স্বাস্থ্য ডেস্ক
প্রকাশ : ০৭ আগস্ট ২০২৫ ০১:২০ এএম
পুরুষদের প্রস্টেট পরীক্ষা করানো কেন জরুরি?
পুরুষদের স্বাস্থ্যের নানা দিক আছে যেগুলো সম্পর্কে সচেতনতা কম থাকে। তার মধ্যে অন্যতম হলো প্রস্টেট স্বাস্থ্য। প্রস্টেট একটি ছোট গ্রন্থি, যা পুরুষদের প্রজনন ক্ষমতার সঙ্গে জড়িত এবং মূত্রথলির নিচে অবস্থান করে। বয়স বাড়ার সঙ্গে প্রস্টেটে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে, যেমন প্রস্টেট ক্যান্সার, প্রস্টেট বড় হওয়া (BPH), এবং প্রস্টেটের সংক্রমণ (Prostatitis)।
অনেকে প্রস্টেটের সমস্যা নিয়ে কথা বলতে লজ্জা বোধ করেন বা ভয়ে থাকা সত্ত্বেও নিয়মিত পরীক্ষা করানো অত্যন্ত জরুরি, কারণ এটি জীবন বাঁচাতে পারে।
কেন প্রস্টেট চেক করানো জরুরি?
১. প্রস্টেট ক্যান্সার সবচেয়ে সাধারণ পুরুষ ক্যান্সারের মধ্যে একটি
পুরুষদের মধ্যে স্কিন ক্যান্সারের পর প্রস্টেট ক্যান্সারই সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। প্রতি ৮ জন পুরুষের মধ্যে একজনের প্রস্টেট ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। প্রথম দিকে সাধারণত কোনো লক্ষণ না থাকার কারণে সহজেই ধরা পড়ে না, কিন্তু আগেভাগে ধরা পড়লে ৫ বছরের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা প্রায় ১০০%।
২. লক্ষণ সাধারণত অনেক দেরিতে প্রকাশ পায়
প্রস্টেটের সমস্যা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায় এবং শুরুতে কোনো লক্ষণ থাকে না। যখন প্রস্রাবে সমস্যা, ব্যথা বা রক্ত দেখা যায়, তখন অনেক সময় অনেক দেরি হয়ে যায়। তাই আগে থেকেই PSA রক্ত পরীক্ষা বা ডিজিটাল রেকটাল পরীক্ষা করানো উচিত।
৩. অন্যান্য প্রস্টেট সমস্যা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়
ক্যান্সার ছাড়াও প্রস্টেট বড় হওয়া বা সংক্রমণের কারণে ঘন ঘন প্রস্রাব, প্রস্রাবে জ্বালা, রাতের ঘুম ভাঙার মতো সমস্যা হতে পারে, যা জীবনযাত্রা ব্যাহত করে। সময়মতো চিকিৎসা নিলে এসব সমস্যা থেকে আরাম পাওয়া সম্ভব।
৪. বয়স ও পারিবারিক ইতিহাস ঝুঁকি বাড়ায়
৫০ বছরের উপরে পুরুষদের মধ্যে প্রস্টেট সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি বেশি। যদি পরিবারের কারও প্রস্টেট ক্যান্সার থাকে, তাহলে ঝুঁকি আরও বাড়ে। এমন ক্ষেত্রে ৪০ থেকে ৪৫ বছর বয়স থেকেই পরীক্ষা করানো উচিত।
৫. পরীক্ষা এখন সহজ ও নির্ভরযোগ্য
অনেকের ধারণার বিপরীতে, প্রস্টেট পরীক্ষা খুবই সহজ। PSA নামে একটি রক্ত পরীক্ষা আছে, আর প্রয়োজন হলে ডিজিটাল রেকটাল পরীক্ষা করা হয় যা মাত্র কয়েক সেকেন্ডে সম্পন্ন হয়। আধুনিক MRI ও বায়োপসির মাধ্যমে আরও নির্ভুলভাবে রোগ নির্ণয় সম্ভব।
৬. নিজের যত্ন নেওয়া মানসিক শান্তি আনে
নিয়মিত প্রস্টেট পরীক্ষা করালে শুধু অসুখ ধরা পড়ে না, নিজের প্রতি যত্ন নেওয়ার মানসিক শান্তিও মেলে। সময়মতো সমস্যা ধরা পড়লে চিকিৎসা শুরু করা যায়।
কখন প্রস্টেট পরীক্ষা করাবেন?
৫০ বছরের পর সকল পুরুষের নিয়মিত পরীক্ষা করানো উচিত।
৪০-৪৫ বছর বয়সে, যদি পারিবারিক ইতিহাস থাকে বা ঝুঁকি বেশি থাকে, তখনও পরীক্ষা করা জরুরি।
যে কোনো বয়সে, যদি প্রস্রাবে সমস্যা, ব্যথা বা অন্য কোনো উপসর্গ দেখা দেয়, তৎক্ষণাৎ পরীক্ষা করানো উচিত।
স্বাস্থ্যই সবচেয়ে বড় সম্পদ। তাই নিজের প্রতি যত্নবান হওয়া অত্যাবশ্যক। কয়েক মিনিটের প্রস্টেট পরীক্ষা হয়তো আপনার জীবন বাঁচাতে পারে। স্বাস্থ্য সচেতন হোন, নিয়মিত চেকআপ করান।
ভোরের আকাশ//হ.র