আবার বেড়েছে সোনার দাম
দুই দফা কমার পর দেশের বাজারে আবার বেড়েছে সোনার দাম। ভরি ১ লাখ ৭১ হাজার ২৮৬ টাকা
সোমবার (৫ মে) সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। বাজারে মঙ্গলবার (৬ মে) থেকে সোনার নতুন এ দাম কার্যকর হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি সোনার (পিওর গোল্ড) দাম বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সোনার নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তি আরও বলা হয়, দেশের বাজারে প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) ২২ ক্যারেটের সোনার দাম পড়বে ১ লাখ ৭১ হাজার ২৮৬ টাকা। এছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৬৩ হাজার ৪৯৪ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৪০ হাজার ১৪৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি সোনার দাম ১ লাখ ১৫ হাজার ৯০৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সবশেষ গত ৩ মে দেশের বাজারে সোনার দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। ওই সময় ভরিতে ৩ হাজার ৫৭০ টাকা কমিয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ লাখ ৬৮ হাজার ৯৭৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা ৪ মে থেকে কার্যকর হয়েছিল।
ভোরের আকাশ/আমর
সংশ্লিষ্ট
গত দুদিনের বৃষ্টির প্রভাব পড়েছে বাজারে। অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে নিত্যপণ্যের দাম। বিশেষ করে মাছ ও সবজির দামে ঊর্ধ্বগতি লক্ষ্য করা গেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিটি সবজির দাম ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। এতে বেকায়দায় পড়েছে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির ক্রেতারা।শুক্রবার (৩ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে সবজির এমন বাড়তি দামের চিত্র দেখা গেছে।বাজার ঘুরে দেখা যায়, করলা প্রতি কেজি ১০০ টাকা, বেগুন (লম্বা) প্রতি কেজি ৮০ টাকা, শিম প্রতি কেজি ২০০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৬০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৩০ টাকা, কাঁচা কলা প্রতি হালি ৪০ টাকা, কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ৪০০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৭০ টাকা, কাঁকরোল প্রতি কেজি ৮০ টাকা, কচুর মুখি প্রতি কেজি ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।এদিকে সবজির পাশাপাশি মাছের বাজারেও লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বাড়ছে। রুই মাছের কেজি ৩৫০ থেকে বেড়ে হয়েছে ৪০০ টাকা, কাতলা ৪২০ থেকে বেড়ে ৪৮০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ থেকে বেড়ে ২৪০ টাকা। দেশীয় মাছ যেমন টেংরা, শিং, কই ইত্যাদির দামও কেজিতে ৩০ থেকে ৫০ টাকা বেড়েছে।অন্যদিকে ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকায়, সোনালী মুরগি প্রতি কেজি ৩০০ টাকা, দেশি মুরগি প্রতি কেজি ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি গরুর মাংস প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকায়, আর প্রতি কেজি খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকায়।সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রাজধানীর রামপুরা বাজারে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী শিহাবুল ইসলাম। তিনি বলেন, গত তিন মাসের বেশি সময় ধরে বাজারে অতিরিক্ত দামে সবজি বিক্রি হচ্ছে। আর আজ সেই সবজির দাম আরও বেড়েছে। বাজারে যদি নিয়ন্ত্রণ না থাকে, যে যার মতো করে সবজি বিক্রি করে— তাহলে আমাদের মতো সাধারণ ক্রেতারা কীভাবে এত দাম দিয়ে সবজি কিনে খাবে? যেকোনো অজুহাতে তারা দাম বাড়িয়ে দেয়। অথচ বাজার মনিটরিংয়ের কোনো উদ্যোগ আমরা কখনো দেখতে পাই না।মালিবাগ বাজারের আরেক ক্রেতা রাজু আহমেদ বলেন, আজকে বাজারে সবজির দাম আরেক দফা বেড়েছে। দোকানিরা বলছেন বৃষ্টির কারণে সবজির দাম বাড়তি। অথচ গত তিন মাস ধরে সবজির দাম বেড়েই যাচ্ছে। যে যার মতো করে বাড়তি দামে সবজি বিক্রি করছে। আজ এসে যুক্ত হয়েছে বৃষ্টির জন্য সবজির দাম বেশি, কিন্তু তাহলে এতদিন ধরে সবজির দাম এত বাড়তি ছিল কেন?সবজির দামের বিষয়ে শান্তিনগর বাজারের সবজি বিক্রেতা মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, গত দুই দিন ধরে বৃষ্টির কারণে আজ সবজির দাম বাড়তি। এছাড়া বেশিরভাগ সবজির এখন মৌসুম শেষ হয়েছে, নতুন করে সবজি বাজারে না আসা পর্যন্ত সবজির দাম এমন বাড়তি থাকবে। আবার যে সবজি ক্ষেতে রয়েছে, সেগুলো গত দুই দিনের বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ফলে সেই প্রভাব পড়েছে বাজারে। বৃষ্টি যদি আরও কয়েকদিন থাকে, তাহলে সবজির দাম আরও বাড়তে পারে।ভোরের আকাশ/মো.আ.
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার বাজারে প্রতিদিনই বাড়ছে মাছ-মুরগির দাম। বৃষ্টি ও সরবারহ ঘাটতির অজুহাতে গত কয়েকমাস ধরেই অস্থির সবজির বাজার। মাঝে কিছুটা ওঠানামা করলেও চলতি সপ্তাহে ফের বেড়েছে দাম।এছাড়া খুচরা বাজারে ভোজ্যতেলের দামও বেড়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় এই খাদ্যপণ্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধিতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন মধ্যবিত্ত ক্রেতারা।শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর মালিবাগ, মুগাদ, রামপুরা-বনশ্রী এলাকার বাজার ঘুরে এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।বাজার ঘুরে দেখা গেছে, একমাসে কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকা বাড়ার পর ব্রয়লার মুরগি এখন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা কেজি দরে। সোনালি মুরগিও ২৬০ টাকা থেকে বেড়ে ২৮০ টাকায় উঠেছে। গরু ও খাসির মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৬০-৮০০ টাকা, খাসির মাংস ১ হাজার ২০০ টাকা ও ছাগলের মাংস ১ হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে জনপ্রিয় মাছ যেমন রুই, কাতলা, তেলাপিয়া ও চিংড়ির দামও বেড়েছে কয়েক ধাপ।বাজার করতে আসা ক্রেতারা বলছেন, সংসারে অর্থের যোগান না বাড়লেও সব দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় সংসার চালানো এখন দায়। বাজারে গেলে মনে হয় সব পণ্য হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে। মাছ-মাংস যেন বিলাসী খাবার হয়ে গেছে। সম্প্রতি বাদামি ডিমের দাম ডজনপ্রতি ১৫০ টাকায় উঠলেও এখন কমে ১৪০ টাকায় নেমেছে। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ, বাড়তি দাম দ্রুত কার্যকর হয়, কিন্তু কমতে সময় নেয়।এদিকে, গত সপ্তাহে সয়াবিন তেলে দাম লিটারে ১০ টাকা বাড়াতে ব্যবসায়ীদের প্রস্তাব সরকার মেনে নেয়নি। সে কারণে এখন বাজারে তৈরি হয়েছে এই অস্থিরতা।পাইকারী ও খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, তেলের দাম নতুন করে বাড়েনি, তবে কমিশন কমিয়ে দিয়েছে সরবরাহকারী কোম্পানিগুলো। এতে বাজারে বেড়েছে খোলা সয়াবিন ও সুপার পাম অয়েলের দাম। গত তিন-চার দিনের ব্যবধানে এই দুই ধরনের তেলের দাম বেড়েছে লিটারে পাঁচ টাকার মতো। এখন খুচরা পর্যায়ে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৭২ টাকা। আর সুপার পাম অয়েলের লিটার বিক্রি হয়েছে ১৫৫ টাকা ১৬০ টাকা দরে। চার দিন আগেও প্রতি লিটার খোলা সয়াবিনের দাম ১৬৯ এবং পাম অয়েলের দাম ১৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।এছাড়া গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে বাজারে সবজির সরবারহ কমেছে। এতে কেজিতে ১০-১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।বাজারঘুরে দেখা যায়, মানভেদে প্রতি কেজি ধুন্দল ৪০-৫০ টাকা, শসা ৫০-৮০ টাকা, পেঁপে ২০ টাকা, ঝিঙে ৬০-৮০ টাকা, কহি ৫০-৬০ টাকা, আলু ২০-২৫ টাকা, আমড়া ৬০ টাকা ও কচুর মুখি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি করলা ৮০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৭০-৮০ টাকা, টমেটো ১২০-১৪০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, মূলা ৮০ টাকা, পটোল ৭০ টাকা, কাঁকরোল ৬০ টাকা, বেগুন ৮০-১০০ টাকা ও কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা।আর প্রতি পিস লাউ ৬০-৭০ টাকা ও চালকুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। এছাড়া প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ১৬০ টাকায় কেনাবেচা হচ্ছে।এদিকে কেজিতে ১০০ টাকা কমেছে ইলিশের দাম। বর্তমানে ১ কেজি ওজনের ইলিশ ২১০০ টাকা, ৭০০-৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৭৫০-১৮৫০ টাকা, ৫০০-৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৫০০ টাকা ও দেড় কেজি ওজনের ইলিশ ৩০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।অন্যান্য মাছের দাম রয়েছে আগের মতোই চড়া। প্রতিকেজি বোয়াল ৭৫০-৯০০, কোরাল ৮০০-৮৫০, আইড় ৭০০-৮০০, পাবদা ও শিং ৪০০-৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া চাষের ট্যাংরা ৭৫০-৮০০, কাঁচকি ৬৫০-৭০০ এবং মলা ৫০০-৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রুই কেজিপ্রতি ৩৫০-৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০ টাকা, পাঙাশ ২২০-২৫০ টাকা, বাইলা ৮৫০ টাকা, টেংরা ৮০০ টাকা ও চিংড়ি কেজিপ্রতি ১,০০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।কারওয়ানবাজারের চাল ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘নতুন করে দাম বাড়েনি। তবে কমার কোনো সম্ভাবনা নেই। প্রতিকেজি মিনিকেট চাল ৮০-৮৫ টাকা, নাজিরশাইল ৮৫-৯২ টাকা ও মোটা চাল ৫৬-৬২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।’ভোরের আকাশ/মো.আ.
দেশের শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতিতে অসামান্য অবদানের জন্য বছরের সেরা ব্যবসায় উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানের সম্মাননা পেল বাংলাদেশের সুপারব্র্যান্ড ও টেক জায়ান্ট ওয়ালটন। প্রতিষ্ঠানটি অর্জন করেছে ডিএইচএল-দ্য ডেইলি স্টার বাংলাদেশ বিজনেস অ্যাওয়ার্ডের ‘বেস্ট এন্টারপ্রাইজ অব দ্য ইয়ার ২০২৪’ সম্মাননা।মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর রেডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন হোটেলে এক জমকালো আয়োজনের মধ্যে দিয়ে তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। এ বছর পাঁচটি বিভাগে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। সেগুলো হলো-বর্ষসেরা ব্যবসায়ী, বর্ষসেরা আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বর্ষসেরা প্রতিষ্ঠান, ব্যবসায় অসামান্য কৃতিত্ব অর্জনকারী নারী এবং আজীবন সম্মাননা পুরস্কার।বর্ষসেরা ব্যবসায়ী হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছেন প্রাণ আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সিইও আহসান খান চৌধুরী, বর্ষসেরা আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছেন সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মাসরুর আরেফিন, বর্ষসেরা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান এস এম শামসুল আলম, ব্যবসায় অসামান্য কৃতিত্ব অর্জনকারী নারী হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছেন শেয়ারট্রিপ-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া হক এবং আজীবন সম্মাননা পুরস্কার দেওয়া হয়েছে এসিআই গ্রুপের চেয়ারম্যান আনিস উদ দৌলাকে।অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন উপস্থিত ছিলেন।বেসরকারি খাতকে এগিয়ে নিতে এবারের আয়োজনের মূলমন্ত্র ছিল 'পাওয়ারিং দ্য প্রাইভেট সেক্টর'। দেশের ব্যবসা খাতের সফলদের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ডিএইচএল ও দ্য ডেইলি স্টার ২০০০ সাল থেকে প্রতি বছর এ পুরস্কার দিয়ে আসছে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
জাতীয় সঞ্চয়পত্রের প্রধান স্কিমগুলোর মুনাফার হার কমিয়ে ইতোমধ্যে একটি পরিপত্র জারি করেছে সরকার। বাংলাদেশে ঝুঁকিমুক্ত বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অনেকেই সঞ্চয়পত্র কিনে থাকেন। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত শ্রেণির পরিবারগুলোর আয়ের একটি অংশ আসে সঞ্চয়পত্রের মুনাফা থেকে। চাকরিজীবীদের অনেকেই অবসরে যাওয়ার পর পেনশনের টাকা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করে থাকেন। এবার সঞ্চয়পত্র কেনাবেচার আলাদা বাজার তৈরির পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেছেন, সঞ্চয়পত্র এখন বাজারের সঙ্গে আংশিক যুক্ত। কিন্তু এটিকে পুরোপুরি লেনদেনযোগ্য করতে হবে। এতে গ্রাহকেরাও উপকৃত হবেন এবং সেকেন্ডারি মার্কেট তৈরি হবে, বাড়বে তারল্য। রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে এটি সম্ভব।সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর উত্তরায় বন্ড ও সুকুক মার্কেটের সম্ভাবনা নিয়ে বিএসইসি ও ডিএসই আয়োজিত সেমিনারে এ কথা বলেন গভর্নর।অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী। বেসরকারি বন্ডও কেনাবেচার আলাদা বাজার করার পরামর্শ দেন গভর্নর।তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ সরকারি বন্ড কিনতে পারছে; এই বিষয়টিও ইতিবাচক। এখন বেসরকারি বন্ডও লেনদেনযোগ্য করতে হবে ও সঠিক কাঠামোর আওতায় আনতে হবে। এতে রাতারাতি বন্ড মার্কেট দ্বিগুণ হয়ে যাবে এবং বাজার অনেক প্রাণবন্ত হবে।আহসান এইচ মনসুর বলেন, বন্ড কেনার ক্ষেত্রে সরকারের পেনশন ব্যবস্থা দীর্ঘমেয়াদি তহবিলের উৎস হতে পারে। এ ছাড়া করপোরেট পেনশন ফান্ড, প্রভিডেন্ট ফান্ড, বেনেভোলেন্ট ফান্ড—এসবকেও দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের জন্য ব্যবহার করা সম্ভব। সরকার চাইলে এসব বিষয়ে খুব দ্রুত কিছু পদক্ষেপ নিতে পারে। সে জন্য পেনশন নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ দরকার। সব প্রতিষ্ঠান সঠিকভাবে তহবিল গড়ে তুলছে, এই বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।সেমিনারে গভর্নর বলেন, বাংলাদেশের আর্থিক কাঠামো বৈশ্বিক অর্থনীতির তুলনায় আলাদা। এক অর্থে এটি উল্টো। বাংলাদেশে আর্থিক কাঠামো ব্যাংকনির্ভর; কিন্তু বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থা মূলত বন্ডনির্ভর। বৈশ্বিকভাবে প্রায় ১৩০ ট্রিলিয়ন বা ১৩০ লাখ কোটি ডলারের বন্ড ইস্যু করা হয়েছে; এটি বৈশ্বিক জিডিপির ১৩০ শতাংশ। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাজার হলো স্টক মার্কেট; এই বাজারে বিনিয়োগ আছে প্রায় ৯০ ট্রিলিয়ন বা ৯০ লাখ কোটি ডলার। তৃতীয়ত, মানি মার্কেট (ব্যাংক ঋণসহ সবকিছু) মোট ৬০ ট্রিলিয়ন বা ৬০ লাখ কোটি ডলারের, অর্থাৎ এটি বন্ড বাজারের অর্ধেকেরও কম। ফলে আমাদের কাঠামোটি একেবারেই উল্টো। পেনশন বা বিমা খাতের কথা বলছি–ই না, সেগুলো এতই ছোট যে বাংলাদেশে জিডিপির মাত্র শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ। অর্থাৎ গণনায় ধরার মতোও নয়। এই হলো বাস্তব চিত্র।আহসান এইচ মনসুর বলেন, আমাদের করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাংকমুখী। তারা বন্ড ইস্যু করতে চায় না, বরং অর্থায়নের জন্য ব্যাংকের কাছে যায়। কেন যায় তা সঠিক জানি না। এর পেছনে হয়তো কোনো প্রণোদনা কাজ করে। হয়তো ঋণ পরিশোধ না করার সুযোগ আছে, হয়তো রাজনৈতিক প্রভাব খাটানো যায়; কিছু সুবিধা যে আছে, তা স্পষ্ট। তাই আমাদের ব্যাংকনির্ভর করপোরেট সংস্কৃতি থেকে সরে আসতে হবে।অধিকাংশ দেশে যেমন চাহিদা ও সরবরাহ-দুটো দিকেই বন্ড মার্কেট গড়ে ওঠে উল্লেখ করে গভর্নর বলেন, বাংলাদেশেও সেটি করতে হবে। এখানে বাজারে সরকারি বন্ডের আধিপত্য আছে। কিন্তু করপোরেট বন্ড মার্কেট কার্যত হিসাবের মধ্যে নেই; এটি খুবই ছোট।সুকুকের বাজার খুবই ছোট উল্লেখ করে আহসান এইচ মনসুর বলেন, এখন পর্যন্ত মাত্র ২৪ হাজার কোটি টাকার ছয়টি সুকুক ইস্যু হয়েছে। অথচ আমাদের অনেক প্রকল্প থেকে আয় হচ্ছে। সেইসব সম্পদ সিকিউরিটাইজ করলে দ্রুত সুকুক বাজার বড় করা সম্ভব। যেমন যমুনা বা পদ্মা সেতু থেকে টোল আদায়ের প্রবাহ ব্যবহার করে নতুন সেতু নির্মাণে বন্ড ইস্যু করা যেতে পারে। একইভাবে মেট্রোরেল, টোল রোড, ফ্লাইওভার-এসব প্রকল্প থেকেও যে আয় হয়, তা সিকিউরিটাইজ করে নতুন প্রকল্পে বিনিয়োগের অর্থ জোগাড় করা সম্ভব। সে জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে একটি বিশেষ কার্যকরী বিভাগ দরকার; এর কাজ হবে শুধু এই বিষয়গুলো দেখা।আহসান এইচ মনসুর আরও বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে বিমার বাজার জিডিপির মাত্র শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ। ভারতে এটি ৪ শতাংশ-উন্নত দেশে ১২ শতাংশ। ফলে বিমা খাতের উন্নয়ন অপরিহার্য।অনুষ্ঠানের শেষে গভর্নর জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক ইতিমধ্যে বন্ড মার্কেট উন্নয়নের লক্ষ্যে গবেষণা প্রতিবেদন তৈরি করেছে। শিগগিরই সরকারের কাছে সুনির্দিষ্ট সুপারিশসহ তা উপস্থাপন করা হবে। সুপারিশগুলোতে বন্ড মার্কেটের বিভিন্ন খাত-কনভেনশনাল ও সুকুক (ইসলামি বন্ড) দুটোই অন্তর্ভুক্ত আছে বলে জানান তিনি।ভোরের আকাশ/এসএইচ