ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২১ মে ২০২৫ ০৮:৪১ পিএম
মায়ের লাশের পাশে কাঁদছিলো ছয় মাসের শিশু, হত্যাকারী বাবা পলাতক!
মাকে হত্যা করে পালিয়ে গেলেন বাবা। মায়ের লাশের পাশে কাঁদছিলো ছয় মাস বয়সি শিশু তুয়া মনি। মায়ের সাড়া না পেয়ে অবুঝ তুয়া লাশের পাশে গড়াগড়ি দিয়ে কাঁদছিল। শিশুর কান্না শুনে বাড়ির ভাড়াটিয়া ঘরের দরজা খোলা দেখতে পায়। বিষয়টি বাড়ির মালিককে জানায় তারা।
তিনি এসে ঘরে প্রবেশ করে মেঝেতে আকলিমা আকতারের মরদেহ দেখতে পান। পাশে গড়াগড়ি দিয়ে কাঁদছে অবুঝ তুয়া। ঘরে নেই বাবা আদনান ইসলাম। খবর পেয়ে দুপুরে পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে। ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে স্বামী আদনান মিয়া।
স্থানীয়দের অভিযোগ পারিবারিক কলহের কারণে আদনান তার স্ত্রীকে হত্যা করে ঘরে লাশ ফেলে পালিয়ে গেছে। নিহত আকলিমা আক্তার (৩০) ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা থানার ইমুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা। পলাতক স্বামী আদনান ইসলাম (৩৫) একই জেলা থানার মন্ডলসেন গ্রামের এশার আলীর ছেলে। আদনান দম্পতি উপজেলার তলিহাটি ইউনিয়নের আবদার গ্রামের জয়নালের বাড়িতে ভাড়া থাকতো। আকলিমা আক্তার ও আদনান ওই বাড়িতে ভাড়া থেকে ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা উপজেলার পৃথক পোশাক কারখানায় চাকুরি করতেন।
পুলিশ ও বাড়ির লোকজনের সূত্রে জানা যায়, আকলিমা ও তার স্বামী ওই বাড়িতে প্রায় দুই বছর ধরে ভাড়ায় থাকেন। তাদের মধ্যে প্রায়সই ঝগড়া হতো। গতকালও তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়েছে। বুধবার সকালে বাড়ির লোকজন ঘরের মেঝে আকলিমা আক্তারের মরদেহ দেখতে পায়। খবর পেয়ে পুলিশ দুপুরে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে।
পাশের ঘরের ভাড়াটিয়া নুরুন্নাহার জানান, সকালে ঘুম থেকে উঠেই পাশের ঘরে শিশুর কান্না শুনতে পান। দীর্ঘ সময় পরো ঘরে কারো সাড়া শব্দ পাননি। এক পর্যায়ে উঁকি দিয়ে দেখতে পান মেঝে আকলিমা পড়ে আছে। পাশে শিশু তুয়া কাঁদছে। বিষয়টি তিনি বাড়ির অন্য ভাড়াটিয়া ও বাড়ির মালিককে জানান।
বাড়ির মালিক জয়নাল আবেদীন ঘরে ঢুকে মেঝেতে আকলিমার রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পান। মরদেহের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মায়ের মরদেহের পাশে ছয় মাসের শিশু তুয়া মনি কাঁদছিলো। তার স্বামী ঘরে নেই।
স্থানীয়দের ধারণা, আদনান তার স্ত্রীকে হত্যাকরে লাশ ঘরে ফেলে পালিয়ে গেছে। নিহতের ছোটভাই শামীম ইসলাম জানান, বিয়ের পর থেকেই আমার বোন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। তাকে বিভিন্ন সময় শারিরীক ও মানুষিকভাবে নির্যাতন করতো বোন জামাই। দুলাভাই আমার বোনকে হত্যা করে পালিয়েছে।
শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মুহম্মদ আব্দুল বারিক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্যা পাঠানো হয়েছে। নিহতের স্বামী তাকে হত্যা করে পালিয়ে গেছে। এ বিষয়ে স্বজনদের অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ভোরের আকাশ/জাআ