রংপুরে গণপিটুনিতে দুজনের মৃত্যু
রংপুর ব্যুরো
প্রকাশ : ১৪ আগস্ট ২০২৫ ০৩:৪৫ পিএম
ছবি: ভোরের আকাশ
রংপুরের তারাগঞ্জে গণপিটুনিতে দু’জনের মৃত্যুর ঘটনার মামলায় গ্রেফতার হওয়া ৪ আসামীর ৩ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) দুপুর দেড়টায় আসামি তারাগঞ্জের সয়ার ইউনিয়নের চরকডাঙ্গা বালাপুর গ্রামের আলেফ উদ্দিনের ছেলে আখতারুল ইসলাম (৪৫), রহিমাপুরের আইয়ুব আলী’র ছেলে মিজানুর রহমান (২৬), বুড়িরহাট ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের জাফর আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম (৪০) ও সয়ার বালাপাড়ার আজিুল ইসলামের ছেলে ইবাদত আলীকে (৩৫) আদালতে তোলা হয়। এ সময় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তারাগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম আসামিদের ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে তারাগঞ্জ কগনিজেন্স আদালতের বিচারক কৃষ্ণ কমল রায় ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
কোর্ট পরিদর্শক আমিনুল ইসলামএ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, আসামিদের ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে মহামান্য আদালত ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। গোপন তথ্য ও সিসিটিভি ফুটেজ দেখে এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে যৌথ বাহিনীর অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া মব সৃষ্টি করে যারা দেশ, জনগণ ও আইনশৃঙ্খলাকে হুমকির মুখে ফেলার চেষ্টা করবে তাদের দ্রæত আইনের আওতায় আনা হবে।
৮ পুলিশ সদস্য সাময়িক বরখাস্ত, তদন্ত কমিটি গঠন : দায়িত্বে অবহেলার ঘটনায় বুধবার রাতে তারাগঞ্জ থানার দুই এসআইসহ ৮ পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে জেলা পুলিশ। সাময়িক বরখাস্ত হওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন, তারাগঞ্জ থানার এসআই আবু জোবায়ের, এসআই সফিকুল ইসলাম, কনস্টেবল ফারিকুদ আখতার জামান, ধিরাজ কুমার রায়, হাসান আলী, ফিরোজ কবির, মোক্তার হোসেন ও বাবুল চন্দ্র রায়। তাদের রংপুর জেলা পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।
এদিকে গণপিটুনিতে দু’জনের মৃত্যুর ঘটনায় জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বুধবার রাতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ মোহাম্মদ ফারুকুজ্জামানকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটিকে আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
জেলা পুলিশ সুপার আবু সায়েম বলেন, সাময়িক বরখাস্ত হওয়া পুলিশ সদস্যরা ঘটনার দিন মোবাইল টিমের দায়িত্বে ছিলেন। সেই সাথে রুপলাল হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আবু জোবায়েরকে তদন্ত কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। মামলার নতুন তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তারাগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রফিকুল ইসলামকে।
উল্লেখ্য, গত ৯ আগস্ট রাতে তারাগঞ্জের কুর্শা ইউনিয়নের ঘনিরামপুর ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের রুপলাল তার ভাগ্নি জামাই প্রদীপ লালকে নিয়ে মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য বাংলা মদ নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। রাত সাড়ে ৯ টায় তারাগঞ্জ উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের বুড়িরহাটে তাদের ভ্যান থামিয়ে কিছু যুবক মদের ব্যাগ কেড়ে নেয় এবং চোর চোর বলে চিৎকার করে। এ সময় স্থানীয়দের গণপিটুনিতে রুপলালের মৃত্যু হয়। পরে ১০ আগস্ট রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আহত প্রদীপ মারা যান।
এ ঘটনায় রুপলালের স্ত্রী ভারতী রানী বাদী হয়ে ৫’শ থেকে ৭’শ জন অজ্ঞাতকে আসামি করে তারাগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ১১ আগস্ট সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৪ আসামিকে গ্রেফতার করে।
ভোরের আকাশ/মো.আ.