স্বর্ণালংকার সহ ২২ লাখ টাকা লুট
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৫ জুন ২০২৫ ০৩:০৫ পিএম
পাকুন্দিয়ায় দুর্ধর্ষ ডাকাতি
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় পৌরসভায় দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। অস্ত্রের মুখে বাড়ির সবাইকে জিম্মি করে নগদ অর্থ, স্বর্ণালংকারসহ ২২ লাখ টাকা লুটপাট করে নিয়ে যায় ডাকাত দল।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) দিবাগত রাত ২টা ১০ মিনিটে পাকুন্দিয়া পৌরসভার শ্রীরামদী এলাকার বিএডিসি কোল্ড স্টোর সংলগ্ন বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বাড়ির মালিক ইছাম উদ্দিন (৭০) গুরুতর আহত হয়ে পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। আহত ইছাম উদ্দিন একই গ্রামের মৃত আব্দুল হামিদের ছেলে।
জানা যায়, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টা ১০ মিনিটে ১০-১২ জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ছাদ করা বাড়িটিতে প্রবেশ করে। এ সময় বাড়ির ভেতরে ঢুকে প্রথমে একে একে প্রতি ইউনিটের প্রধান দরজা ভেঙে ধারালো অস্ত্র দিয়ে সবাইকে একটি রুমের ভেতর জিম্মি করে ফেলে। পরে প্রতিটি রুমে ঢুকে প্রথমে নগদ অর্থ পরে স্বর্ণালংকারসহ লুট করে। এ সময় আসবাবপত্র মেঝেতে ফেলে ভাঙচুর চালায় ডাকাত দলের সদস্যরা।
বাড়ির ভাড়াটিয়া ও আলুর স্টোর বাজারের বিকাশ ব্যবসায়ী রাসেল মিয়া বলেন, রাত ২ টার পরে আমার ঘরে ৪-৫ জন লোক দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে প্রবেশ করে আমাকে জিম্মি করে ফেলে। এরপর আমার রুমের আলমারি, র্যাকসহ সব ভাঙচুর করে। এছাড়া দোকানের বিকাশের ক্যাশ ব্যাগ থেকে নগদ ৩ লাখ ৫৪ হাজার টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। সর্বোচ্চ ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে এত বড় দুর্ঘটনা ঘটে। বাড়িতে থাকা ৩ জন ভাড়াটিয়া বসবাস করে।
তিনি আরও বলেন, আমার অনেক কষ্টের জমানো টাকায় অন্য জায়গায় কেনা বাড়ির দলিলের কাগজপত্র ও নগদ টাকা সবকিছু নিয়ে আমাকে পথের ভিখারি বানিয়ে গেছে ডাকাতদল।
আরেক ভাড়াটিয়া বলেন, আমার ঘরে প্রথম ঢুকেই দ্বিতীয় দরজা খোলার জন্য ভাঙচুর করে একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে খুলে দিলে আমার স্ত্রীর স্বর্ণালংকার ও টাকা-পয়সা সবকিছু নিয়ে গেছে।
একই কথা জানান ১নং ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য আমির উদ্দিন। তিনি বলেন, আমি যতদূর জানি এখানে তিন জন ভাড়াটিয়া। ডাকাত দলের সদস্যরা বাড়ির প্রধান গেইট দিয়ে বের হয়ে মেইন রোডে উঠে ছোট্ট একটি কাভার্ড ভ্যানে করে পালিয়ে যায়।
বাড়ির মালিক ইছাম উদ্দিন (৭০) বলেন, মঙ্গলবার রাত ২:১৫ মিনিটে আমার বাড়িতে অজ্ঞাত ১০-১২ জন লোক এসে অস্ত্র দিয়ে আমাদের জিম্মি করে ডাকাতি করেছে। বাড়িতে ঢুকে সব ভাড়াটিয়ার টাকা-পয়সা, স্বর্ণালংকারসহ সব আসবাবপত্র নিয়ে গেছে। এ সময় দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আমার কাছ থেকে নগদ ৪ লাখ টাকা নিয়েছে। এছাড়া অন্যান্য ভাড়াটিয়াদের জিম্মি করে ডাকাত দলের সদস্যরা ডাকাতি করে। এ ঘটনায় আমার বাড়ির এক ভাড়াটিয়াকে থানায় আটক করা হয়েছে। আমার বাড়িতে আনুমানিক ২০-২২ লাখ টাকার মতো ডাকাতি হয়েছে। আমি এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সর্বোচ্চ সহায়তা চাই।
এ বিষয়ে পাকুন্দিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাখাওয়াৎ হোসেনের সঙ্গে ফোনে কথা হলে তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসি তাৎক্ষণিক। এ বিষয়ে আমরা খোঁজ নিয়ে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছি। এছাড়া একজন আটক করা হয়েছে। বর্তমানে এ ঘটনায় পুরো এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
ভোরের আকাশ/জাআ