মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০২ জুন ২০২৫ ০৬:০১ পিএম
মৌলভীবাজারে বাড়ছে নদীর পানি, বন্যার আশঙ্কা
অতিভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে মৌলভীবাজারে আগাম বন্যা দেখা দিয়েছে। এছাড়া কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নের শিখড়িয়া এলাকায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ)'র বাধায় মনু নদীর বন্যা প্রতিরক্ষা বাধের কাজ আটকে ছিলো। সেই পুরাতন ভাঙন দিয়ে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেছে।
জেলার ৭ উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন এপর্যন্ত আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখানকার নদনদীও বিপজ্জনক রূপ নিয়েছে। ফুঁসে উঠেছে হাকালুকি হাওরসহ মনু সোনাই ফানাই জুড়ী কন্টিনালা নদী।
মৌলভীবাজার-শমসেরনগর সড়কের শিমুলতলা মাতারকাপন এলাকা তলিয়ে যাওয়ায় যানবাহন চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। এই সড়কে মাতারকাপন এলাকায় সড়কে কোমর পর্যন্ত পানি।
এদিকে বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ায় মনু নদীর পানি মনু রেলওয়ে ব্রিজ পয়েন্টে কমছে। তবে মৌলভীবাজার শহর পয়েন্টে এখনো বাড়ছে।
সোমবার বিকেল ৩ টায় (এ রিপোর্ট লেখার সময়) মনু নদীর পানি মৌলভীবাজার শহর পয়েন্টে বিপদসীমার ৭৩ সেন্টিমিটার ও মনু রেলওয়ে ব্রিজ পয়েন্ট বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিলো। এছাড়া জুড়ী নদীর পানি বিপদ সীমার ১শ ৬৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সড়ক বিভাগ ব্রিজের সংযোগ সড়কের শালিকা এলাকায় একটি কালভার্টের জন্য রাস্তা কেটেছিলো। মনু নদীর পানি বেড়ে তা ভেঙে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছিলো। স্থানীয়দের নিয়ে ঠিকাদারের সহযোগিতায় তা মেরামত করা হয়েছে।
মৌলভীবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তাজউদ্দিন জানান, অতি ভারী বর্ষণে আমাদের ১২টি ইউনিয়নের মধ্যে ১০টি ইউনিয়ন আংশিক আক্রান্ত হয়েছে। আমরা ইতিমধ্যে এসব ইউনিয়নে ১০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দিয়েছি। আরও যথেষ্ট পরিমাণ খাদ্যসামগ্রী মজুদ আছে।
এছাড়া সোমবার রাতে মৌলভীবাজার পৌরসভার বরহাট এলাকায় বন্যার্তদের মাঝে রান্না করা খাবার বিতরণ করেন মৌলভীবাজার জেলা যুবদলের পক্ষে সভাপতি জাকির হোসেন উজ্জ্বল
কুলাউড়া পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, কুলাউড়া পৌরসভার পূর্বদিকে গোগালীর বাঁধ ভেঙে পৌরসভার ৬ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের জয়পাশ উত্তর ও দক্ষিণ এবং দানাপুর গ্রাম প্লাবিত হয়। আমরা জয়পাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি আশ্রয়কেন্দ্র খুলে দিলে সেখানে ৬টি পরিবার আশ্রয় নেয়। পরে ওই ৬ পরিবারসহ ২০টি বন্যার্ত পরিবারের মাঝে ১৪ কেজি করে চাল ডাল আলু ও শুকনো খাবারসহ ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়।
বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার বলেন, বড়লেখা শহরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার পর রবিবার রাতে ২৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়। তবে কোনো পরিবার এখনো এসব আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেনি। আমরা এ পর্যন্ত ১৪৪ প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ করেছি।
ভোরের আকাশ/জাআ