টুংটাং শব্দে ঈদের প্রস্তুতি
নওগাঁ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৪ জুন ২০২৫ ০২:০৭ পিএম
কামারশালায় ১৫ বছর ধরে ব্যস্ত দুই ভাই
ঈদুল আযহা ঘনিয়ে আসছে। আর এই ঈদ মানেই কোরবানির পশু জবাইয়ের প্রস্তুতি। সেই প্রস্তুতির অন্যতম অনুষঙ্গ হলো ধারালো ছুরি, দা, চাপাতি। আর এসব সরঞ্জাম তৈরিতে এখন দম ফেলার ফুরসত নেই কামারদের।
নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার ছাতড়া বাজারে এমনই এক কামারশালায় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত টুংটাং শব্দে কাজ করছেন দুই ভাই- আস্তিক (৬০) ও দিনেষ (৫২), পেশায় কামার। ১৫ বছর ধরে এই কাজের সঙ্গে জড়িয়ে আছেন তাঁরা। তাঁদের বাড়ি পাশ্ববর্তী কোদালিশহর গ্রামে হলেও দোকান চালান ছাতড়া বাজারে।
আস্তিক বলেন, ঈদের সময়টা আমাদের সবচেয়ে ব্যস্ত মৌসুম। সকাল বেলা দোকান খুলি, তারপর আর ঘড়ির দিকে তাকানোর সুযোগ হয় না। যন্ত্রপাতি বানানো, পুরনো দা-বঁটি শান দেওয়া—সবই একসঙ্গে চলতে থাকে।
তাঁদের কামারশালায় এখন দিন-রাত এক হয়ে গেছে। দোকানে ঢুকলেই দেখা যাবে, এক পাশে কয়লার আগুনে লোহা গরম হচ্ছে, অন্য পাশে হাতুড়ির আঘাতে তৈরি হচ্ছে নতুন ছুরি।
দিনেষ জানান, সারা বছরের মূল রোজগার এই ঈদের মৌসুমেই হয়। অনেকে নতুন ছুরি কিনতে আসেন, অনেকে আবার আগের জিনিসগুলো ধার করিয়ে নিয়ে যান। দিনে ৩০ থেকে ৫০টি পর্যন্ত অর্ডার সামলাতে হয়।
এই কামারশালার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে আশপাশের কয়েকটি গ্রামেও। সন্তোষপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মোশাররফ হোসেন বলেন, প্রতি বছর ঈদের আগে এখানেই আসি দা-বঁটি কিনতে। ওদের তৈরি জিনিসপাতি অনেক টেকসই হয়, ধারও ভালো থাকে।
একই কথা বলেন স্থানীয় দোকানি লিয়াকত হোসেনও। তিনি বলেন, ছাতড়ার এই দুই ভাই কামারের কাজ করেন অনেক নিষ্ঠা নিয়ে। তাই এলাকার অনেকেই তাদের ওপর নির্ভর করেন।
কামারশালায় টুংটাং শব্দে যেন ঈদের আগমন ধ্বনিত হচ্ছে। আর সেই শব্দের মাঝেই লুকিয়ে আছে আস্তিক ও দিনেষের পরিশ্রম, ধৈর্য ও জীবন সংগ্রামের গল্প।
ভোরের আকাশ/জাআ