বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৭ আগস্ট ২০২৫ ১১:০৫ পিএম
ছবি: ভোরের আকাশ
ভাল কাজের প্রলোভনে বিভিন্ন সময় পাচারের শিকার ১৭ বাংলাদেশিকে ট্রাভেল পারমিটে বেনাপোল সীমান্তে ফেরত দিয়েছে ভারতীয় পুলিশ।
বুধবার (২৭ আগস্ট) বিকাল সাড়ে ৫ টায় ভারতের পেট্রাপোল চেকপোষ্ট দিয়ে এদের বেনাপোল চেকপোষ্টে ফেরত পাঠানো হয় বলে নিশ্চিত করেছে বেনাপোল ইমিগ্রেশন ওসি ইলিয়াজ হোসেন মুন্সী।
ফেরত আসা নারী, শিশুদের আইনী সহয়তা দিয়ে পুলিশের কাছে মানবাধিকার সংগঠন রাইটস যশোর ৭ জন, মহিলা আইনজীবি সমিতি ৫ জন ও জাস্টিস এন্ড কেয়ার ৫ জনকে গ্রহণ করেছে।
ফেরত আসাদের মধ্যে রয়েছেন—গাজীপুরের দিপা, চাপাইনওয়াবগঞ্জের মইন খান, হবিগঞ্জের নুর আলম, গোপালগঞ্জের হৃদয় মণ্ডল, কুষ্টিয়ার ইমরান শেখ, লক্ষ্মীপুরের মেহেদী হাসান, খুলনার নাহিদ মোরল, নড়াইলের ফয়সাল সেখ, বাগেরহাটের রানা হাওলাদার, লালমনিরহাটের মল্লিকা রানী, কিশোরগঞ্জের সামিরা আক্তার, রাঙামাটির সারা জান্নাত, লক্ষ্মীপুরের ইমু খাতুন, পাবনার মিথিলা রহমান, বাগেরহাটের সাইম জমাদ্দার, নওগাঁর কমল সরদার এবং পাবনার নুরজাহান খাতুন।
রাইটস যশোরের তথ্য ও অনুসন্ধান কর্মকর্তা তৌফিকুজ্জামান জানান, দেশের বিভিন্ন সীমান্ত পথে তারা ভারতে গিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে পুলিশের হাতে আটক হয়েছিল। পরে এদের তথ্য যাচাই-বাচাই শেষে দুই দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় স্বদেশ প্রত্যাবাসনের অনুমতি দেয়।
মানবাধিকার সংগঠন সীমান্ত থেকে শিশু, কিশোরদের আইনী সহয়তা ও কর্মসংস্থান তৈরীর জন্য প্রাথমিকভাবে হেফাজতে রাখবে। পরে পরিবারের কাছে তাদের পৌঁছে দিবে।
জানা যায়, পাচার প্রতিরোধে কাজ করছে দেশি, বিদেশি বিভিন্ন সংগঠন। তারপর থেকে নেই পাচার কার্যক্রম। কখনো ভাল কাজ, কখনো প্রেমের প্রলোভন দেখিয়ে নারী, শিশুদের ভারতে পাচার করে আসছে একটি চক্র। পরে সেখানে নিয়ে বিক্রি করে ইচ্ছের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে ঝুঁকিপূর্ণ কাজে। যা পাচার হচ্ছে তার মাত্র ৫ শতাংশ উদ্ধার হচ্ছে। বাকিদের কোন সঠিক তথ্য নেই কোন সরকারী বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে। এমন পাচারের শিকার ১৭ বাংলাদেশিকে উদ্ধারের পর ফেরত আনতে সরকারের পাশাপাশি কাজ করে মানবাধিকার ও এনজিও প্রতিষ্ঠানগুলো। এরা বিভিন্ন সময় পুলিশের হাতে আটকের পর ভারতের পশ্চিম বঙ্গের একটি হোমের আশ্রয়ে ছিল। এদের বয়স ১০ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে। আটকের পর আইনি জটিলতায়ন কেউ কেউ দুই বছর থেকে ৫ বছর পর্যন্ত ভারতের হোমে থাকতে হয়েছিল। পরে ভারত-বাংলাদেশ সরকারের দেওয়া স্বদেশ প্রত্যাবাসনে এরা দেশে ফেরার সুযোগ পায়।
মানব উদ্ধার ও শিশু সুরক্ষা সংস্থ্যার চেয়ারম্যান সৈয়দ খায়রুল আলম জানান, তাদের তথ্য মতে পাচারের শিকার প্রায় ৫০ হাজারের মত নারী, পুরুষ যারা ভারতে রয়েছে। পাচারের পর এদের মধ্যে অনেককে ভারতে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল। কাউকে প্রেমের প্রলোভনে ভারতে নিয়ে বিক্রি করে দিয়েছিল। অনেকের কাজের কথা বলেও প্রতারণা করে চক্রটি। ভারতে বিক্রির পর তাদেরকে দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করতে বাধ্য করে পাচারকারীরা।
ভোরের আকাশ/জাআ