অনশন ভাঙল বেরোবি শিক্ষার্থীরা
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে চলমান আমরণ অনশন প্রত্যাহার করেছে শিক্ষার্থীরা। উপাচার্যের আশ্বাস ও সম্ভাব্য রোডম্যাপ ঘোষণার পর বুধবার (১৯ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা অনশন ভাঙেন।
সেখানে উপাচার্য ড. মো. শওকাত আলী নিজ হাতে অনশনরত শিক্ষার্থীদের ডাব খাইয়ে অনশন ভাঙান। এ সময় তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সম্ভাব্য রোডম্যাপ অনুযায়ী আগামী ৩০ অক্টোবরের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন হবে। ২৬ থেকে ৩০ অক্টোবরের মধ্যে যেকোনো একদিন ভোটগ্রহণের পরিকল্পনা রয়েছে। তবে সরকার গেজেট প্রকাশের পরই বিস্তারিত তফসিল ঘোষণা করা হবে।
উপাচার্য বলেন, ছাত্র সংসদ নিয়ে সংবিধি পরীক্ষা ও চূড়ান্তকরণসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আগামী বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) বৈঠক ডেকেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। গেজেট প্রকাশ হলেই দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে।
এদিকে অনশনকারীদের পক্ষ থেকে ইইই বিভাগের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান বলেন, ইউজিসি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে এবং বৃহস্পতিবার বৈঠক ডাকার কথা জানিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকেও সম্ভাব্য রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছে। এজন্য আমরা অনশন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
এর আগে টানা তিন দিন ধরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে আমরণ অনশন পালন করছিলেন শিক্ষার্থীরা। এতে অসুস্থ হয়ে পড়েন অন্তত আটজন, যাদের মধ্যে চারজনকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়।
পরে ইউজিসির সদস্য ও ছাত্র সংসদ সংক্রান্ত কমিটির আহ্বায়ক ড. তানজিম উদ্দিন খান মুঠোফোনে অনশনরত শিক্ষার্থীদের বলেন, ছাত্র সংসদ যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে নেই, তাই এটিকে অন্তর্ভুক্ত করতে বৈধ প্রক্রিয়া অনুসরণ জরুরি। অন্যথায় এটি অবৈধ হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার ঝুঁকি থাকবে। তবে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।
ইউজিসির চিঠি অনুযায়ী, আগামী ২১ আগস্ট সংবিধি পরীক্ষা ও চূড়ান্তকরণসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবে। ড. তানজিম উদ্দিন খানের সভাপতিত্বে ওই বৈঠকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন, বেরোবির শিক্ষকমণ্ডলী এবং ইউজিসির আইন বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
ভোরের আকাশ//হ.র
সংশ্লিষ্ট
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী আজ মঙ্গলবার। ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর দিনগত রাতে ফেসবুকে ভারতবিরোধী স্ট্যাটাস দেওয়ায় কারেণ বুয়েটের শেরেবাংলা হলে নৃশংসভাবে তাকে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের (বর্তমানে নিষিদ্ধ) একদল নেতাকর্মী। ২০১১ নম্বর কক্ষে নিয়ে আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করে। পরে রাত ৩টার দিকে শেরেবাংলা হলের সিঁড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এরপর ২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়। ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর রায় দেন ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১। রায়ে ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড এবং পাঁচজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। গত ১৬ মার্চ মামলায় আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন), আপিল ও জেল আপিলের ওপর শুনানি শেষে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ বিচারিক আদালতের রায় বহাল রাখেন।মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ২০ জনের মধ্যে বিচারিক আদালতের রায়ের সময় থেকেই তিনজন পলাতক। তারা হলেন মোর্শেদ-উজ-জামান, এহতেশামুল রাব্বি ও মুজতবা রাফিদ। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আরেক আসামি মুনতাসির আল (জেমি) গত বছরের ৬ আগস্ট গাজীপুরের হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পালিয়ে যান। এ মামলায় সব মিলিয়ে দণ্ডিত ২৫ আসামির মধ্যে চারজন পলাতক বলে রায় ঘোষণার দিন (গত ১৬ মার্চ) জানিয়েছিল রাষ্ট্রপক্ষ।এদিকে ৭ অক্টোবর আবরার ফাহাদের মৃত্যুবার্ষিকী ও ২৫ ফেব্রুয়ারি বিডিআর ম্যাসাকার দিবসকে জাতীয় দিবস হিসেবে ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। প্রতিবছর এই দুটি দিবস বিশেষভাবে পালিত হবে।সোমবার (৬ অক্টোবর) বিকালে প্রধান উপদেষ্টার অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে জানানো হয়, শহীদ আবরার ফাহাদের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকীতে ৭ অক্টোবর সন্ধ্যা ৭টায় ঢাকাসহ দেশের সব শিল্পকলা একাডেমিতে ‘ইউ ফেইলড টু কিল আবরার ফাহাদ’ প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হবে। ঢাকার প্রদর্শনীতে উপস্থিত থাকবেন আবরার ফাহাদের বাবা।এছাড়া মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) বিকেল ৩টায় আবরার ফাহাদ স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পলাশী চত্বরে এক স্মরণসভার আয়োজন করা হয়েছে। এ সময় আগ্রাসনবিরোধী আট স্তম্ভ উদ্বোধন হবে। উদ্বোধন করবেন আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ।ভোরের আকাশ/তা.কা
বিশ্ব শিক্ষক দিবসে চার দফা দাবি জানাল বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনবিশ্ব শিক্ষক দিবসে চার দফা দাবি জানাল বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশন।শিক্ষকদের পেশাগত অবমূল্যায়ন, আর্থিক সংকট এবং ন্যূনতম ভাতা প্রদানের অভাবসহ নানা চ্যালেঞ্জের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশন। এসব সমস্যা সমাধানে সরকারের কাছে চার দফা দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।রোববার (৫ অক্টোবর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে ‘বিশ্ব শিক্ষক দিবস ২০২৫’ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি তুলে ধরেন সংগঠনের নেতারা।সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মিসেস মনোয়ারা ভূঁইয়া, আর লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মহাসচিব মো. মিজানুর রহমান। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি ডা. আব্দুল মাজেদ, জেসমিন নাহার, যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ ফারুক হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ হামিদুর রহমান, শিক্ষা সম্পাদক আব্দুল আলিম এবং অর্থ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম অনিকসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।সংগঠনের চার দফা দাবিগুলো হলো—১️. শিক্ষক/শিক্ষিকাদের জন্য ন্যূনতম ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা করা।২️. বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রশিক্ষণের সুযোগ বৃদ্ধি করা।৩️. জাতীয় শ্রেষ্ঠ শিক্ষক পুরস্কারের আওতায় বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করা।৪️. শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন কমিটিতে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা।সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, “শিক্ষকের ভূমিকা শুধু পাঠদান নয়; শিক্ষক সমাজগঠনের কারিগর, জাতির দিকনির্দেশক এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের আলোকবর্তিকা।”তারা আরও বলেন, “প্রাথমিক শিক্ষাই জাতীয় উন্নয়নের ভিত্তি। একজন শিশুর হৃদয়ে যখন ভালোবাসা, শৃঙ্খলা, নৈতিকতা ও জ্ঞানের বীজ বপন করা হয়, তখন সেই শিশুটি যোগ্য নাগরিক হিসেবে সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নয়নে ভূমিকা রাখে।”বক্তারা উল্লেখ করেন, সীমিত সুযোগ ও নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যেও কিন্ডারগার্টেন শিক্ষকরা প্রতিদিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তাদের ত্যাগ, ভালোবাসা ও আন্তরিকতার মাধ্যমেই কোমলমতি শিক্ষার্থীরা জ্ঞানের আলোয় আলোকিত হচ্ছে।সভাপতি মিসেস মনোয়ারা ভূঁইয়া বলেন, “আধুনিক প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কিংবা উন্নত কারিকুলাম—সব কিছুর প্রাণশক্তিই শিক্ষক। তাই তাদের মর্যাদা ও আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব।”ভোরের আকাশ/জাআ
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি-অনিয়মের শ্বেতপত্র প্রকাশ করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরার।রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, শ্বেতপত্রে বিগত সরকারের সময় অপ্রয়োজনীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ, শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি, মানহীন শিক্ষায় চটকদার জিপিএ ফাইভ, অবকাঠামোগত ও আর্থিক অনিয়ম এবং এমপিও করতে দলীয় বিবেচনার বিষয়গুলো উঠে আসবে।তিনি বলেন, অভ্যুত্থানের পর আমরা শিক্ষা ব্যবস্থাকে পুনরুজ্জীবিত করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য একটি মানসম্মত, অন্তর্ভুক্তিমূলক, বিজ্ঞানভিত্তিক ও মানবিক শিক্ষা নিশ্চিত করা।মাইলস্টোন ট্রাজেডিতে নিহতদের স্মরণ করে তিনি আরও বলেন, আধুনিক বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষা প্রসারের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মকে দক্ষ ও বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার উপযোগী হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। পুঁথিগত বিদ্যার পাশাপাশি মননের বিকাশও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, নির্ভুল ও মানসম্মত পাঠ্যপুস্তক প্রণয়নের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পাশাপাশি এনসিটিবির বিধিমালা প্রণয়নের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ সময় উপাচার্য নিয়োগে সার্চ কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।ভোরের আকাশ/এসএইচ
চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নের কাজ শেষ হয়েছে। এখন ফলাফল প্রস্তুতের কাজ চলছে। দ্রুত এ কাজ শেষে ফলাফল প্রকাশের জন্য তারিখ ঠিক করা হবে।ফল প্রকাশের একাধিক তারিখ রেখে একটি প্রস্তাবনা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। সেখানে ১৯ অক্টোবরের মধ্যেই ফল প্রকাশের তারিখ নির্ধারণ করা হবে বলে জানিয়েছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি।ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এবং আন্তঃশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার এ তথ্য জানিয়েছেন।তিনি বলেন, সব উত্তরপত্র মূল্যায়নের কাজ শেষ হয়েছে। এখন অন্যান্য কার্যক্রম চলছে। আগামী ১৯ অক্টোবর শেষ কার্যদিবস ধরে এর মধ্যেই ফলাফল প্রকাশ করা হবে।জানা যায়, চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয়েছিল গত ২৬ জুন, যা শেষ হওয়ার কথা ছিল ১৩ আগস্ট। কিন্তু কয়েকটি বিষয়ের পরীক্ষা স্থগিত করে পুনরায় সূচি প্রকাশ করে পরীক্ষা নেওয়ায় তা শেষ হয় ১৯ আগস্ট।এবার ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নিতে ফরম পূরণ করেন ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ৬ লাখ ১৮ হাজার ১৫ ছাত্র এবং ৬ লাখ ৩৩ হাজার ৯৬ ছাত্রী। সারাদেশে ২ হাজার ৭৯৭টি কেন্দ্রে পরীক্ষা হয়।তবে এ পরীক্ষায় প্রায় ২৭ হাজার শিক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলেন। ফলে ফলাফলের অপেক্ষায় রয়েছেন মূলত সোয়া ১২ লাখের মতো এইচএসসি পরীক্ষার্থী।ভোরের আকাশ/মো.আ.