তাড়াইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৫ মে ২০২৫ ১১:৫৩ এএম
ঝুঁকিপূর্ণ ভবন, চিকিৎসক সংকটে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসাসেবা
লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসাসেবার ভরসাস্থল ৫০ শয্যাবিশিষ্ট কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। কিন্তু এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে ভবনের পলেস্তর ভেঙে পড়ে উল্টো আহত হচ্ছেন রোগীরা। হাসপাতাল ভবনের এই বেহাল অবস্থায় চিকিৎসক, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ চিকিৎসা নিতে আসা মানুষকে সর্বদা আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হচ্ছে।
হাসপাতালের জরাজীর্ণ ভবন সংস্কারসহ নতুন ১০০ শয্যার ভবন নির্মাণের জন্য স্বাস্থ্য কর্মকার্তা ডা. অতিশ দাস রাজীব সম্প্রতি স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর বরাবর পত্র পাঠান।
এতে জানা যায়, ৫০ শয্যার তাড়াইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স করিমগঞ্জ, ইটনা, পার্শ্ববর্তী জেলার নান্দাইল এবং নেত্রকোণা জেলার কেন্দুয়া, মদন উপজেলা থেকে রোগীরা এখানে চিকিৎসা নিতে আসেন।
এ এলাকার লোকজনের আয়ের উৎস কৃষি হওয়ায় তারা উন্নত সেবা নিতে উপজেলার বাইরে যাওয়ার সুযোগ কম। বর্তমান আবাসিক ভবনসহ হাসপাতালের পুরোনো ভবনের রডে মরিচা ধরে ছাদের প্লাস্টার ভেঙে পড়ছে। দেয়ালও ফাটল ধরেছে। যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
কিছুদিন আগে জরুরি বিভাগে ছাদের নিচের অংশের স্লাভ এবং বৈদুতিক পাখা ভেঙে কর্মচারী আহত হন। এছাড়া বৈদ্যুতিক লাইনও সম্পূর্ণ ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় যে কোনো বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও হাসপাতালের প্রশাসনিক শাখায় বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিটের শব্দ শোনা যায়। প্রায়ই সময় বাল্ব, ফ্যান, কম্পিউটার বিকল হয়ে যায় কিছু দিন আগে ইপিআই শাখার ভ্যাকসিন রাখার গ্রিমের ভোন্টেজ স্টেবিলাইজারও পুড়ে যায়। ফলে হাসপাতালের প্রশাসনিক কাজসহ ইপিআই ভ্যাকসিন সংরক্ষণের কাজ ব্যাহত হচ্ছে।
জানা যায়, হাসপাতাল এলাকাটি নিচু হওয়ায় হাসপাতাল ভবনে পানি প্রবেশ করে। যার ফলে রোগীদের সার্বিক চিকিৎসাব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মহা-পরিচালকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আরও বলা হয়, হাসপাতালের বহির্বিভাগে ৩৫০-৪৫০ জন রোগী চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করেন। হাসপাতালটি ৫০ শয্যা হলেও প্রতিদিন গড়ে ৬০-৭০ জন রোগী ভর্তি থাকেন।
এছাড়াও জরুরি বিভাগে প্রতিদিন গড়ে ৫০-৬০ জন রোগী জরুরিসেবা গ্রহণ করেন। ২৮ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও ২০ টি পদই শুণ্য। ১১ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও ১২ জন অন্যান্য চিকিৎসকসহ মোট ২৫ জন চিকিৎসকের পদ শূন্য থাকায় সার্বিক চিকিৎসাসেবা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
এ বিষয়ে তাড়াইল উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. অতিশ দাস রাজীব বলেন, হাসপাতালের ভবনের ছাদের পলেস্তরা ভেঙে পড়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। আমরা বাধ্য হয়েই এখানে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছি। ভবন সংস্কারের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন পাঠিয়েছি বহুবার, কিন্তু আমরা ডাক্তার সংকট এবং ভবন সংস্কারের সমস্যার প্রতিকারের অপেক্ষায় আছি।
ভোরের আকাশ/আজাসা