চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ : ১৪ মে ২০২৫ ০১:১৬ পিএম
কালুরঘাট সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন প্রধান উপদেষ্টা
চট্টগ্রামের কালুরঘাটে কর্ণফুলী নদীর ওপর বহুল প্রত্যাশিত রেলসহ সড়ক সেতু নির্মাণকাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বুধবার (১৪ মে) বেলা ১১টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে ভিত্তিপ্রস্তরের স্মারক ফলক উন্মোচন করেন তিনি।
ফলক উন্মোচনকালে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘কালুরঘাট ব্রিজে আমার অনেক স্মৃতি। এই সেতুর ঐতিহাসিক গুরুত্ব অনেক। আজ এখানে বোয়ালখালীর বাসিন্দাও উপস্থিত আছেন। কালুরঘাট সেতু তাদের বহুল আকাঙ্ক্ষিত। এটি তৈরি হয়ে গেলে চট্টগ্রামবাসীর বহু কষ্টের অবসান হবে’।
এ সময় সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি কর্ণফুলী নদীর ওপর নতুন একটি কালুরঘাট সেতু নির্মাণ। এখন যে সেতুটি আছে, ১৯৩১ সালে সেটি নির্মাণ করা হয়েছিল। যদি এর মেয়াদকাল ৮০ বছরও ধরা হয়, তবে ২০১১ সালে এর মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে।’
কালুরঘাট সেতুর প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী আবুল কালাম চৌধুরী বলেন, ‘ইতিমধ্যে সেতু নির্মাণের জন্য পরামর্শক নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এরপর ডিজাইন চূড়ান্ত করা হবে। সব ঠিক থাকলে ২০৩০ সালে সেতু দিয়ে যানবাহন ও ট্রেন চলাচল করবে।’
প্রসঙ্গত. অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর ২০২৪ সালের ৭ অক্টোবর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় কালুরঘাটে কর্ণফুলী নদীর ওপর রেল-কাম-রোড সেতু নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে ব্যয় ধরা হয় ১১ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা। প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে রেলওয়ে। ২০২৬ সালের শুরুর দিকে নতুন সেতুর কাজ শুরু হয়ে ২০৩০ সালে সেতু দিয়ে যান চলাচল শুরুর কথা আছে। প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য গত ফেব্রুয়ারি মাসে প্রকৌশলী আবুল কালাম চৌধুরীকে প্রকল্প পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে, সেতু নির্মাণের জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার কাছ থেকে সহজ শর্তে ৮১ কোটি ৪৯ লাখ ১০ হাজার ডলার ঋণ পাচ্ছে বাংলাদেশ। যা বাংলাদেশি নয় হাজার ৫৩৪ কোটি ৪৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা (প্রতি ডলার ১১৭ টাকা হিসাবে)। এর মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট কোঅপারেশন ফান্ড (ইডিসিএফ) থেকে ৭২ কোটি ৪৭ লাখ ৩০ হাজার ডলার এবং ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট প্রমোশন ফ্যাসিলিটি (ইডিপিএস) তহবিল থেকে নয় কোটি এক লাখ ৮০ হাজার ডলার দেওয়া হবে।
সেতুর প্রস্তাবিত নকশা অনুযায়ী, কর্ণফুলী নদীর ওপর বিদ্যমান রেল সেতুর ৭০ মিটার উজানে নতুন সেতু নির্মিত হবে। দুই পাশে দুই লেন করে চার লেনের সেতু তৈরি হবে। এক পাশে চলবে ট্রেন, অপর পাশে বাস-ট্রাকসহ সাধারণ যানবাহন চলবে। মূল সেতুর দৈর্ঘ্য ৭০০ মিটার। পানি থেকে সেতুর উচ্চতা ১২ দশমিক ২ মিটার। ভায়াডাক্টসহ সেতুর দৈর্ঘ্য হবে প্রায় ৬ কিলোমিটার। সমীক্ষা প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেতু দিয়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে প্রতিদিন ২০ জোড়া ট্রেন এবং দিনে প্রায় ১৫ হাজার যানবাহন চলাচল করবে।
ভোরের আকাশ/এসএইচ