গাইবান্ধা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৫ মে ২০২৫ ০১:৩৮ পিএম
বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতাকে ছুরিকাঘাতের ঘটনায় ছাত্রলীগ কর্মী গ্রেপ্তার
গাইবান্ধায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন নেতার ওপর হামলার পর ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যাওয়া নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের কর্মী ফেরদৌস আহমেদ নেহালকে (২৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার (১৪ মে) সন্ধ্যায় গাইবান্ধা সরকারি কলেজের গেটের সামন থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত ফেরদৌস আহমেদ নেহাল সাঘাটা উপজেলার হাট ভরতখালী গ্রামের নুরুল ইসলাম ছেলে। তার চাচা মোশাররফ হোসেন সুইট ভরতখালি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি। গাইবান্ধা সরকারী কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করা নেহাল ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় বলে জানা গেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে গাইবান্ধা সদর থানার ওসি শাহীনুর ইসলাম তালুকদার বলেন, গোপন খবরে ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ফেরদৌস আহমেদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের ওপর হামলার ঘটনায় সদর থানায় দায়ের হওয়ার মামলার অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে বৃহস্পতিবার সকালে আদালতে সোপর্দ করা হবে।
এর আগে, এ মামলার এজাহার নামীয় আসামি সুমন, কিরণ ও নাজমুল নামের তিনজনকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গাইবান্ধা জেলা যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম ভোরের আকাশ বলেন, ওইদিন হামলাকারীদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন নেহাল। তার হাতে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে আমাদের গুরুতর জখম করে। ছুরিকাঘাতে তার পেটের একটু উপর থেকে প্রায় ৫০টির মতো সেলাই পড়েছে। ঘটনার আড়াই মাস পড়ে পুলিশ নেহালকে গ্রেফতার করেছে। নেহাল নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের রাজনীতে সক্রিয়। জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে গাইবান্ধা ও বগুড়ায় ছাত্র-জনতার ওপর হামলায় অংশ নেয়া ছাড়াও নানা অপতৎপরতায় সক্রিয় ছিলেন। দ্রুত হামলার ঘটনায় জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্ত শাস্তির দাবি জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত ৯টার দিকে গাইবান্ধা শহরের স্বাধীনতা প্রাঙ্গণ মাঠে মাসব্যাপী আয়োজিত বাণিজ্য মেলার শেষ দিন ঘুরতে যান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা কমিটির নেতা শরিফুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান এবং শেফাউর রহমান। এ সময় একটি দোকানে এক নারীকে হেনস্তা করা হচ্ছিল। এতে শরিফুল ইসলামসহ ছাত্রনেতারা বাঁধা দেন। একপর্যায়ে হামলাকারীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গাইবান্ধা জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান এবং যুগ্ম সদস্যসচিব শেফাউর রহমান আহত হন। পরে তাঁদের উদ্ধার করে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় গাইবান্ধা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম সদস্যসচিব মো. আসাদুজ্জামান বাদী হয়ে রাতেই সদর থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় আসামির হিসেবে ৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ৯ থেকে ১০ জনকে।
এদিকে, এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদসহ হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ফুঁসে উঠেন ছাত্রনেতারা। দ্রুত হামলাকারীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্ত শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ, মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়। একই সঙ্গে হামলার ঘটনার সময় সদর থানার ওসিসহ পুলিশের নীরব ভূমিকায় প্রতিবাদ জানিয়ে তাদের শাস্তির দাবি জানানো হয়।
ভোরের আকাশ/এসএইচ