রোগজীবাণু বা ভাইরাস মানবদেহে ঢুকছে। জলবায়ু পরিবর্তন ঘুমিয়ে যাওয়া জীবাণুকে জাগিয়ে দিচ্ছে, এক ঋতুর রোগ অন্য ঋতুতে নিয়ে যাচ্ছে বা ঋতুর সীমা অতিক্রম করে সারা বছরই রোগ থাকছে। মানুষের জীবনধারার পরিবর্তন, অপরিকল্পিত নগরায়ণ, খাদ্য ও অন্যান্য সম্পদের অপচয়, কীটপতঙ্গবাহিত রোগ ও প্রতিরোধযোগ্য অসংক্রামক ব্যাধিরও (ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ক্যানসার, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসরোগ ইত্যাদি) বিস্তার ঘটাচ্ছে।তিনি আরও বলেন, মানুষের মধ্যে প্রতি ১০টি সংক্রামক ব্যাধির মধ্যে ৬টির বেশি রোগ প্রাণীর কাছ থেকে ছড়াচ্ছে। আর প্রতি ৪টি নতুন সংক্রামক রোগের মধ্যে ৩টিই প্রাণিবাহিত। আমাদের জানা যেসব রোগ প্রাণীর কাছ থেকে মানুষের কাছে ছড়াচ্ছে, তার মধ্যে রয়েছে নিপাহ, তড়কা (অ্যানথ্রাক্স), এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা, মার্স করোনা ভাইরাস, প্যানডেমিক ইনফ্লুয়েঞ্জা, জলাতঙ্ক (র্যাবিস), লেপ্টোস্পাইরোসিস, ইবোলা, মারবার্গ প্রভৃতি। কীটপতঙ্গবাহিত রোগের মধ্যে রয়েছে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, জিকা, পীতজ্বর (ইয়েলো ফিভার), ওয়েস্ট নাইল ফিভার প্রভৃতি। বাংলাদশে এই রোগগুলোর বেশ কয়েকটি উপস্থিতি রয়েছে। পুরোনো যেসব রোগ বাংলাদেশ বা পৃথিবীর অন্যান্য দেশ থেকে একেবারেই কমে গিয়েছিল, যা আবার নতুন করে দেখা দিচ্ছে, তার মধ্যে রয়েছে কলেরা, ম্যালেরিয়া, প্লেগ।জীবাণু ও ভাইরাসবাহিত রোগ : জীবাণু ও ভাইরাসজনিত রোগসমূহের হারিয়ে যাওয়া, আবার ফিরে আসা এবং বিবর্তনের তথ্য তুলে ধরেছেন চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা।ইনফ্লুয়েঞ্জা : ভাইরাস ও রোগজীবাণু প্রকৃতি ও মানুষের বিরুদ্ধে লড়াই করে টিকে থাকা এবং বংশবিস্তারের জন্য বিবর্তনের নিয়মেই নিজেকে পরিবর্তিত করে। এ রকম একটি ভাইরাস হচ্ছে ইনফ্লুয়েঞ্জা। মানুষের মধ্যে আগে থেকে এ নতুন ভাইরাসের বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা গড়ে না ওঠায় মানুষ সহজেই আক্রান্ত হয়।নিপাহ : বাংলাদেশে ২০০০ সাল থেকে প্রায় প্রতিবছর নিপাহ ভাইরাস সংক্রমণের প্রাদুর্ভাব ঘটছে। বাংলাদেশে দেখা যাচ্ছে, বাদুড়ের লালা-মূত্র দ্বারা দূষিত খেজুরের কাঁচা রস খেলে নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ।ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, জিকা, পীতজ্বর : বৃষ্টি, অতিরিক্ত গরম ও আর্দ্রতা মশা ও অন্যান্য কীটপতঙ্গের বংশবিস্তারের জন্য খুবই অনুকূল। পৃথিবীব্যাপী নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে তাই দেখা যাচ্ছে, প্রায় সারা বছরই ডেঙ্গু থাকছে, এর বিস্তারও আগের চেয়ে অনেক বেশি হচ্ছে। ডেঙ্গু ভাইরাসের বৈশিষ্ট্যেরও অদলবদল হচ্ছে, ফলে মৃত্যুর হার অনেক গুণ বেড়েছে। নতুন বৈশিষ্ট্যের ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ ও চিকিৎসার জন্য জনস্বাস্থ্যকর্মী ও চিকিৎসকদের আগেভাগেই প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ থাকে সীমিত। এবার ডেঙ্গুর তাণ্ডব আমরা বাংলাদেশে দেখেছি। ২০১৭ সালে ছড়িয়ে পড়েছিল চিকুনগুনিয়া। জিকা ভাইরাস সংক্রমণের ঘটনা বাংলাদেশে দু-একজন রোগীর মধ্যে সীমিত থাকলেও এর বাহক এডিস মশা এ দেশে থাকায় এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্য ও চিকিৎসা কর্তৃপক্ষকে সদাসতর্ক থাকতে হচ্ছে। এডিস ইজিপ্টি মশাবাহিত আরেকটি রোগ হচ্ছে পীতজ্বর (ইয়েলো ফিভার)। বাংলাদেশে এ রোগ দেখা না গেলেও আফ্রিকায় এটির প্রাদুর্ভাব নিয়মিত ব্যাপার।ওয়েস্ট নাইল ভাইরাস : কিউলেক্স মশা দ্বারা ছড়ায় ওয়েস্ট নাইল ভাইরাস। বাংলাদেশে অতিসম্প্রতি একজন রোগীর দেহে এ ভাইরাস পাওয়া গেছে। ওয়েস্ট নাইল ফিভার, ডেঙ্গু, জিকা ও পীতজ্বর ভাইরাসগুলো একই ভাইরাস গোত্রের অন্তর্গত।মার্স করোনা ভাইরাস : মার্স করোনা ভাইরাস রোগটিও নিপাহর মতো বাদুড়বাহিত। রোগটি মানুষ থেকে মানুষে হাঁচি-কাশির মাধ্যমে ছড়ায়। প্রধানত মধ্যপ্রাচ্যে রোগটি ছড়িয়ে পড়লেও বাংলাদেশে এখনো এ রোগ নেই। কিন্তু যেহেতু মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের প্রচুর জনশক্তি এবং যাতায়াত রয়েছে তাই এই রোগের বিপদ থেকে আমার মুক্ত নই।লেপ্টোস্পাইরোসিস : ইঁদুর ও অন্যান্য প্রাণী এ রোগে আক্রান্ত হয়। মানুষ আক্রান্ত হয় লেপ্টোস্পাইরোসিস রোগাক্রান্ত ইঁদুরের মূত্র দ্বারা সংক্রমিত পানির সংস্পর্শে এলে। বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষ, পানিতে ডোবা কৃষিক্ষেত্রে কাজ করা মানুষ লেপ্টোস্পাইরোসিসে আক্রান্ত হতে পারে। বাংলাদেশেও গবেষকেরা জ্বরের রোগীদের ল্যাবরেটরি পরীক্ষা করে লেপ্টোস্পাইরোসিস পেয়েছেন।চান্দিপুরা ভাইরাস: বেলেমাছি দ্বারা মানুষের দেহে এর সংক্রমণ ঘটে। সাধারণত ৯ মাস বয়সী থেকে ১৪ বছরের শিশুরা এতে আক্রান্ত হয়। বাংলাদেশে বেলেমাছি আছে, যা দ্বারা কালাজ্বরের সংক্রমণ ঘটে।প্লেগ: প্রতিবেশী ভারতের সুরাটে ১৯৯৪ সালে যখন অনেক দিন পর প্লেগের প্রাদুর্ভাব ঘটল, তখন আমাদের দেশসহ গোটা পৃথিবীতে উদ্বেগ-আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। এরপর ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে ২০০২ ও ২০০৪ সালে বিচ্ছিন্নভাবে প্লেগের খোঁজ পাওয়া যায়। তখন গবেষকেরা অনুসন্ধান করে দেখেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বন্য ইঁদুর থেকে লোকালয়ের ইঁদুরের মধ্যে প্লেগ সংক্রমিত হয়েছে, আর সেখান থেকে মানুষ আক্রান্ত হয়েছে।কলেরা: বাংলাদেশ থেকে কলেরা দূর হলেও এর ভাইরাস আমাদের দেশসহ পৃথিবীর অন্যান্য দেশে রয়ে গেছে। প্রস্তুতি না থাকলে পরিবেশদূষণ, অস্বাস্থ্যকর পানি ও খাবার, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে কলেরার প্রাদুর্ভাব ঘটতে পারে।ডিফথেরিয়া : বাংলাদেশে ডিফথেরিয়া এ মুহূর্তে না থাকলেও আমাদের আরেক নিকটতম প্রতিবেশী মিয়ানমারে যে তা আছে, তার প্রমাণ পাওয়া গেল রোহিঙ্গা আশ্রয়প্রার্থী শিশুদের মধ্যে এর প্রাদুর্ভাব ঘটলে। ডিফথেরিয়ায় এখন বয়স্করাও আক্রান্ত হচ্ছেন বলে ভারতসহ বিভিন্ন দেশের রোগতাত্ত্বিক বিশ্লেষণে জানা গেছে।ওষুধপ্রতিরোধী জীবাণু: ওষুধের যথেচ্ছ ব্যবহার (বিশেষ করে অ্যান্টিবায়োটিক ও স্টেরয়েড) এর কার্যকারিতা নষ্ট করে দিচ্ছে, অতি সাধারণ রোগজীবাণুর বিরুদ্ধে ওষুধ কাজ না করায় মানুষ আগের চেয়ে বেশি বেশি রোগাক্রান্ত হচ্ছে। বলা হচ্ছে, আগামী বিশ্ব মহামারি (প্যানেডেমিক) ঘটবে ওষুধপ্রতিরোধী জীবাণু (ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট মাইক্রোবস) দ্বারা। ইতিমধ্যেই ওষুধপ্রতিরোধী যক্ষ্মা, ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব ঘটছে।বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের সাবেক ডীন অধ্যাপক এবিএম আব্দুল্লাহ ভোরের আকাশকে বলেন, দেশের জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার সক্ষমতা বাড়ানো, জরুরি জনস্বাস্থ্য পরিস্থিতি মোকাবিলা করার সক্ষমতা বাড়ানোর মাধ্যমেই আমরা দ্রুত এসব অপ্রচলিত গুরুতর রোগব্যাধি শনাক্ত করতে পারি। আমাদের দেশে কতগুলো নির্দিষ্ট সংক্রামক রোগের নজরদারির ব্যবস্থা চালু আছে। হঠাৎ করে নতুন ও অজানা রোগের নজরদারির জন্য ঘটনাভিত্তিক নজরদারি ব্যবস্থাও চালু আছে। কিন্তু যে প্রতিষ্ঠান এর দায়িত্বপ্রাপ্ত, সেটি সিংহভাগ বৈদেশিক সহায়তানির্ভর। প্রয়োজন দেশের রাজস্ব বাজেটের ওপর ভিত্তি করে দেশের নজরদারির ব্যবস্থা শক্তিশালী করা। কারণ, রোগ নজরদারির ব্যবস্থা দেশের স্বাস্থ্যনিরাপত্তার অবিচ্ছেদ্য অংশ। সারা বিশ্ব আজ স্বাস্থ্য নিরাপত্তা গড়ে তুলতে কাজ করছে। আমরা কি আমাদের স্বাস্থ্যনিরাপত্তা শক্তিশালী করতে কাজ করব না?তিনি বলেন, দেশের জনস্বাস্থ্যের ব্যবস্থা, রোগ নজরদারির ব্যবস্থা, জরুরি স্বাস্থ্য পরিস্থিতি সাড়াদানের ব্যবস্থা, চিকিৎসাব্যবস্থা ও ল্যাবরেটরি সক্ষমতাকে যথাযথভাবে প্রস্তুত রেখে নতুন রোগ ও নতুন করে আবির্ভাব হওয়া রোগগুলোর উপযুক্ত ব্যবস্থাপনা করা যায়। আর আন্তর্জাতিক অংশীদারত্ব, বিশেষ করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে কার্যকর সম্পর্ক রেখে এ ধরনের জরুরি জনস্বাস্থ্য পরিস্থিতি মোকাবিলার সুযোগ রাখতে হবে। রোগ প্রাদুর্ভাবের তথ্য গোপন রেখে দেশের ভেতরে ও বাইরে জনগণ ও উপযুক্ত প্রতিষ্ঠানের কার্যকর সহযোগিতা পাওয়া সম্ভব নয়। একটি পেশাদার ঝুঁকি সংযোগ (রিস্ক কমিউনিকেশন) সংস্কৃতি গড়ে তুলেই তা করা সম্ভব।চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. বিদ্যুৎ কুমার বিশ্বাস সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমানে প্রাদুর্ভাব হওয়া স্ক্যাবিস সংক্রামক রোগ। আর্দ্র পরিবেশে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আগেও এই রোগ ছিল, তবে এখন বাজারের ওষুধের কার্যকারিতা কমে যাওয়ায় সংক্রমণ বাড়ছে। আমরা রোগীদের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার পরামর্শ দিচ্ছি এবং সরকারি বরাদ্দ অনুযায়ী ওষুধ দিচ্ছি। তবে এখন যথেষ্ট ওষুধ বরাদ্দ আছে। সরকারিভাবে বরাদ্দ নেই এমন ওষুধ লিখলে সেটা আমরা দিতে পারছি না। সেটা হয়ত রোগীদের বাইরের মেডিসিন দোকান থেকে কিনতে হচ্ছে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
গত ২৪ ঘণ্টায় এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে তিনজন মারা গেছেন। এই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭০০ জন। এ নিয়ে চলতি বছরে ডেঙ্গুতে মোট মারা গেলেন ২২০ জন। অন্যদিকে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫২ হাজার ১০৪ জন। বুধবার (৮ অক্টোবর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ডেঙ্গুতে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া দুইজনের একজন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) বাসিন্দা এবং অন্যতম ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের।বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে নতুন আক্রান্তদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ১৩১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৭০ জন, ঢাকা বিভাগে ১৪২ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ১৪১ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ১১৪ জন, খুলনা বিভাগে ৪১ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৩৪ জন, রাজশাহী বিভাগে ৩২ জন এবং রংপুর বিভাগে ১০ জন রোগী রয়েছেন। অন্যদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৬৬৬ জন ডেঙ্গু রোগী। এ নিয়ে চলতি বছরে মোট ছাড়পত্র পেয়েছেন ৪৮ হাজার ৬৬৭ জন।ভোরের আকাশ/এসএইচ
আজকের ব্যস্ত জীবনে আমরা সবাই যেন একটানা ছুটছি—কাজ, পরিবার, সম্পর্ক, দায়িত্ব—সব সামলাতে গিয়ে নিজের যত্নটাই যেন হারিয়ে ফেলেছি। অথচ শরীর ও মন নিয়মিত বিরতি চায়। কিন্তু সেই সংকেতগুলো আমরা বেশিরভাগ সময়ই উপেক্ষা করি। ফলস্বরূপ দেখা দেয় ক্লান্তি, মেজাজের পরিবর্তন, এমনকি দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক ও মানসিক সমস্যা।তাহলে কীভাবে বুঝবেন, আপনার সত্যিই বিশ্রাম দরকার? বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীর ও মন নিজেই কিছু ইঙ্গিত দেয়—শুধু সেগুলো চিনে নিতে জানতে হবে।১. অবিরাম ক্লান্তিপুরো রাত ঘুমানোর পরও যদি সকালে উঠে মনে হয় “আরও একটু ঘুমাই,” তাহলে সেটা শুধু ঘুমের মান খারাপ নয়—বরং শরীরের পক্ষ থেকে একটি স্পষ্ট বার্তা: এখন বিশ্রাম দরকার!অবিরাম ক্লান্তি শরীর ও মনের অতিরিক্ত চাপের ইঙ্গিত দেয়। এ অবস্থায় আপনি যতই ঘুমান না কেন, পুনরুজ্জীবিত হতে পারবেন না, যতক্ষণ না নিজের জন্য কিছুটা সময় নিচ্ছেন।২. মনোযোগ ও উৎপাদনশীলতা কমে যাওয়াপ্রিয় কাজেও মন বসছে না, ছোটখাটো বিষয় ভুলে যাচ্ছেন, কিংবা সাধারণ কাজ শেষ করতেও স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সময় লাগছে? এ সবই মানসিক ক্লান্তির লক্ষণ।গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘ সময় একটানা মানসিক চাপ সৃজনশীলতা ও মনোযোগ কমিয়ে দেয়, সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতাও দুর্বল হয়ে পড়ে।৩. বিরক্তি ও মেজাজের পরিবর্তনযখন ছোট সমস্যাতেই রাগ ওঠে, কাউকে সহজে সহ্য করতে পারেন না, বা অকারণে হতাশা ভর করে—তখন বুঝতে হবে, মানসিকভাবে আপনি ক্লান্ত।এই অস্থিরতা আসলে বার্নআউটের (burnout) লক্ষণ। মানসিক চাপ যখন সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যায়, তখন শরীর ও মন উভয়েই বিরতি দাবি করে।৪. শারীরিক অবনতিবারবার মাথাব্যথা, হজমের গোলমাল, ঘন ঘন ঠান্ডা লাগা বা শরীর ব্যথা—সবই হতে পারে স্ট্রেসের ফল। দীর্ঘমেয়াদি চাপ ইমিউন সিস্টেম দুর্বল করে দেয়, ফলে ছোটখাটো অসুস্থতাও সহজে আক্রমণ করতে পারে।৫. সামাজিকভাবে নিজেকে গুটিয়ে নেওয়াযদি দেখেন, আগে যেসব কাজে আনন্দ পেতেন—বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা, আত্মীয়দের সঙ্গে সময় কাটানো বা প্রিয় শখ—এখন আর আগ্রহ জাগে না, তাহলে বুঝবেন আপনি মানসিকভাবে নিঃশেষিত হয়ে পড়ছেন।এই সামাজিক বিচ্ছিন্নতা (social withdrawal) হলো মানসিক ক্লান্তির একটি স্পষ্ট ইঙ্গিত।কী করবেন?মন ও শরীরকে সুস্থ রাখতে প্রতিদিনই কিছুটা সময় নিজের জন্য রাখতে হবে। পর্যাপ্ত ঘুম, সুষম খাদ্য, নিয়মিত ব্যায়াম ও কিছুটা “নিজের সময়”—এসবই হতে পারে সর্বোত্তম বিশ্রামের উপায়।আপনার শরীর কখনো মিথ্যা বলে না। যখনই ক্লান্তি, বিরক্তি বা মনোযোগহীনতা অনুভব করবেন, সেটি আসলে শরীরের নিঃশব্দ অনুরোধ—“আমাকে একটু বিশ্রাম দাও।”ভোরের আকাশ//হর
গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আরও দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে সারাদেশে ৭১৫ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ডেঙ্গুতে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া দুইজনের একজন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) বাসিন্দা এবং অন্যতম ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের।আরও বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে নতুন আক্রান্তদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ১৩১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৭০ জন, ঢাকা বিভাগে ১৪২ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ১৪১ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ১১৪ জন, খুলনা বিভাগে ৪১ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৩৪ জন, রাজশাহী বিভাগে ৩২ জন এবং রংপুর বিভাগে ১০ জন রোগী রয়েছেন।অন্যদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৬৬৬ জন ডেঙ্গু রোগী। এ নিয়ে চলতি বছরে মোট ছাড়পত্র পেয়েছেন ৪৮ হাজার ৬৬৭ জন।ভোরের আকাশ/এসএইচ