জাকির মোল্লা, ঈশ্বরগঞ্জ ,ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৮ আগস্ট ২০২৫ ১২:৫০ এএম
নিখোঁজের ৫০ দিনেও উদ্ধার হয়নি স্কুলছাত্রী, মায়ের বুকফাটা কান্না থামছে না
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে ষষ্ঠ শ্রেণি পড়ুয়া এক স্কুলছাত্রীকে তুলে নেওয়ার প্রথমে থানায় জিডি নিলেও ৩৮ দিন পর মামলা নেয় পুলিশ। ঘটনার ৫০ দিন পেরিয়ে গেলেও উদ্ধার হয়নি। এদিকে মেয়েকে ফিরে পেতে ব্যাকুল পরিবার, মায়ের কান্না যেন থামছেই না।
উপজেলার উচাখিলা ইউনিয়নের একটি গ্রামের মেয়েটি (১২) স্থানীয় একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ালেখা করতো। মেয়েটিকে উত্যক্ত করতো একই ইউনিয়নের গোল্লাজয়পুর গ্রামের দশম শ্রেণি পড়ুয়া এক তরুণ। স্থানীয় উচাখিলা বাজারের বেসরাকরি একটি স্কুলে ছেলেটি পড়তো। স্কুলে যাওয়া আসার পথে প্রেম নিবেদন করে উত্ত্যক্ত করায় দেড়মাস আগে মেয়েটি তার বাবাকে বিষয়টি জানিয়েছিল। এরপর মেয়েকে স্কুলে দিয়ে আসতেন ও নিয়ে আসতেন বাবা-মা। মেয়েটিকে উত্ত্যক্ত না করতে তরুণকেও শাসিয়ে ছিলেন মেয়েটির বাবা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত ১৮ জুন সকাল ৮ টার দিকে স্কুলে যাওয়ার জন্য মেয়েটি বের হলে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে যায় তরুণ ও তার সহযোগিরা।
এ ঘটনায় মেয়েটির বাবা ১৯ জুলাই থানায় একটি নিখোঁজ জিডি করেন। পরে, মেয়েকে তুলে নেওয়ার ঘটনা জানতে পেরে থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ ২৬ জুলাই অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে। ৫ জনকে অভিযুক্ত করে মামলা হলেও বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি এবং কিশোরীকেও উদ্ধার করতে পারেনি।
কিশোরীর ছাত্রীর বাবা বলেন, তারা চরম উৎকণ্ঠার দিন কাটাচ্ছেন। আমার মেয়েকে উত্ত্যক্ত করায় মেয়ে আমার কাছে জানিয়েছিল। ছেলেকে নিষেধ করেছিলাম আমার ছোট্টা মেয়ের পিছু যেনো না লাগে। কিন্তু আমার মেয়েকে তুলে নিয়ে গেল। এতোদিন হয়ে গেল, আমার মেয়েকে পাচ্ছি না। পুলিশ কিছুই করতে পারছে না, কোনো গুরুত্বই দিচ্ছে না। এটাই আমার কষ্ট। আমার ছোট্ট ছেলে ও তার মায়ের কান্না কোনো ভাবেই আর সইতে পারছি না। তিনি আরও বলেন, মেয়েকে তুলে নেওয়ার পর ছেলেটির পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে মেয়েকে ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিলেও দেয়নি।
আজ দুপুরে মেয়েটির মা বুকফাটা কান্না কণ্ঠে বলেন, পুলিশ যদি কাজ করতো তাহলে আমার মেয়েকে ফেরত পেতাম। জানিনা আমার মেয়ে কোথায় কীভাবে আছে, সে বেঁচে আছে কি না জানিনা। আমার অতি আদরের মেয়েছিল। কতো জায়গায় গেলাম কেউ আমার মেয়ের খোঁজ দেয় নাই। আমার মেয়েকে ফেরত চাই, মেয়েকে ছাড়া বাঁচবো না।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, কিশোরীর বাবা প্রথমে নিখোঁজ জিডি করলে আমরা তৎপরতা চালিয়ে জানতে পেরে প্রেম করে চলে গেছে। ছেলের বাড়িতে গিয়েও আমরা কাউকে পাইনি। মুঠোফোন ব্যবহার না করায় আমরা তাদের অবস্থান শনাক্ত করতে পারছি না। তবে, আমরা উদ্ধারে সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। আমরা কোনো ক্লু পাচ্ছি না৷ নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় জিডি ও মামলায় ভিন্ন তারিখ সম্পর্কে বলেন, বাদী যে ভাবেই অভিযোগ জমা দিয়েছে সেভাবেই মামলা গ্রহণ করা হয়েছে।
ভোরের আকাশ/হ.র