ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৪ জুন ২০২৫ ০৪:৪০ পিএম
ভারত থেকে আসা যাত্রীর করোনা উপসর্গ পরীক্ষা
পৃথিবীর অনেক দেশেই করোনার প্রভাব বেড়ে চলছে। বিশেষত পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) এর সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশনে সতর্ক ব্যবস্থা নিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনায় আখাউড়া ইমিগ্রেশন হেলথ ডেস্কে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু হয়েছে। ভারতের আগরতলা হয়ে বাংলাদেশে আসা প্রত্যেক পর্যটককে থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হচ্ছে। এছাড়াও আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৫টি বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে কোভিড রোগীর জন্য।
শনিবার (১৪ জুন) দুপুরে আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশনে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য একটি হেলথ ডেস্ক স্থাপন করা হয়েছে; এখানে স্বাস্থ্যকর্মী মোশারফ হোসেন বাবুল ও মঞ্জু আরা বেগম বসে আছেন। ভারত থেকে আসা যাত্রীদের প্রত্যেককে থার্মাল স্ক্যানারে তাপমাত্রা পরীক্ষা করছেন।
আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশনে হেলথ ডেস্কে অবস্থানরত কর্তব্যরত স্বাস্থ্যকর্মী মোশারফ হোসেন বেলাল ভোরের আকাশের জেলা প্রতিনিধি আশরাফুল ইসলাম সুমনকে বলেন, ‘ভারত থেকে আসা যাত্রীদের তাপমাত্রা পরীক্ষা করছি। তাছাড়া গলা ব্যাথা, শর্দি-কাশি আছে কিনা জানতে চাই। চলতি মাসের ৫ তারিখ চিঠি আসলে ৬ তারিখ অর্থাৎ ঈদুল আযহার আগের দিন থেকে হেলথ কার্যক্রম শুরু হয়। সকাল সাড়ে ৬টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত দুই শিফটে ২জন করে ৪জন স্বাস্থ্যকর্মী হেলথ ডেস্কে কাজ করেন। দুপুর দেড়টায় শিফট পরিবর্তন হয়ে থাকে। যাত্রীদের সবাইকে মাস্ক পরিধান করার পরামর্শ দিচ্ছি।'
হেলথ ডেস্কে থাকা অপর স্বাস্থ্য সহকারী মঞ্জু আরা বেগম জানান, গতকাল ভারত থেকে আসা ১৬২ জনকে এবং এর আগেরদিন ৯৯ জন যাত্রীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়।' এ ব্যাপারে বিডিআর ও বন্দর কর্তৃপক্ষ বেশ সহযোগিতা করছেন বলে জানান তিনি। আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. হিমেল খান বলেন, 'ভারত থেকে আসা যাত্রীদের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হচ্ছে। এ ছাড়া যাত্রীদের মধ্যে ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে গণসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য রোগ প্রতিরোধ নির্দেশনা প্রচারের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।' তিনি সবাইকে আরও বেশি সতর্ক ও সচেতন থাকার আহবান জানান।
উল্লেখ্য, গত ৪ জুন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. ফরহাদ হোসেন স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনায় বলা হয়, ভারতসহ অন্যান্য দেশ থেকে আসা যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিশ্চিত করতে ইমিগ্রেশন এবং আইএইচআর হেলথ ডেস্কের সহায়তায় কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, করোনাভাইরাসের এই নতুন ধরনটি ‘কোভিড-ওমিক্রন এক্সবিবি’ আগের চেয়ে বেশি ভয়ংকর। যদিও এখনো বাংলাদেশে এই ভ্যারিয়েন্টে কেউ আক্রান্ত হননি, তবে আগাম সতর্কতার জন্য জনসাধারণকে সচেতন থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
কোভিড-ওমিক্রন এক্সবিবির উপসর্গগুলোর মধ্যে রয়েছে- জ্বর, কাশি ছাড়াও মাথাব্যথা, গলা ও জয়েন্টে ব্যথা, নিউমোনিয়া, ক্ষুধামন্দা ইত্যাদি। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে ৫ গুণ বেশি ভয়ংকর এবং মৃত্যুহারও বেশি। আখাউড়া স্থলবন্দরে ঈদুল আযহার আগের দিন থেকে স্বাস্থ্যসেবা শুরু হবার পর থেকে গতকাল শুক্রবার (১৩জুন) পর্যন্ত ৪৯৮ জনকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। শনিবার দুপুর (১৪জুন) পর্যন্ত কোনো করোনা রোগী শনাক্ত হয়নি।
ভোরের আকাশ/আজাসা