বগুড়া প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৪ মে ২০২৫ ১০:১০ পিএম
আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন দিতে হবে: নজরুল ইসলাম খান
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, একদফায় ছিল সরকার পতন ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন। সরকার পতন হয়েছে, এখন নির্বাচন বাকি। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। কেউ বলছেন দেশ সংস্কার, তারপর নির্বাচন। কেউ দল গোছাতে পারেনি, কেউ জোট করার চেষ্টায় আছে। তাই সংস্কার নিয়ে কথা বলছেন। আমরা বলতে চাই নির্বাচনের পরেও সংস্কার করা সম্ভব।
শনিবার (২৪ মে) বিকেলে বগুড়া শহরের সূত্রাপুর সেন্ট্রাল হাইস্কুল মাঠে ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশে’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, দেশের কিছু রাজনৈতিক দল দেশের নির্বাচন পেছনের পাঁয়তারা করছে। কারণ, তাদের দল এখনো সংগঠিত হয়নি। দলকে সংগঠিত করতে তারা নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, কেন ডিসেম্বরের পরে নির্বাচন করতে হবে। তার যৌক্তিক কারণ আমারা জানতে চাই। ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন দিতে হবে। আমরা মনে করি ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন সম্ভব। নির্বাচন কমিশনও এরই মধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন, তারা চলতি বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচনের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, দেশে গণতন্ত্র না থাকলে বাকস্বাধীনতা থাকে না। নির্বাচিত সরকার না থাকলে উন্নয়নও থাকে না। তাই শিগগির নির্বাচন না দিলে জুলাই আন্দোলনের রক্তত্যাগ বৃথা যাবে। সংস্কারের নামে নির্বাচন ঝুলিয়ে রাখার কোনো সুযোগ নেই।
নজরুল ইসলাম বলেন, যে এক দফার জন্য হাজারো ভাই গুম-খুন হয়েছে, নির্যাতনের শিকার হয়েছে; সেই এক দফার অবশিষ্ট কাজ প্রথম করতে হবে জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে।
তিনি বলেন, যারা ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ে সামনে ছিলেন তাদের নেতৃত্ব দিতে হবে। তরুণরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে এটায় (জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া) বাধা দেওয়ার, প্রতিরোধ করার ক্ষমতা কারও নেই।
সমাবেশে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী তার বক্তব্যে বলেন, দেশে যোগ্য কোনো লোক নেই? নাতি-নাতনির বয়সীদের উপদেষ্টা বানালে অভিজ্ঞ সরকার হয় না। প্রধান উপদেষ্টা সম্মানী মানুষ, তার বিরুদ্ধে কোনো বক্তব্য নেই। তবে নাতির বয়সি উপদেষ্টা করায় কিছু ভুল হচ্ছে, এগুলো শোধরানো দরকার।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দল সমালোচনা করবেই, কথা বলার স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছি। তাহলে শান্তির জন্য, ন্যায়ের জন্য বক্তব্য দিলে এত উষ্মা কেন? মব জাস্টিস কেন? অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে বিনা বিচারে মানুষ মারা যাবে কেন? কিছু উপদেষ্টার কথায় মনে হচ্ছে নির্বাচন চাওয়া অপরাধ। যারা বলেন তারা কে?
নজরুল ইসলাম খান বলেন, টানা ১৫ বছর আমরা ডান-বাম ও মধ্যপন্থি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। এই আন্দোলনে জুলাই বিপ্লবে সফলতা এসেছে। গঠিত হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। আমরা ডা. ইউনূস সরকারকে স্বাগত জানিয়েছি। সহযোগিতা করেছি। কিন্তু নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার যে টালবাহানা করছে, তাতে আমরা নির্বাচন নিয়ে শঙ্কাবোধ করছি।
সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছিরের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, কেন্দ্রীয় যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নয়ন।
ভোরের আকাশ/এসএইচ