পাথরঘাটা (বরগুনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১১:১২ এএম
ছবি: ভোরের আকাশ
বরগুনা-২ আসনের রাজনীতিতে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নুরুল ইসলাম মনি। তিনবারের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া এই নেতা বর্তমানে আলেম-উলামা, হিন্দু সম্প্রদায় ও সাধারণ মানুষকে একত্রিত করে জনপ্রিয়তার শীর্ষে অবস্থান করছেন। স্থানীয়দের মতে, তাকে এখন “দক্ষিণাঞ্চলের সিংহপুরুষ” হিসেবেই ডাকা হচ্ছে।
নুরুল ইসলাম মনি ১৯৮৮, ১৯৯১ ও ২০০১ সালে বরগুনা-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি পাথরঘাটা, বামনা ও বেতাগী উপজেলায় অবকাঠামো উন্নয়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও মৎস্য খাতে দৃশ্যমান পরিবর্তন এনেছেন। বিশেষ করে পাথরঘাটা পৌরসভা প্রতিষ্ঠা, সড়ক উন্নয়ন ও মৎস্য অবকাঠামো সংস্কারে তার অবদান উল্লেখযোগ্য।
২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি তাকে মনোনয়ন দেয়। যদিও রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে তিনি তার আসনে দীর্ঘ সময় প্রবেশ করতে পারেননি, তবে তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে কোনো বিরতি ঘটেনি। আওয়ামী লীগ সরকারের জুলুম-নির্যাতনের কারণে মাঠে না থেকেও তিনি কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন। তার প্রতিষ্ঠিত মনি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে গরিব ও অসহায় মানুষের জন্য নিয়মিত সহায়তা প্রদান করেছেন। বিশেষ করে ২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের পরে গরিব ও দুঃখীদের মাঝে অটোরিকশাসহ নানা সহায়তা বিতরণ করেছেন, যা সাধারণ মানুষের মধ্যে জনপ্রিয়তা আরও বৃদ্ধি করেছে।
২০২২ সালের ৪ সেপ্টেম্বর তিনি বাবা-মায়ের কবর জিয়ারতের জন্য পাথরঘাটায় প্রবেশ করলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হামলার শিকার হন। এতে তিনি সহ বিএনপির শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হন এবং অন্তত দশটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয় ও শতাধিক ভাঙচুর করা হয়।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন। কয়েক শতাধিক হিন্দু অংশগ্রহণ করে এবং সভার সময় অনেকে বিএনপিতে যোগদানের ঘোষণা দেন; তারা সামনের জাতীয় নির্বাচনে পাথরঘাটার হিন্দু সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে বিএনপিকে ভোট দেওয়ার অঙ্গীকার করেন। হিন্দু বক্তারা বলেন, “যদি মনি ভাই এমপি হন, তবে আমরা এই অঞ্চলে একজন মন্ত্রী পাব; তার মাধ্যমে আমাদের অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।” পরে তিনি দুর্গা পূজার বিভিন্ন মণ্ডপ পরিদর্শন করলে সেখানে বিপুল সমাগম দেখা যায় এবং অনেকেই জানান, “মনি ভাইকে এমপি হিসেবে পেতে আমরা রাজপথে বুক পেতে দিতেও প্রস্তুত।”
অন্যদিকে গতকাল তিনি আলেম-উলামাদের নিয়ে মতবিনিময় সভা করেন। কয়েক শতাধিক আলেম-উলামার উপস্থিতিতে তিনি বলেন, “আজ অনেকেই ইসলামকে নিঃস্বার্থভাবে ব্যবহার করে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তারা বিএনপির ভাবমূর্তিকে ক্ষুন্ন করতে সামাজিক মাধ্যমে প্রতিনিয়ত অপপ্রচার চালাচ্ছে। কিছু ইসলামিক দল সাধারণ মানুষকে বলছে, ‘তাদের ভোট না দিলে ইসলাম হেরে যাবে’। আরেকটি ইসলামিক দল বলছে, ‘তাদের ভোট দেওয়া নাকি রসূলকে ভোট দেওয়ার শামিল’। এ বিষয়ে ইসলাম কী বলে, আমি তা এই মতবিনিময় সভায় উপস্থিত আলেমদের কাছে জানতে চাই।” সভায় তিনি আলেমদের মতামত গ্রহন করেন এবং ভবিষ্যতে নির্বাচিত হলে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার অধিকার ও মর্যাদা রক্ষায় কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন।
স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, নুরুল ইসলাম মনি আলেম-উলামা থেকে শুরু করে হিন্দু সম্প্রদায় এবং সাধারণ মানুষকে একত্রিত করে বরগুনা-২ আসনে একটি অনন্য রাজনৈতিক প্রভাব তৈরি করেছেন।
মাঠ পর্যায়ে জরিপ করে দেখা যায়, নুরুল ইসলাম মনির জনপ্রিয়তা বর্তমানে সবার শীর্ষে।
ভোরের আকাশ/তা.কা