× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের মনোরম স্পট

এক যুগেও নির্মিত হয়নি কুয়াকাটার ‘ওয়াচ টাওয়ার’

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৪ জুন ২০২৫ ০৪:৪৭ পিএম

এক যুগেও নির্মিত হয়নি কুয়াকাটার ‘ওয়াচ টাওয়ার’

এক যুগেও নির্মিত হয়নি কুয়াকাটার ‘ওয়াচ টাওয়ার’

কুয়াকাটায় সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের দৃশ্য অবলোকনসহ পর্যটকদের বহুমুখী সুবিধার জন্য ‘ওয়াচ টাওয়ার’ নির্মাণ কাজ এক যুগ ধরে থমকে আছে।
২০১৩ সাল থেকে ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ পরিকল্পনা শুরু হয়ে লতাচাপলী মৌজার ২০ একর জমি চিহ্নিত করা হয়। এর মধ্যে খাস জমি দুই একর ছাড়া বাকি ১৮ একর জমি অধিগ্রহণের মূল্যসহ ক্ষতিপূরন নিয়ে প্রায় ২৯ কোটি টাকা ব্যয় নির্ধারণ করা হয়। নির্দিষ্ট চিহ্নিত জমি পর্যটন সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে সরকার কর্র্তৃক গেজেটভুক্ত করা হয়েছে।

২০১৬ সালে এ সংক্রান্ত কমিটি সরেজমিনে কুয়াকাটা পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দাখিল করেন। ২০১৮ সালে চিহ্নিত জমির সংরক্ষণ করতে প্রত্যয়ন পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে। এমনকি  ২০২১ সালে চিহ্নিত জমির হাল তফশিল বিবরণ পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে এর কোন অগ্রগতি এখন আর নেই। ফলে ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ পরিকল্পনা ঝুলে আছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ‘কন্সট্রাকশন অফ ওয়াচ টাওয়ার এ্যাট কুয়াকাটা’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় কুয়াকাটা ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণের লক্ষ্যে কলাপাড়া উপজেলার ৩৪ নং লতাচাপলী মৌজার (মম্বিপাড়ায়) এক নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত এস এ দাগ নম্বর ৭০৪২ ও ৭০৪৫ দাগের দুই একর জমিসহ সংলগ্ন ৭০৪১, ৭০৪৩, ৭০৪৪, ৭০৪৬, ৭০৪৭, ৭০৪৮ ও ৭০৪৯ দাগের ২০ একর জমি ২০১৩ সনের ১০ জানুয়ারি সরকার কর্তৃক বাংলাদেশ গেজেটে প্রকাশিত পর্যটন সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

এর পরও একই বছরের ৭ জুলাই পটুয়াখালীর তৎকালীন জেলা প্রশাসক অমিতাভ সরকার আরও চারটি দাগের জমি পর্যটন সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে অন্তর্ভুক্তির জন্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবরে এক চিঠিতে অনুরোধ করেন। এমনকি খাস দুই একর জমি ছাড়া বাকি ১৮ একর জমি অধিগ্রহণ করতে ওই সময়ে জমির বাজারমূল্য নির্ধারণ করা হয় ১৮ কেটি ৮৮ লাখ ৬৯ হাজার ২১৬ টাকা। এছাড়া বাজার মূল্যের অতিরিক্তমূল্য বাবদ আরও অর্ধেক নিয়ে মোট ২৮ কোটি ৮৯ লাখ ৬৯ হাজার ৯০০ টাকা পরিশোধ করার বিধান রয়েছে মর্মে এক চিঠিতে বলা হয়েছে।

পটুয়াখালী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভূমি হুকুম দখল অফিসার মো. আসিফুর রহমান ২০১৪ সালের ১০ আগস্ট পর্যটন কর্পোরেশনের পরিচালক (পরিকল্পনা) বরাবরে প্রেরিত এক চিঠিতে এই বিষয়গুলো পরিষ্কার ভাবে উল্লেখ করেন।

পরবর্তীতে ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই তৎকালীন জেলা প্রশাসক ড. মো. মাছুমুর রহমান বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যানের কাছে এক চিঠিতে কুয়াকাটায় ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণের জন্য চিহ্নিত জমির সংরক্ষণসহ  প্রত্যয়নপত্র প্রেরণ করেন। এমনকি ২০২১ সালে প্রস্তাবিত চিহ্নিত এই জমি সাবেক ও হাল তফসিল বিবরণী পর্যন্ত উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করা হয়। তারপরও ওয়অচ টাওয়ার নির্মাণ কাজ থমকে গেছে।
কুয়াকাটায় ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ প্রকল্পের স্থান নির্বাচন সংক্রান্ত কমিটির দেওয়া প্রতিবেদন সুত্রে জানা গেছে, ‘কনস্ট্রাকশন অব ওয়াচ টাওয়ার এ্যাট কুয়াকাটা’ শীর্ষক প্রকল্পের জন্য কলাপাড়া উপজেলার লতাচাপলী মৌজায় ২০ একর জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। যেখানে দৃষ্টিনন্দন ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ হবে।

২০১৬ সালের প্রথম দিকে এ লক্ষ্যে পাঁচ সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়। বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন এর পরিচালক (অর্থ ও প্রশাসন) ঢাকা এ কমিটির আহবায়ক ছিলেন। সদস্য ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রনালয়ের প্রতিনিধি, পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক, বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান এর প্রতিনিধি ও বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন এর ব্যবস্থাপক (পরিকল্পনা)।

এ কমিটি ২০১৬ সালের ৩ মে পটুয়াখালী সার্কিট হাউসে এ সংক্রান্ত এক সভা করেন। কমিটি তখন (৫-৬ মে) কুয়াকাটায় ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণকল্পে মম্বিপাড়ায় প্রস্তাবিত স্থান পরিদর্শন করেন। ওয়াচ-টাওয়ার নির্মাণের চিহ্নিত ১৮ একর জমি ছাড়াও প্রস্তাবিত ওয়াচ টাওয়ার স্পট থেকে সৈকতে যাওয়ার জন্য রাস্তা নির্মাণের জন্য পাঁচ একর জমি চিহ্নিত করেন। ওই স্পট থেকে সূর্যোদয়-সূর্যাস্ত দেখতে কোন প্রতিবন্ধকতা না হয় এ জন্য এ স্থানের পূর্ব পশ্চিম দিকে কোন ধরনের হাই রাইজ স্থাপনা নির্মাণ পরিহার করার পদক্ষেপ গ্রহণের সুপারিশ করা হয়। 

এ সংক্রান্ত একটি ডিজাইন উপস্থাপন করা হয়। যেখানে বলা হয়েছে, ১৮ একর জমির ওপরে নান্দনিক স্থাপত্য বৈশিষ্টপূর্ণ ১৭৫ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট কুয়াকাটা ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ করার মতামত ব্যক্ত করেন কমিটির সদস্যগণ। 

বহুমুখী ব্যবহার উপযোগী ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ ছাড়াও বাকি জমিতে ১৫ টি হানিমুন ও ইকোকটেজ, ১০০ আসন বিশিষ্ট রেস্তরাঁ, ৫০০ আসন বিশিষ্ট কনভেনশন হল, ১০০ আসনের মিনি কনফারেন্স হল, ২৫ আসনের কফি সপ, সুইমিং পুল, হেলথক্লাব, জিম, বিউটি সেলুন, মেডিটেশন সেন্টার, ট্যুরিস্ট মার্কেট, সি এক্যুরিয়াম, শিশুদের জন্য বিভিন্ন রাইড, নভোথিয়েটার নির্মাণ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া বেড়িবাঁধ হতে বিচ পর্যন্ত  নির্মিতব্য রাস্তার ন্যুনতম একটি স্থানে নান্দনিক বৈশিষ্টপূর্ন একটি ঝুলন্ত সেতু নির্মাণ, ছাতাসহ বিভিন্ন স্পটে আইসিসি বেঞ্চ নির্মাণ. বিচ সন্নিকটে অস্থায়ী কাঠামোতে ফ্রেশ ওয়াটার শাওয়ার, চেঞ্জিং ক্লোসেট, টয়লেট ও লকার নির্মাণ। বিচ হতে সাগরের ন্যুনতম ১০০ ফুট দূরত্বে সাগরের মধ্যে স্থানীয় সামগ্রী  দ্বারা পিয়ার নির্মাণ।

এ ছাড়া প্রস্তাবিত টাওয়ারের ধাপে ধাপে সুবিধাজনক ফ্লোর -এ ড্রিংকস কর্ণার, কফি সপ, টয়লেট এবং ওয়াচ ডেক এ দুরবীন সুবিধা,  ওয়াইফাই টেলিযোগাযোগ সামগ্রী ও এর ছাদে লাইট হাউস স্থাপন পূর্বক বে-ওয়াচ কার্যক্রম চালু করার প্রস্তাবনা দেয় কমিটি। এ কমিটি বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ, ক্যালকুলেশন ও ফিল্ড ভিজিট করে বিভিন্ন ধরনের পর্যবেক্ষণ ও সুপারিশ করেন। 

কমিটি আরো অভিমত পোষণ করে যে, কেবল মোটেল বা ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ করে কুয়াকাটার পর্যটকদের আকর্ষণ করা যাবে না। এ ক্ষেত্রে আবাসিক ও ক্যাটারিং সুবিধাসহ কুয়াকাটা বৌদ্ধ মন্দির, মিশ্রিপাড়া বৌদ্ধ মন্দির, রাখাইন পল্লী, রাখাইন বিপণী বিতান, ডলফিন ও লেজার শো, ওয়াটার স্কিয়িং, গ্রির রিস্পাইট, নভোথিয়েটার, বে-পার্ক, বিচ গেইম সহযোগে প্যাকেজ ট্যুর পরিচালনার জন্য বিভিন্ন সুবিধা প্রবর্তনের মাধ্যমে ব্যতিক্রমধর্মী পর্যটন গন্তব্যে পরিণত করার সুপারিশ করা হয়। কিন্তু এতাকিছুর পরও ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ কাজ আজ পর্যন্ত শুরু হয়নি। কিংবা আদৌ কবে নাগাদ এটি হবে তাও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কুয়াকাটা বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য সচিব মো. রবিউল ইসলাম প্রতিবেদকে জানান কুয়াকাটায় ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ সংক্রান্ত বিষয়টি খোঁজ নিয়ে অগ্রগতি কোন পর্যায়ে আছে বলা যাবে।

ভোরের আকাশ/আজাসা

  • শেয়ার করুন-
 হার্ট ভালো রাখতে লাল রঙের যেসব খাবার খেতে হবে

হার্ট ভালো রাখতে লাল রঙের যেসব খাবার খেতে হবে

 চুলে অ্যালোভেরা ব্যবহার করেন? জেনে নিন কী উপকার হয়

চুলে অ্যালোভেরা ব্যবহার করেন? জেনে নিন কী উপকার হয়

 "নারীকেই কামনা-বাসনার বস্তু হিসেবে তুলে ধরা হয়" — মন্তব্য জয়া আহসানের

"নারীকেই কামনা-বাসনার বস্তু হিসেবে তুলে ধরা হয়" — মন্তব্য জয়া আহসানের

 বিপিএলে তামিমের খেলা নিয়ে অনিশ্চয়তা, সতর্ক করলেন ট্রেইনার ডালিম

বিপিএলে তামিমের খেলা নিয়ে অনিশ্চয়তা, সতর্ক করলেন ট্রেইনার ডালিম

 কারিনা-প্রিয়াঙ্কার চেয়ে সেরা: নিজের প্রশংসায় কী করলেন কঙ্গনা?

কারিনা-প্রিয়াঙ্কার চেয়ে সেরা: নিজের প্রশংসায় কী করলেন কঙ্গনা?

সংশ্লিষ্ট

গাইবান্ধায় ‘ইউথ ফর বাংলাদেশ’ আয়োজনে দুই দিনব্যাপী বৃক্ষরোপণ অভিযান

গাইবান্ধায় ‘ইউথ ফর বাংলাদেশ’ আয়োজনে দুই দিনব্যাপী বৃক্ষরোপণ অভিযান

কুড়িগ্রামে সাঁপুড়ের প্রাণ নেয়া সাপটিকে চিবিয়ে খেলো আরেক সাঁপুড়ে

কুড়িগ্রামে সাঁপুড়ের প্রাণ নেয়া সাপটিকে চিবিয়ে খেলো আরেক সাঁপুড়ে

গাজীপুর বিএনপির প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত

গাজীপুর বিএনপির প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত

জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের আর্থিক সহায়তা পেলো মাদ্রাসা শিক্ষক-কর্মচারীরা

জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের আর্থিক সহায়তা পেলো মাদ্রাসা শিক্ষক-কর্মচারীরা