সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৭:৩১ পিএম
ছবি: ভোরের আকাশ
সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলায় "গুণী শিক্ষক-২০২৫" নির্বাচিত হয়েছেন সদর ইউনিয়নের অন্তর্গত ৬৬নং ফারুকনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক অজয় কুমার রায়।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের স্মারক নং ৩৮.০১.০০০০.১৪৫.৯৯.০৩০.২০২৫-২৪৪৪, তারিখ: ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রিঃ পত্রের আলোকে জাতি গঠনে শিক্ষকের অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ এই সম্মাননা প্রদান করা হয়। এতে সকল শিক্ষককে উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করার লক্ষ্যে সারা বিশ্বের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ৫ অক্টোবর বিশ্ব শিক্ষক দিবস উদযাপন করা হয়।
এই উপলক্ষে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উদযাপন নীতিমালা-২০২৪ এর আলোকে উপজেলা, জেলা ও বিভাগ পর্যায়ে গুণী শিক্ষক বাছাইয়ের জন্য একজন প্রধান শিক্ষক ও একজন সহকারী শিক্ষককে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নির্বাচিত করা হয়ে থাকে।
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় মধ্যনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বোর্ড সভায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষকদের পেশাদারিত্ব, সৃজনশীলতা, ব্যক্তিগত গুণাবলী ও অর্জনের বিভিন্ন দিক মূল্যায়ন করা হয়। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্ধারিত ছক অনুযায়ী যাচাই-বাছাই ও সাক্ষাৎকার গ্রহণের মাধ্যমে সহকারী শিক্ষক অজয় কুমার রায়কে "গুণী শিক্ষক-২০২৫" হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।
উল্লেখ্য, অজয় কুমার রায় পেশায় একজন নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক হলেও তাঁর রয়েছে নানাবিধ সৃজনশীল কর্মকাণ্ড। তিনি শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশে অসামান্য অবদান রাখেন এবং তাঁর বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ৫ম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষায় নিয়মিতভাবে ট্যালেন্টপুল ও সাধারণ বৃত্তি লাভ করে।
তিনি প্রাথমিক শিক্ষায় শিশুদের উদ্বুদ্ধ করতে নিয়মিত মা সমাবেশ, অভিভাবক সমাবেশ ও উঠান বৈঠকের আয়োজন করে পিছিয়ে পড়া ও অনিয়মিত শিশুদের পড়ালেখার গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন।
জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ, প্রাথমিক শিক্ষা পদক, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, জাতীয় দিবসসমূহে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে তাদের সৃজনশীলতা বিকাশে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ক্রীড়া, কাবিং, কবিতা আবৃত্তি, কুইজ, চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতায় নিয়মিত অংশগ্রহণ করান।
তিনি সমন্বিত ধর্মপাশা ও মধ্যনগর উপজেলা পর্যায়ে "শ্রেষ্ঠ শিক্ষক" মনোনীত হয়ে প্রাথমিক শিক্ষা পদক-২০২৩ অর্জন করেন এবং উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস কর্তৃক সম্মাননা স্মারক গ্রহণ করেন।
পেশাগত দক্ষতায় তিনি পিটিআই-এর সিইনএড পরীক্ষায় কৃতিত্বের সঙ্গে প্রথম শ্রেণি অর্জন করেন। বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন, দেয়ালিকা প্রকাশ ও পিটিআইয়ের বাৎসরিক ম্যাগাজিন প্রকাশেও তাঁর গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে।
পিটিআই ও ইউআরসি কর্তৃক আয়োজিত প্রাথমিকের বিষয়ভিত্তিক বিভিন্ন প্রশিক্ষণ সফলতার সাথে সম্পন্ন করেন।
২১ বছরের শিক্ষকতা জীবনে তিনি শিক্ষা, ক্রীড়া, শরীরচর্চা, সংগীত, কবিতা আবৃত্তি, কাবিং এবং সাহিত্য-সংস্কৃতির নানা ক্ষেত্রে অবদান রেখেছেন। তিনি মধ্যনগরে নিজ উদ্যোগে গড়ে তুলেছেন তাঁর ‘কাব্যকানন’—যেখানে রয়েছে বিভিন্ন বিষয়ের তিন সহস্রাধিক বইয়ের বিপুল সংগ্রহ।
এছাড়াও তিনি বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় সংগঠনে দায়িত্ব পালন করছেন এবং বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির মধ্যনগর উপজেলা শাখার উপদেষ্টা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।
ভোরের আকাশ/তা.কা