কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০২:৪৭ পিএম
ছবি: ভোরের আকাশ
দুনিয়ার আলো দেখা ও পড়াশোনা সবকিছুই ভালোভাবে চলছিলো। হঠাৎ চোখে দেখা দেয় সমস্যা৷ এর পর থেকে দু'বছর ধরে চোখ দিয়ে কিছুই দেখতে পারছেনা শিক্ষার্থী মর্জিনা আক্তার । এর মধ্যে পড়াশোনা অনিশ্চিত হয়ে বন্ধ হয়ে যায়। থমকে দাঁড়ায় লেখাপড়ার স্বপ্ন।
বর্তমানে অর্থের অভাবে চোখের চিকিৎসা করাতে পারছেনা পরিবার। ফলে নিদারুণ কষ্টে দিন কাটছে।
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার মধ্য পরুরা ৯ নং ওয়ার্ডের হতদরিদ্র মোঃ মস্তুফা মিয়ার মেয়ে মর্জিনা আক্তার (১৬)। স্থানীয় দাখিল মাদ্রাসায় নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলো সে৷ কিন্তু চোখে দেখা বন্ধ হবার সাথে সাথে থেমে যায় পড়াশোনার স্বপ্ন৷ একসময় দুরন্ত মেয়েটি এখন ঘরবন্দী সময় কাটছে।
সহপাঠীদের নিয়ে পড়াশোনা এখন তার জন্য স্বপ্নের মতো ৷ অনিশ্চিত এক ভবিষ্যতের মুখোমুখি হয়ে আছে৷
সরকারি-বেসরকারি ও দানশীল মানুষের সহায়তায় ভালো চিকিৎসা পেলে দুনিয়ার আলো দেখতে পাবে তাদের সন্তান এমনটাই বলছে পরিবার ও এলাকাবাসী।
সরেজমিনে গিয়ে পরিবার ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, স্থানীয় একটি দাখিল মাদ্রাসায় নবম শ্রেণিতে লেখাপড়া করতো মর্জিনা৷ পড়াশোনার প্রতি তার মনযোগ ছিলো সবসময়ই৷ সবসময়ই স্বপ্ন দেখতো লেখাপড়া শেষ করে ভালো কিছু করে পরিবারের স্বপ্ন পূরণের৷ কিন্তু হঠাৎ তার দেখা দেয় সমস্যা৷ এর পর থেকে দু'বছর পার হয়েছে এখনো চোখে কিছুই দেখতে পারছেনা৷ আট সদস্যের পরিবার নিয়ে পিতা মস্তুফা মিয়ার পক্ষে ভরণপোষণ কঠিন হয়ে যাচ্ছে৷ এর মধ্যে পাঁচ ছেলে এক মেয়ে।
দারিদ্র্যতার কষাঘাতে জর্জরিত তার পরিবার৷ গ্রামে ঘুরে ঘুরে হকারি করে যা কিছু অর্জন করেন তা দিয়ে খাবার জোগান দেওয়া কষ্টসাধ্য তার পক্ষে৷ সহায় সম্বল যা ছিলো তা সহ প্রতিবেশীদের থেকে ধার করে অর্থ নিয়ে মেয়ের চোখের চিকিৎসায় খরচ করেছেন৷ কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় তা অপ্রতুল। ফলে বর্তমানে চিকিৎসা বন্ধ আছে।
পিতা মোঃ মস্তুফা মিয়া বলেন, যা সম্বল ছিলো সবকিছুই মেয়েটার পিছনে শেষ করছি৷ লেখাপড়ার ইচ্ছে ছিলো কিন্তু চোখের কারণে সব শেষ। আল্লাহ ছাড়া আর কে আমাদের দেখবে?। আমরা নিরুপায় আছি তাকে নিয়ে৷
মা ফাতেমা বেগম বলেন, কেউ যদি আগাইয়া আসতো আমাদের জন্য রহম হইতো৷ এমন ভালো একটা মেয়ের হঠাৎ কি হলো চোখে এটাই দুঃখ আমাদের। সঠিক চিকিৎসা পেলে মেয়েটা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতো।
উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মোঃ আবুল খায়ের বলেন, খোঁজ নিয়ে তাকে সরকারি সহযোগিতার বিষয়ে উদ্যোগ নিবো৷
কটিয়াদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম বলেন, 'অর্থের অভাবে চিকিৎসা বন্ধ হয়ে একজন শিক্ষার্থীর জীবন থেমে থাকাটা দুঃখজনক। আমি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ শীঘ্রই গ্রহণ করবো। এছাড়াও দানশীল মানুষ এই শিক্ষার্থীর জন্য এগিয়ে আসলে কাজটি সহজ হবে৷"
ভোরের আকাশ/মো.আ.