ভোরের আকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৭:০২ পিএম
সংগৃহীত ছবি
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, গণতন্ত্রের পক্ষের দল ধানের শীষকে চূড়ান্ত বিজয়ী করতে হবে। দল যার হাতে ধানের শীষ দেবে, তাকে শুধু বিজয়ী করলেই হবে না, ইতিহাসের স্বর্ণাক্ষরের বিজয় এনে দিতে হবে। বিএনপির বিজয় হলেই গণতন্ত্রের বিজয় হবে।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) ঠাকুরগাঁও সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বিএনপির এই নেতা বলেন, স্বৈরাচারকে পতন করে আমরা একটা পর্ব শেষ করেছি। আরেকটি পর্ব আছে, নির্বাচন। আমাদের নেতা বলেছেন এই নির্বাচন সহজ নাও হতে পারে। সত্যি আগামী নির্বাচনটা কঠিন হতে পারে। কিন্তু কাজটা আমাদের করতে হবে। শুধু করলেই হবে না, গণতন্ত্রের পক্ষের দল ধানের শীষকে চূড়ান্ত বিজয়ী করতে হবে। দল যার হাতে ধানের শীষ দেবে, তাকে শুধু বিজয়ী করলেই হবে না, ইতিহাসের স্বর্ণাক্ষরের বিজয় এনে দিতে হবে। আগামীতে যিনি প্রধানমন্ত্রী হবেন তিনি হচ্ছেন তারেক রহমান।
আমার ছেলেমেয়ে হলে থাপড়িয়ে দাঁত ফেলে দিতাম : বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, চব্বিশের আন্দোলনে এক মাসে সাড়ে চারশ’ মানুষ শহীদ হয়েছে। অথচ যাদের নেতৃত্ব দেওয়ার কথা ছিল, তারা টাকার কাছে বিক্রি হয়ে গেছে। আমার ছেলেমেয়ে হলে থাপড়িয়ে দাঁত ফেলে দিতাম।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ১৯৯১ সালে বিএনপি গণতান্ত্রিকভাবে সরকার গঠন করেছিল। ১৪ ও ১৮ সালের জাতীয় নির্বাচন ছিল দিনের ভোট রাতে করার নমুনা। জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল।
শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সমালোচনা করে দুদু বলেন, ৭২ থেকে ৭৫ পর্যন্ত ছিল আরেকটি কালো সময়। রক্ষীবাহিনী গড়ে তুলে নির্বিচারে মানুষ হত্যা করা হয়েছিল। দুর্ভিক্ষে ১০ লাখ মানুষ মারা যায়। শেখ পরিবার হলো লুটেরা আর খুনিদের পরিবার।
বিএনপির এই নেতা বলেন, হাসিনা টাকা লুটপাট করেছেন, গণহত্যা করেছেন। মনে করছেন, ভারতে গিয়ে রক্ষা পাবেন। কিন্তু জনগণের আদালতে বিচার এড়ানো যাবে না।
আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্যে দুদু বলেন, শোনা যাচ্ছে ছাত্রলীগ দু-একটা করে মিছিল বের করছে। এগুলো বন্ধ করতে হবে। আমরা এখনো জুলুমকারীদের, খুনিদের ওপর হাত তুলি নাই, পুলিশের কাছে ছেড়ে দিয়েছি। আপনারা (আওয়ামী লীগ) গণহত্যা চালিয়েছেন, দেশের সম্পদ লুটপাট করেছেন, দেশের মানুষের ওপর জুলুম করেছেন। এখনো ক্ষমা চাননি। দেশে উশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা করছেন। এগুলো বাদ দিন। এগুলো করলে দেশের জনগণ ঘর থেকে তুলে নিয়ে জনগণের আদালতে দাঁড় করাবে, বিচার করবে। গণহত্যাকারীদের বিচার এ সরকার শুরু করেছে, আমরা সমর্থন দিয়েছি। এ সরকার শেষ করতে না পারলে পরবর্তী সরকার বিচার করবে যোগ করেন তিনি।
ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, চাঁদাবাজি, লুটপাট, দখলবাজি এগুলো রাজনীতি না। বিএনপিতে এগুলো নাই। যেগুলো ছিল ছাঁটাই করে দিয়েছে। ভবিষ্যতে কেউ যদি চিন্তাও করে তাহলে তার দলে জায়গা হবে না। বিএনপি গণমানুষের দল, শ্রমিকের দল, সাধারণ মানুষের দল। এই জন্য মানুষ সব সময় বিএনপিকে পছন্দ করেছে, ভোট দিয়েছে।
তিনি বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা করেছিলেন। স্বাধীনতার ঘোষণা করার কথা ছিল শেখ মুজিবুর রহমানের, কিন্তু তিনি করেননি। স্বাধীনতার ঘোষণা করেছিলেন শহীদ জিয়া। আর স্বৈরাচার এরশাদকে পতন করে জেলে ভরেছিলেন, দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তাদের যোগ্য উত্তরসূরী হলেন আমাদের নেতা তারেক রহমান। বাংলাদেশের সাধারণ জনগণকে সাথে নিয়ে অতীতে বেগম খালেদা জিয়া সরকার গঠন করেছিলেন। এখন আছেন আমাদের নেতা তারেক রহমান। তিনি ১৬ বছর ধরে শত জুলুম-নির্যাতন সহ্য করে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে এই ফ্যাসিবাদকে তাড়িয়েছেন। যার নাম ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নুর করিমের সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সম্মেলন উদ্বোধন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর) আসাদুল হাবিব দুলু, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক, আমিনুল ইসলামসহ ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সকল স্তরের নেতাকর্মীরা।
ভোরের আকাশ/এসএইচ