সংগৃহীত ছবি
ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে রাসেল (১৬) নামে এক বাংলাদেশি কিশোর নিহত হয়েছে।
শনিবার (১২ জুলাই) ভোর রাতে উপজেলার মিনাপুর সীমান্তে ৩৫৩ মেইন পিলারের তিনুয়া মাদারী সীমান্তের কাছে ভারতের অভ্যন্তরে এই ঘটনা ঘটে। আসকর আলী রাসেল ৫ নং হরিপুর ইউনিয়নের হরিপুর সদর উপজেলার রাজবাড়ী এলাকার নিয়াজ উদ্দিনের ছেলে।
বিজিবি ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, রাসেলের কয়েকজন বন্ধু মিলে কাজের সন্ধানে অবৈধভাবে ভারতের পাঞ্জাবের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। শনিবার ভোর আনুমানিক ৩টা ৩০ মিনিটে মিনাপুর সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া কেটে ভিতরে প্রবেশ করলে ভারতের কিষাণগঞ্জ ব্যাটেলিয়ানের সদস্যরা তাদেরকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে এতে রাসেল গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যায়। রাসেলের মরদেহ ২০০ গজ ভারতের অভ্যন্তরে পড়েছিল। পরে বিএসএফ তার মরদেহ নিয়ে যায়।
বাংলাদেশ (বিজিবি) দিনাজপুর ৪২ ব্যাটেলিয়ানের অধিনায়ক লে.কর্ণেল আব্দুল্লাহ আল মঈন হাসানকে মুঠোফোনে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি জানান, তারা ঘটনাটি সম্পর্কে অবগত আছেন। বিএসএফের সাথে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বাংলাদেশে লাশ ফেরত আনার প্রক্রিয়া চলমান।
ভোরের আকাশ/এসএইচ
সংশ্লিষ্ট
জয়পুরহাট জেলার সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে গত দুই দশকে ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) এর হাতে প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ১০ জন নিরীহ বাংলাদেশি নাগরিক। আহত হয়েছেন আরও অনেকেই। এ নিয়ে সীমান্তজুড়ে আতঙ্ক ও শোকের ছায়া নেমে থাকলেও আজও এসব হত্যাকাণ্ডের কোনো বিচার হয়নি। নিহতদের পরিবারগুলোর দাবি-বিনা উসকানিতে, বিনা অপরাধে তাদের প্রিয়জনদের হত্যা করা হয়েছে। তারা রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ না নেওয়ার অভিযোগ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।একাধিক পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রিয়জন হারিয়ে অনেকে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। কেউ হয়েছেন পাগলপ্রায়, কেউবা সন্তানদের নিয়ে দিশেহারা হয়ে দিন কাটাচ্ছেন। সীমান্তে একতরফা এই হত্যাযজ্ঞ থামানো ও বিচার নিশ্চিতের দাবি জানিয়ে আসছেন ভুক্তভোগীরা।হাটখোলা গ্রামের জনির বাবা আনোয়ার হোসেন কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমার ছেলে বেঁচে থাকলে কোরআনের হাফেজ হতো।’জনির মা বিলকিস বেগম আক্ষেপ করে বলেন, ‘কোনো বিচার পাইনি, মামলা হয়নি!’ নুন্দইল গ্রামের নিহত শামীমের স্ত্রী পরিবানু বেগম বলেন, ‘আমি একটা সন্তানকে লালন- পালন করতে না পেরে অন্যকে দিয়ে দিয়েছি!’একই গ্রামের নিহত জামিরুল মণ্ডলের বড় ভাই খাইরুল ইসলাম জানান, ‘আমার ভাই খুব ভালো মানুষ ছিল। আমরা আজও বুঝে উঠতে পারিনি কেনো তাকে হত্যা করা হলো!’একই গ্রামের উলফন বেগম, যিনি তার একমাত্র ছেলে রাজুকে হারিয়েছেন, কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমাকে বিচার করে দেন।’ হাটখোলার নিহত জনির চাচা আতোয়ারের অভিযোগ আরও ভয়াবহ। তার ভাষ্য, ‘বিএসএফ আমার ভাতিজার হাত-পা কেটে, চোখ উপড়ে লাশ পাঠিয়েছে!’উচনা সোনাতলার নিহত মুনসুর আলীর মা বলেন, ‘আমার ছেলেকে গুলি করে মেরে পাটের জাগের নিচে লুকিয়ে রেখেছে!’ আর তার বাবা আব্দুল বাসেত বলেন, ‘আমরাই কেনো শুধু মরিএ তারা তো মরে না!’জাতীয় নাগরিক পার্টির জয়পুরহাট জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক সংগঠক ওমর আলী বাবু বলেন, ‘জয়পুরহাট সীমান্তে বিএসএফ যেভাবে নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছে, তা মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক আইনের চরম লঙ্ঘন। বিগত সরকার এ বিষয়ে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি। বর্তমান সরকারকে দ্রুত তদন্ত করে এসব হত্যার বিচার নিশ্চিত করতে হবে।’জয়পুরহাট জর্জ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট শাহানুর আলম শাহীন বলেন, ‘সীমান্ত হত্যা দু’দেশের সীমান্ত রক্ষীদের ফ্ল্যাগ মিটিংয়ের মাধ্যমে নিষ্পত্তি না হলে আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। এটি আন্তর্জাতিক অপরাধের পর্যায়ে পড়ে।’সীমান্তের এই নিষ্ঠুর বাস্তবতা থামাতে হলে প্রয়োজন আন্তঃরাষ্ট্রীয় আন্তরিকতা, কার্যকরী কূটনীতি ও মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা। নয়তো সীমান্তের এ কান্না থামার নয় বরং রক্তের হোলি খেলা চলতেই থাকবে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে মোহাম্মদ সোহাগ নামের এক ব্যবসায়ীকে পাথর দিয়ে নির্মমভাবে হত্যার প্রতিবাদে কুড়িগ্রামে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ।শনিবার (১২ জুলাই) বিকেলে ইসলামী যুব আন্দোলনের উদ্যোগে একটি বিক্ষোভ মিছিলটি কুড়িগ্রামের ঘোষপাড়া থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ জেলা কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়।বক্তারা বলেন, মিটফোর্ড এলাকায় প্রকাশ্যে একজন ব্যবসায়ীকে পাথর দিয়ে হত্যা করার ঘটনা প্রমাণ করে, দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি চরমভাবে অবনতির দিকে যাচ্ছে। তারা অবিলম্বে হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের দাবি জানান এবং জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা সোহাগ হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানান এবং দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।সাবেশে বক্তব্য রাখেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ কুড়িগ্রাম জেলা শাখার সভাপতি মুহাম্মাদ কাজীউল ইসলাম ও সহ-সভাপতি সাইফ মুহাম্মাদ শাহ-আলম, ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ কুড়িগ্রাম জেলা শাখার সভাপতি আ.ন.ম আশিকুর রহমান, সহ-সভাপতি মুহাম্মাদ শরীফুজ্জামান সিদ্দিকী এবং সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কুড়িগ্রাম জেলা শাখার সভাপতি আলহাজ্ব শাহজাহান মিয়া, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মাওলানা হাফিজুর রহমান ও সহ-সভাপতি এবং কুড়িগ্রাম-২ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ নুর বখত মিঞা।ভোরের আকাশ/এসএইচ
যুবদল নেতা কর্তৃক ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যার বিচার এবং সারাদেশে ক্রমবর্ধমান আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির বিরুদ্ধে পিরোজপুরে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।শনিবার (১২ জুলাই) বিকেলে পিরোজপুরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে এই বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে টাউন ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ মিছিলটি শেষ হয়।মিছিলে পিরোজপুরের সাধারণ ছাত্র-জনতা, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী এবং সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। তারা সোহাগ হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার এবং অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।বিক্ষোভ মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, জুলাই যোদ্ধা সদস্য সচিব তাহমীদ আল নাসীব, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আফরোজা তুলি এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির যুব শক্তির একেএম জাবির হাসান।বক্তারা বলেন, দেশে প্রতিনিয়ত হত্যা, খুন, ধর্ষণসহ নানা অপরাধ বেড়েই চলেছে। সাধারণ মানুষের জানমাল আজ নিরাপদ নয়। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণে জনগণের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছে।উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগে যুবদল নেতার হাতে নৃশংসভাবে খুন হন স্থানীয় ব্যবসায়ী সোহাগ, যা পিরোজপুরসহ সারা দেশে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা ও আখাউড়া উপজেলা সীমান্ত এলাকায় পৌনে ৫ কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ করেছে বিজিবি। শনিবার (১২ জুলাই) সকালে বিজিবি- ৬০ ব্যাটালিয়ন এ অভিযান পরিচালনা করে।এ সময় প্রায় ৫ কোটি টাকা মূল্যের অবৈধ ভারতীয় মোবাইল ডিসপ্লে, বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সিগারেট, জিরা, বিভিন্ন প্রকার ট্যাবলেট ও ওষুধ জব্দ করা হয়। গত ২৪ ঘন্টায় পৃথক অভিযানে এসব মালামাল জব্দ করেছে বিজিবি।সুলতানপুর ব্যাটালিয়ন (৬০ বিজিবি) এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. জিয়াউর রহমান ভোরের আকাশকে জানান, সীমান্তে নিরাপত্তা রক্ষা ও চোরাচালান প্রতিরোধে ৬০ বিজিবির আভিযানিক কার্যক্রম ও গোয়েন্দা তৎপরতা সর্বোতভাবে অব্যাহত রেখেছে।এরই ধারাবাহিকতায় সীমান্তবর্তী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ৪ কোটি ৭৬ লাখ ৯,৮০০ হাজার টাকার অবৈধ ভারতীয় মালামাল জব্দ করা হয়েছে। আটক মালামাল আখাউড়া কাস্টমসে জমা করার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।ভোরের আকাশ/এসএইচ