রাজবাড়ী প্রোতিনিধি
প্রকাশ : ০৫ অক্টোবর ২০২৫ ১১:৪৮ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ার পদ্মা নদীতে চলছে প্রকাশ্যে মা ইলিশ নিধন। সন্ধ্যা নামতেই মৌসুমি জেলেরা ঝাঁকে ঝাঁকে নদীতে নেমে পড়ছে ইলিশ ধরতে। নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন এ কর্মকাণ্ডের পরও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিতে দেখা যাচ্ছে না উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তরকে।
সরকার ঘোষিত জাতীয় মা ইলিশ সংরক্ষণ ও প্রজনন মৌসুম-২০২৫ উপলক্ষে ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত (২২ দিন) দেশের সব নদ-নদীতে মা ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা, বিক্রি ও পরিবহন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে গোয়ালন্দে দেখা যাচ্ছে তার উল্টো চিত্র। প্রকাশ্যে মা ইলিশ শিকার করলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেই বললেই চলে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলা মৎস্য অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীর যোগসাজশেই মৌসুমি জেলেরা মা ইলিশ ধরছে। তারা অভিযোগ করেন, “মৌসুমি জেলেদের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়েই তাদের মৌখিক অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।”
অভিযোগ আরও রয়েছে, অভিযানের সময়ের খবর আগেভাগেই পৌঁছে যায় জেলেদের কাছে। ফলে নৌ পুলিশ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা অভিযানে গেলেও নদীতে কাউকে পাওয়া যায় না। স্থানীয়রা এটিকে ‘লোক দেখানো অভিযান’ বলেই মন্তব্য করেছেন।
এদিকে গোয়ালন্দ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আনোয়ারুল ইসলাম পাইলটের বিরুদ্ধেও নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রচারণামূলক কার্যক্রম সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা হয়নি। নির্দেশনা অনুযায়ী জেলার গুরুত্বপূর্ণ মাছঘাট, আড়ৎ ও জেলেপল্লীতে মাইকিং, পোস্টার, লিফলেট বিতরণ, সভা-সমাবেশ আয়োজন, গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ এবং গণমাধ্যমে প্রচারণার কথা থাকলেও বাস্তবে দেখা গেছে কেবল কয়েকটি ব্যানার টানানো ছাড়া তেমন কিছুই করা হয়নি।
অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে মৎস্য কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম পাইলট অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমরা সরকারি বিধি অনুযায়ী যথাসাধ্য প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছি। প্রতিদিনই অভিযান পরিচালনা করছি, তবে সারাদিন নদীতে থাকা সম্ভব নয়।”
উপজেলা মৎস্য অফিসের কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী মৌসুমি জেলেদের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়েছেন কিনা—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমরা কোনো জেলের কাছ থেকে কোনো অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করিনি। এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।”
স্থানীয়দের দাবি, কঠোর নজরদারি ও নিয়মিত অভিযান না হলে চলমান মা ইলিশ নিধন বন্ধ হবে না। এতে আগামী বছরের ইলিশ উৎপাদন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
ভোরের আকাশ//হর