তিস্তার পানি বিপদসীমা ছুঁঁই ছুঁই
রংপুর ব্যুরো
প্রকাশ : ০৫ অক্টোবর ২০২৫ ০৮:০৯ পিএম
ছবি: ভোরের আকাশ
রংপুরে ঘূর্ণিঝড়ে ৮ শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ঘটনায় নারী, শিশুসহ প্রায় ২০ জন আহত হয়েছেন। ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ক্ষতিগ্রস্থরা। এদিকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের মাঝে শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। সেই সাথে ঘর মেরামতে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।
স্থানীয়রা জানান, রবিবার (৫ অক্টোবর) সকাল থেকে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়। এরই মধ্যে সকাল ১০টার দিকে গঙ্গাচড়া উপজেলার আলমবিদিতর ও নোহালী ইউনিয়নে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে। কয়েক মিনিটের মধ্যেই দুই ইউনিয়নের ৮ শতাধিক কাঁচা, আধাপাকা ঘরের চাল, বেড়া, দেয়াল ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায়। বেশিরভাগ বাড়ির চালের উপরে, উঠানে এবং বৈদ্যুতিক খুঁটিতে গাছপালা পড়ে যায়। ফলে দুই ইউনিয়নের বেশিরভাগ জায়গায় বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রয়েছে। এতে করে চরম দূর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয়রা। এছাড়া ঘূর্ণিঝড়ে আমন ক্ষেত, কলার বাগানসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে আগাম জাতের শীষ বের হওয়া আমনের গাছগুলো জমিতে শুয়ে গেছে।
আলমবিদিতর ইউনিয়নের কুতুব হাজীরহাট এলাকার বাসিন্দা নাজমুল আমিন (৩৫) বলেন, সকাল বেলা হঠাৎ করে ঘূর্নিঝড় উঠে। এতে করে আমার টিনশেড বাড়ির চাল উড়ে গেছে। এছাড়া গাছ পড়ে বাড়ির দেয়াল ভেঙ্গে গেছে। এ ঘটনায় আমার ছেলের মাথা ফেটে গেছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছি।
নোহালী ইউনিনের সরদারপাড়া গ্রামের ফনি বেওয়া (৪৩) বলেন, আমার থাকার দুটি ঘরই ঝড়ে ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেছে। এখন কোথায় থাকবো তা ভেবে পাচ্ছি না।
নোহালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আশরাফ আলী বলেন, আমার ইউনিয়নটি তিস্তা নদীর তীরবর্তী। আজ ঘূর্ণিঝড়ে ইউনিয়নের প্রায় ৪’শ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। আমি বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েছে। তারা সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান মৃধা বলেন, ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। তাদের ঘরবাড়ি মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেয়া হবে।
উজানের পাহাড়ী ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, রবিবার (৫ অক্টোবর) সকাল ৯টায় তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। বিকেল ৩টায় এ পয়েন্টে পানি ১৪ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এতে করে গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া ও পীরগাছা উপজেলার তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল, চর ও দ্বীপচরগুলোতে পানি উঠতে শুরু করেছে। অনেকে রাতে পানি বাড়ার আশংঙ্কায় তিস্তার বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, ভারতের সিকিমসহ দেশের অভ্যন্তরে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। যা ৬ অক্টেবর পর্যন্ত অব্যহত থাকবে। এতে করে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। এ তথ্য সংশ্লিষ্টদের পৌঁছে দেয়া হয়েছে।
ভোরের আকাশ/জাআ