আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৮:২১ পিএম
ছবি: ভোরের আকাশ
সনাতন ধর্মালম্বীদের বড় ধর্মীয় উৎসব দূর্গাপূজা। মহলয়ার মধ্যে দিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। ২ অক্টোবর বুধবার দেবী দূর্গাকে বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে সনাতন ধর্মালম্বীদের বড় এই ধর্মীয় উৎসব। দূর্গাপূজাকে ঘিরে বগুড়ার আদমদীঘিতে বেড়েছে নারিকেল ও গুড়ের কদর।
পূজাকে ঘিরে স্থায়ী দোকানের পাশাপাশি মৌসুমী ব্যবসায়ীরাও নারিকেল বিক্রি করে থাকেন। পূজায় প্রতিটি নারিকেল ও গুড়ের দোকানে ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। ক্রেতাদের অভিযোগ, পূজা উপলক্ষে ১৫ থেকে ২০ টাকা বেশি দামে গুড় কিনতে হচ্ছে। এজন্য অনেকেই গুড়ের পরিবর্তে চিনি কিনছেন।
বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার বিভিন্ন বাজার, মৌসুমী দোকানও গুড় ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সারা বছর টুকটাক কেনাবেচা হলেও মেলা ও দূর্গাপূজায় বিক্রি বাড়ে। এজন্য বাজারে তুলনামূলক দাম কিছুটা বেশি। পূজায় অতিথি আপ্যায়নে বিভিন্ন ধরনের খাদ্য পরিবেশন করা হয় যার অন্যতম হচ্ছে নাড়ু। এই নাড়ু তৈরির মূল রশদ হলো নারিকেল, গুড় ও চিনি। ফলে সারাদেশে একবারে চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় নারিকেল ও গুড়ের কদর কিছুটা বেড়ে যায় এসময়।
আদমদীঘি বাজারে ৩০ বছর ধরে গুড় ও নারিকেল বিক্রি করেন পিন্টু। সদরের তেতুলিয়া গ্রামে বাস করেন এই ব্যবসায়ী। তিনি জানান, ‘বর্তমান বাজারে আকারভেদে এক জোড়া নারিকেল বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা থেকে শুরু করে ২২০ টাকা পর্যন্ত। এরমধ্যে-প্রতিপিস ছোট নারকেল বিক্রি হচ্ছে ৭০, মাঝারিটি ৯০, আর বড় নারকেল বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। পূজা উপলক্ষে আকারভেদে ৫ থেকে ৭ টাকা দাম বেড়েছে। নারিকেল আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। তবে, গুড়ের দাম ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। স্থিতিশীল আছে চিনির দাম। এককেজি চিনি কিনতে ক্রেতাদের গুণতে হবে ১২০ টাকা।’
স্থানীয় গোরগ্রাম এলাকার ব্যবসায়ী জহুরুল জানান, ‘পূজায় দোকানের বেচা-কেনা বাড়ে। এ মৌসুমে ডাবের তুলনায় নারিকেলের দাম বাড়েনি। কারন একটি ভালমানের ডাব কিনতে গেলে ১শ’ টাকা লাগে। সেই তুলনায় নারিকেলের দাম বাড়েনি। তবে গুড়ের দাম ৫ থেকে ১০ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে।’
সুদিন পাল্লা গ্রামের গুড় ও আটা ব্যবসায়ী পরিমল দেবনাথ, দিলিপ এবং গবিন্দ নামের ব্যবসায়ীরা জানান, ‘এক চৌকি (পাটা) গুড় ২৩শ’ থেকে ২৪শ’ টাকায় কিনতে হয়। বিক্রির সময় কেজিপ্রতি ৩ থেকে ৫ টাকা হাতে রাখি। এইটুকু লাভ না করলে সংসার চালাবো কি করে? তবে, সাধারণ গুড় ১১০ টাকা দরে বিক্রি হলেও নাড়ু ও মোয়ার জন্য বিশেষ গুড় বলে ১২০ টাকা দরে সেই গুড় বিক্রি হচ্ছে।’
কাল্লাগাড়ি গ্রামের রাইহান, রামপুরার শাহাব উদ্দিন এবং তালশনের তোজাম্মেল হোসেন নামের ক্রেতারা অভিযোগ করে জানান, ‘অন্য সময় দশ থেকে পনের টাকা কম দামে নারিকেল কিনতাম। আজকে মাঝারি আকারের নারিকেল ১৭০ টাকা জোড়ায় কিনলাম। আর গুড়ের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা।’ বিক্রেতারা বলছেন, পূজা উপলক্ষে দাম একটু বেড়েছে। পূজার পরে আবার দাম স্বাভাবিক হবে।
ভোরের আকাশ/জাআ