সংগৃহীত ছবি
জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান ও ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতা সাবেক মন্ত্রী মোস্তফা জামাল হায়দার বলেছেন, পিআর পদ্ধতি বাংলার মাটিতে হতে দেব না। তিনি বলেছেন, সংস্কারের নামে নানা অজুহাতে একটি সূক্ষ্ম কারচুপি চলছে। গণতন্ত্রের সংগ্রামকে বিপথে নিতে একটি চক্রান্ত হচ্ছে। কিন্তু দেশের ছাত্র-জনতা যতদিন বুকের রক্তে শক্তি সঞ্চার করে রাখবে, এই অপচেষ্টা কোনোদিনই সফল হবে না।
শনিবার (১২ জুলাই) সকালে পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলা জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে সমকালীন রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও আসন্ন নির্বাচনী প্রেক্ষাপট নিয়ে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে সংসদ সদস্য নির্ধারণের একটি বিকল্প মত এসেছে। আমি সেটিকে একেবারে বাতিল করছি না, কিন্তু এটি একটি অপরিকল্পিত ও অপরীক্ষিত প্রস্তাব। এমন একটি পদ্ধতি বাস্তবায়নের জন্য সময়, বিচার-বিশ্লেষণ এবং পর্যাপ্ত প্রস্তুতি প্রয়োজন। আমরা চাই দেশের প্রচলিত, জনগণ-পরীক্ষিত নির্বাচন পদ্ধতির মাধ্যমেই আসন্ন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। সেই নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সংসদই পরবর্তী নির্বাচন পদ্ধতি নির্ধারণ করবে।
তিনি বলেন, পিআর পদ্ধতি পৃথিবীর কিছু দেশে আছে এ কথা অস্বীকার করা যায় না। যে দেশগুলিতে আছে সেই দেশগুলো বাংলাদেশ অথবা নেপালের মত নয়, নেপালে এই পিআর পদ্ধতি চালু করতে গিয়ে বার বার ব্যর্থ হয়েছে। একটা অস্থায়ী সরকার, ভঙ্গুর সরকার, অস্থিতিশীল সরকার নেপালে নেমে এসেছে। বাংলার মাটিতে আমরা এটা হতে দিব না। আমরা বলতে চাই এই পদ্ধতিকে যদি আগামীতে গ্রহণ করতে হয় পরবর্তী পার্লামেন্ট তা দেখবে। আজকে তাড়াহুড়া করে এই সমস্যা সংকট নিয়ে আমরা এক্সপেরিমেন্টের দিকে ধাবিত হতে পারি না। আগামী নির্বাচনে আমরা সংগ্রামের মাঠে যেমন ঐক্যবদ্ধ ছিলাম তেমন আগামীতেও ঐক্যবদ্ধ থাকব। আগামী নির্বাচনে বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা ১২ দলীয় জোট এবং সমস্ত গণতান্ত্রিক ও দেশপ্রেমিক দল অংশগ্রহণ করবে।
নাজিরপুর উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি খালেকুজ্জামান মাষ্টারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক আরিফুর রহমান টুবুলের সঞ্চালনায় এ আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য দেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য এলিজা জামান, লেবার পার্টির মহাসচিব আমিনুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সদস্য আবুল কালাম আজাদ আকন, জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ সাইদুল ইসলাম কিসমত, উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মিজানুর রহমান দুলাল, উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক প্রমূখ।
ভোরের আকাশ/এসএইচ
সংশ্লিষ্ট
মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলায় এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ না পাওয়ায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে তানহা আক্তার (১৬) নামে এক শিক্ষার্থী। তানহা নালী বড়রিয়া কৃষ্ণচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিল। তার প্রাপ্ত জিপিএ ছিল ৪.৮৫। নিহত শিক্ষার্থীর বাবা মো. মোনতাজ আলী ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। শনিবার (১২ জুলাই) বিকেলে উপজেলার আরুয়া ইউনিয়নের ধুতুরাবাড়ি গ্রামে নিজ বাড়ির কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।পরিবার সূত্রে জানা গেছে, তানহা সব সময় পড়াশোনায় ভালো ছিল এবং প্রতি বছর ক্লাসে প্রথম হতো। এবার বিদ্যালয় থেকে ১৩ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। নিজের কাঙ্ক্ষিত ফল না পেয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে তানহা। ফল প্রকাশের আগে সে ঢাকায় বড় বোনের বাসায় ছিল। ফল জানার পর গতকাল শুক্রবার বাবা তাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। এরপর থেকেই তানহা মনমরা হয়ে ছিল বলে জানান পরিবারের সদস্যরা।শনিবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে তানহা তার নিজ কক্ষে সবার অগোচরে গলায় ফাঁস দেয়। পরিবারের লোকজন বিষয়টি টের পেয়ে তাকে উদ্ধার করে। পরে শিবালয় থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে।শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে মানসিক চাপে তানহা আত্মহত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। পুলিশ আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করছে।’তানহার মৃত্যুর খবরে সহপাঠী, শিক্ষক ও এলাকাবাসীর মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। খবর ছড়িয়ে পড়লে ধুতুরাবাড়ি গ্রামের বাড়িতে শত শত মানুষ ভিড় করেন তার মরদেহ দেখতে। সবাই গভীর শোক প্রকাশ করেন এবং তার অকাল প্রয়াণে হতবাক প্রতিক্রিয়া জানান। পুরো এলাকায় নেমে আসে নীরবতা ও স্তব্ধতা।ভোরের আকাশ/এসএইচ
পিরোজপুরের নাজিরপুরে রাজলক্ষী কলেজ মাঠে ৪ দলীয় ফুটবল টূর্নামেন্টে ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়েছে।শনিবার (১২ জুলাই) বিকালে নাজিরপুর রাজলক্ষী কলেজ মাঠে বাকসী ফুটবল একাদশ কে ৫-৬ গোলে পরাজিত করে খেজুরতলা ফুটবল ক্লাব চ্যাম্পিয়ান হওয়ার গৌরব অর্জন করে। উভয় দলে আক্রমন ও পাল্টা আক্রমনের মধ্য দিয়ে খেলা শুরু হয়। প্রথমার্ধের ১০ মিনিটে গোলে এগিয়ে যায় খেজুরতলা ফুটবল একাদশ ।এর পর খেলার ১৫ মিনিটে পেনাল্টি পায় বাকসী ফুটবল একাদশ গোল করে ১-১ খেলায় সমতা আনে। এরপর দুই দলের পাল্টা আক্রমণে গোল দারায় ৫-৫। খেলার শেষ ৫ মিনিটে গোল করে খেজুর তলা ফুটবল একাদশ ০৫-০৬ গোলের ব্যবধানে জয় ছিনিয়ে নেয় খেজুর তলা ফুটবল একাদশ।খেলা শেষে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন নাজিরপুর উপজেলা আরাফাত রহমান কোকো, ক্রীড়া সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ মেহেদী হাসান রুবেল, প্রাইজ মানি দলের অধিনায়ক মোঃ লিটনের হাতে তুলে দেন। অপরদিকে রানার্স আপ দল অধিনায়ক মোঃ সাইফুল মিনার হাতে পুরস্কার তুলে দেন ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব মোঃ জহিরুল ইসলাম জহির।আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা ছাত্রদলের সাবেক সদস্য মোঃ সোহেল শেখ, ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাবুল শেখ, রাজলক্ষী কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি সৌরভ, বিএনপি নেতা আবু সাঈদ মিনা প্রমুখ।ভোরের আকাশ/এসএইচ
জয়পুরহাট জেলার সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে গত দুই দশকে ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) এর হাতে প্রাণ হারিয়েছেন কমপক্ষে ১০ জন নিরীহ বাংলাদেশি নাগরিক। আহত হয়েছেন আরও অনেকেই। এ নিয়ে সীমান্তজুড়ে আতঙ্ক ও শোকের ছায়া নেমে থাকলেও আজও এসব হত্যাকাণ্ডের কোনো বিচার হয়নি। নিহতদের পরিবারগুলোর দাবি-বিনা উসকানিতে, বিনা অপরাধে তাদের প্রিয়জনদের হত্যা করা হয়েছে। তারা রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ না নেওয়ার অভিযোগ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।একাধিক পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রিয়জন হারিয়ে অনেকে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। কেউ হয়েছেন পাগলপ্রায়, কেউবা সন্তানদের নিয়ে দিশেহারা হয়ে দিন কাটাচ্ছেন। সীমান্তে একতরফা এই হত্যাযজ্ঞ থামানো ও বিচার নিশ্চিতের দাবি জানিয়ে আসছেন ভুক্তভোগীরা।হাটখোলা গ্রামের জনির বাবা আনোয়ার হোসেন কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমার ছেলে বেঁচে থাকলে কোরআনের হাফেজ হতো।’জনির মা বিলকিস বেগম আক্ষেপ করে বলেন, ‘কোনো বিচার পাইনি, মামলা হয়নি!’ নুন্দইল গ্রামের নিহত শামীমের স্ত্রী পরিবানু বেগম বলেন, ‘আমি একটা সন্তানকে লালন- পালন করতে না পেরে অন্যকে দিয়ে দিয়েছি!’একই গ্রামের নিহত জামিরুল মণ্ডলের বড় ভাই খাইরুল ইসলাম জানান, ‘আমার ভাই খুব ভালো মানুষ ছিল। আমরা আজও বুঝে উঠতে পারিনি কেনো তাকে হত্যা করা হলো!’একই গ্রামের উলফন বেগম, যিনি তার একমাত্র ছেলে রাজুকে হারিয়েছেন, কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমাকে বিচার করে দেন।’ হাটখোলার নিহত জনির চাচা আতোয়ারের অভিযোগ আরও ভয়াবহ। তার ভাষ্য, ‘বিএসএফ আমার ভাতিজার হাত-পা কেটে, চোখ উপড়ে লাশ পাঠিয়েছে!’উচনা সোনাতলার নিহত মুনসুর আলীর মা বলেন, ‘আমার ছেলেকে গুলি করে মেরে পাটের জাগের নিচে লুকিয়ে রেখেছে!’ আর তার বাবা আব্দুল বাসেত বলেন, ‘আমরাই কেনো শুধু মরিএ তারা তো মরে না!’জাতীয় নাগরিক পার্টির জয়পুরহাট জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক সংগঠক ওমর আলী বাবু বলেন, ‘জয়পুরহাট সীমান্তে বিএসএফ যেভাবে নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছে, তা মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক আইনের চরম লঙ্ঘন। বিগত সরকার এ বিষয়ে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি। বর্তমান সরকারকে দ্রুত তদন্ত করে এসব হত্যার বিচার নিশ্চিত করতে হবে।’জয়পুরহাট জর্জ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট শাহানুর আলম শাহীন বলেন, ‘সীমান্ত হত্যা দু’দেশের সীমান্ত রক্ষীদের ফ্ল্যাগ মিটিংয়ের মাধ্যমে নিষ্পত্তি না হলে আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। এটি আন্তর্জাতিক অপরাধের পর্যায়ে পড়ে।’সীমান্তের এই নিষ্ঠুর বাস্তবতা থামাতে হলে প্রয়োজন আন্তঃরাষ্ট্রীয় আন্তরিকতা, কার্যকরী কূটনীতি ও মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা। নয়তো সীমান্তের এ কান্না থামার নয় বরং রক্তের হোলি খেলা চলতেই থাকবে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে মোহাম্মদ সোহাগ নামের এক ব্যবসায়ীকে পাথর দিয়ে নির্মমভাবে হত্যার প্রতিবাদে কুড়িগ্রামে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ।শনিবার (১২ জুলাই) বিকেলে ইসলামী যুব আন্দোলনের উদ্যোগে একটি বিক্ষোভ মিছিলটি কুড়িগ্রামের ঘোষপাড়া থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ জেলা কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়।বক্তারা বলেন, মিটফোর্ড এলাকায় প্রকাশ্যে একজন ব্যবসায়ীকে পাথর দিয়ে হত্যা করার ঘটনা প্রমাণ করে, দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি চরমভাবে অবনতির দিকে যাচ্ছে। তারা অবিলম্বে হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের দাবি জানান এবং জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা সোহাগ হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানান এবং দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।সাবেশে বক্তব্য রাখেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ কুড়িগ্রাম জেলা শাখার সভাপতি মুহাম্মাদ কাজীউল ইসলাম ও সহ-সভাপতি সাইফ মুহাম্মাদ শাহ-আলম, ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ কুড়িগ্রাম জেলা শাখার সভাপতি আ.ন.ম আশিকুর রহমান, সহ-সভাপতি মুহাম্মাদ শরীফুজ্জামান সিদ্দিকী এবং সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কুড়িগ্রাম জেলা শাখার সভাপতি আলহাজ্ব শাহজাহান মিয়া, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মাওলানা হাফিজুর রহমান ও সহ-সভাপতি এবং কুড়িগ্রাম-২ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ নুর বখত মিঞা।ভোরের আকাশ/এসএইচ