নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৯ জুলাই ২০২৫ ০৪:০৮ পিএম
ময়মনসিংহে `সড়ক ব্লক' করল শিক্ষার্থীরা, যানজটে ভোগান্তি
ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (বিআইটি) গঠনের এক দফা দাবিতে ব্লকেড কর্মসূচি পালন করছে। এতে ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ-জামালপুর, ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কের নগরীর রহমতপুর বাইপাস মোড় এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। পুলিশ এসে শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরাতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
বুধবার (৯ জুন) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে কলেজের সামনে রহমতপুর বাইপাস মোড়ে সড়কে অবস্থান নেয় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এসময় সড়ক বেরিকেট দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে সবধরনের যানবাহন এই এলাকা পর্যন্ত এসে থেমে যায়। ধীরে ধীরে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজটের।
এদিকে আন্দোলন চলাকালীন সময় গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টিপাত শুরু হয়। তবুও শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চলমান রাখে। দাবি বাস্তবায়নে নানা শ্লোগান দেওয়া হয়।
আলম এন্টারপ্রাইজ নামের বাসের ভেতরে বসে ছিলেন আব্দুল হাই নামের একজন যাত্রী। তিনি বলেন, দীর্ঘক্ষণ যাবত বাস বন্ধ অবস্থায় রয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। ধীরে ধীরে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ভোগান্তির কথা চিন্তা করে সড়ক থেকে শিক্ষার্থীদের সরে যাওয়া প্রয়োজন।
ট্রাকচালক নজরুল মিয়া বলেন, সবাই দাবি আদায়ে সড়ককে বেছে নেয়। এতে যে সবাই ভোগান্তিতে পড়েন, তা কেউ চিন্তা করে না। শিক্ষার্থীদের দাবি যুক্তিসঙ্গত হলে মেনে নেওয়া প্রয়োজন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী আল আমিন বলেন, বিআইটি গঠনের দাবিতে দুই মাস ধরে আন্দোলন করে এলেও ওপর মহল আমাদের দাবিকে কর্ণপাত করছে না। আমরা যুক্তিসঙ্গত দাবি আদায়ে আন্দোলন করছি। সড়কে আন্দোলনের কারণে যাত্রীরা সাময়িক ভোগান্তিতে পড়ায় আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। দ্রুত দাবি বাস্তবায়ন করা হোক, এটাই আমাদের চাওয়া।
ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম জানান , শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে।অবরোধ সরানো হয়েছে। যান চলাচল শুরু হয়েছে।
এর আগে গত ১৮ মে ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশল (সিএসই) বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ধ্রুবজিৎ কর্মকার (২৩) চলমান শিক্ষাব্যবস্থাকে দায়ী করে আত্মহত্যা করেন। এ ঘটনার পর ২০ মে থেকে সব শিক্ষার্থী একাডেমিক কম্বাইন্ড সিস্টেম বাতিলের দাবিতে ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছেন। ঈদের পর ১৪ জুন প্রতিষ্ঠান খোলা হলেও পাঠ ও পরীক্ষা কার্যক্রমে অংশ নেননি শিক্ষার্থীরা। ২৪ জুন থেকে প্রশাসনিক ভবনে তালা দেওয়ায় বন্ধ রয়েছে প্রশাসনকি কার্যক্রমও। শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে না নেওয়ায় ৫ জুলাই থেকে বিআইটি গঠনের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টায় কলেজের শহীদ মিনার এলাকা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা।
ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ সংস্কার আন্দোলনের অংশ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি কাঠামো বাতিল করে বিআইটির আদলে স্বতন্ত্রতা নিশ্চিত করার এক দফা দাবি জানিয়ে শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেয়। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে প্রযুক্তি ইউনিটের মাধ্যমে আয়োজিত ভর্তি পরীক্ষা বাতিল করার দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।
ভোরের আকাশ/আজাসা