নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১০ মে ২০২৫ ১১:৪০ পিএম
র্যাব কর্মকর্তা পলাশ সাহার আত্মহত্যা: অবশেষে মুখ খুললেন স্ত্রী সুস্মিতা সাহা
র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার পলাশ সাহার আত্মহত্যার ঘটনাকে ঘিরে চলমান আলোচনা-সমালোচনার মাঝে মুখ খুলেছেন তার স্ত্রী সুস্মিতা সাহা। ফরিদপুরে শ্বশুরবাড়িতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে তিনি দাবি করেন, শাশুড়ির অতিমাত্রায় হস্তক্ষেপ এবং নিয়ন্ত্রণমূলক আচরণে দাম্পত্য জীবনে সংকট দেখা দেয়।
সুস্মিতা জানান, পলাশের মা তাকে সংসার করতে দেননি বরং সন্তানকে ছোট শিশুর মতো নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চেয়েছেন। তিনি বলেন, “আমার স্বামী আমার হাতের রান্না পছন্দ করত, এজন্য একসময় আমার শাশুড়ি আমার রান্নাই বন্ধ করে দেন। ৩৫ বছর বয়সেও পলাশকে তার মা নিজ হাতে খাইয়ে দিতেন। মৃত্যুর দিন সকালেও তিনি পলাশকে খাইয়েছেন।”
তিনি আরও বলেন, “ওর মা প্রতিটি বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতেন—পোশাক নির্বাচন থেকে শুরু করে খাওয়া, ঘুমানো পর্যন্ত। এতে আমি নিজের অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলেছিলাম। ওর মা-ছেলের মধ্যে এমন একটি ঘনিষ্ঠতা ছিল যেখানে আমি নিজেকে বারবার অনাহূত মনে করতাম।”
সুস্মিতা জানান, পলাশ একজন সৎ এবং নির্লোভ মানুষ ছিলেন, তাকে ভালোবাসতেন। তবে অতিমাত্রায় মাতৃভক্ত হওয়ায় দাম্পত্য জীবনে আন্তরিকতা তৈরি হয়নি। তিনি বলেন, “আমি বিয়ের কয়েক মাস পর থেকেই বলতাম, আমাদের আলাদা সময় দরকার, কিন্তু সে বলত—সব কাজ একসঙ্গে করব, আলাদা সময় দেয়ার দরকার নেই।”
এর আগে গত ৭ মে সকালে চট্টগ্রামের বহদ্দারহাটে র্যাব ক্যাম্পে নিজ কার্যালয়ে পলাশ সাহার গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ প্রাথমিকভাবে পারিবারিক কলহকে আত্মহত্যার সম্ভাব্য কারণ হিসেবে দেখছে।
ঘটনাস্থল থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করে পুলিশ। সেখানে পলাশ লিখেছেন, “আমার মৃত্যুর জন্য মা এবং বউ কেউ দায়ী না। আমিই দায়ী। কাউকে ভালো রাখতে পারলাম না।” সুইসাইড নোটে স্ত্রীকে তার সমস্ত স্বর্ণালঙ্কার নিতে বলার পাশাপাশি, মায়ের দায়িত্ব ছোট দুই ভাইয়ের ওপর দিয়ে যান তিনি।
পলাশ সাহার গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জে। তার মৃত্যু নিয়ে জনমনে প্রশ্নের পাশাপাশি পারিবারিক টানাপড়েন এখন আলোচনার কেন্দ্রে।
ভোরের আকাশ//হ.র