ভোরের আকাশ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২২ মে ২০২৫ ০৫:১২ পিএম
দুই মাধ্যমেই খুব তৈলচর্চা হয়, যেটা আমি পারি না
মা চেয়েছিলেন, ছেলে প্রকৌশলী হবে। কিন্তু ছেলের স্বপ্ন ছিল ভিন্ন। ছেলেবেলায় ভাবতেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হবেন। তাহলে ফুটফুটে সব দেবশিশুদের সঙ্গে সারাদিন কাটানো যাবে। সময়ের সঙ্গে সেই ইচ্ছেও বদলাতে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সময় মনে হলো, কলেজের শিক্ষক হবেন। সেই সুযোগও এসেছিলো, কিন্তু তিনি গ্রহণ করেননি। ব্যাংকের চাকরির মঞ্চেও এসেছিলেন, কিন্তু সেখান থেকেও সরে দাঁড়িয়েছিলেন স্বতঃস্ফূর্তভাবে। বলছি সাহিত্যিক ও নাট্যকার মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদের কথা। পেশায় তিনি একজন সাংবাদিক, তবে তার হৃদয়জুড়ে রয়েছে সাহিত্যভাবনা। সৃষ্টি করেছেন পঞ্চনরক, দাকাল, সুখমহল, সাধের জনম-এর মতো উপন্যাস। লিখেছেন শিশু সাহিত্যে, গল্পগ্রন্থ ও কাব্যগ্রন্থ। তার আলোচিত কাব্যগ্রন্থ যখন মানুষ ছিলাম পাঠকের মন ছুঁয়েছে গভীরভাবে। টিভি নাটক রচনাতেও তিনি সুনাম কুড়িয়েছেন। নাহিদ লেখালেখি নিয়ে একটু অগোছালো—এ কথা তিনি নিজেই অকপটে স্বীকার করেন। একটি লেখা শেষ না করেই কখনো কখনো নতুন লেখায় মন দেন, ফলে কিছু মূল্যবান লেখা হারিয়ে যায়। এ নিয়ে তার আক্ষেপও কম নয়। তার ভাষায়, "সত্যিই আমি একটু অগোছালো। একটি লেখা শেষ না করে নতুন লেখা শুরু করি। ফলে অনেক সময় দারুণ কিছু ভাবনা হারিয়ে যায়। এটা যে কোনো লেখকের জন্যই দুঃখের।" সাংবাদিকতা ও নাটক রচনায় তার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানতে চাইলে সরাসরি বলেন, "আমি যে দুই মাধ্যমে কাজ করি, সেখানে লিয়াজঁ মেনটেন করে চলতে হয়। যে যেটা চায়, সেটা তাকে দিতে হয়। অকারণে প্রশংসা করতে হয়, যে যেটা না সেটা বলতে হয়। এক কথায়, এখানে খুব তৈলচর্চা হয়। এটা আমার স্বভাবের সঙ্গে মেলে না। আমার বিশ্বাস, যোগ্যতা দিয়েই কাজ হওয়া উচিত। কিন্তু বাস্তবে আমাদের দেশে সেটা খুব একটা হয় না। সবাই বলে, মিডিয়ায় কাজ করতে হলে কারিশমা থাকতে হয়। আমার সে কারিশমা নেই। হতে পারে এটা আমার ব্যর্থতা।"
সবকিছুর পরও মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ নিজের পথেই চলছেন। বর্তমানে একটি বেসরকারি চ্যানেলের জন্য দীর্ঘ ধারাবাহিক নাটক লিখছেন। পাশাপাশি কয়েকটি প্যাকেজ নাটকের স্ক্রিপ্ট লেখা চলমান। সামনের বইমেলার জন্য লেখা চলছে। তার কথা, "যতদিন ভালো লাগবে, লেখালেখি করব, সাংবাদিকতাও করব। যখন আর ভালো লাগবে না, ফুটপাতে দোকান দেব অথবা গ্রামে চলে যাব। ছাদে বসে তেঁতুল বনে জোছনা দেখেই কাটিয়ে দেব জীবন। জীবন তো খুব ছোট।
ভোরের আকাশ/মি