৫ আগস্ট সাধারণ ছুটি, প্রজ্ঞাপন জারি
এখন থেকে প্রতিবছর ৫ আগস্ট পালন করা হবে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস। সেইসঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের এ দিনটিতে সাধারণ ছুটি থাকবে সারাদেশে।
বুধবার (২ জুলাই) এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, প্রতিবছর ৫ আগস্টকে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ (সাধারণ ছুটিসহ) হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার।
এতে আরও বলা হয়েছে, ওই তারিখে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ হিসেবে পালনের জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস পালন সংক্রান্ত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ২০২৪ সালের ২১ অক্টোবর জারি করা পরিপত্রের ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত দিবস হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে সরকার।
ভোরের আকাশ/আজাসা
সংশ্লিষ্ট
গোপালগঞ্জে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ বা বিঘ্নিত হওয়ার খবর সঠিক নয় বলে জানিয়েছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়। বুধবার (১৬ জুলাই) ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এ বিষয় জানানো হয়।এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মোবাইল বা ব্রডব্যান্ড কোনো ধরনের ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করার বিষয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) কোনো নির্দেশনা জারি করেনি।বিবৃতিতে আরো বলা হয়, যেকোনো পরিস্থিতিতেই ইন্টারনেট শাটডাউন না করার বিষয়ে সরকারের অবস্থান সুস্পষ্ট। দেশের যেকোনো স্থানে ইন্টারনেট সেবা নিরবচ্ছিন্ন রাখতে সরকার বদ্ধপরিকর।মন্ত্রণালয় সতর্ক করে দিয়ে আরও জানিয়েছে, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং জনজীবনে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে মিস-ইনফরমেশন ও ডিস-ইনফরমেশন ছড়ানোর আগে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে সতর্ক থাকতে হবে।উল্লেখ্য, গোপালগঞ্জে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতা ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে যে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রয়েছে এ দাবি পুরোপুরি ভিত্তিহীন বলেই সরকার পক্ষের দাবি।ভোরের আকাশ/এসএইচ
ফের ওষুধ আমদানিতে শুল্ক আরোপের কথা বললেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডেনাল্ড ট্রাম্প। চলতি মাসের শেষ দিকে ওষুধ আমদানিতে শুল্ক আরোপ করা হতে পারে। পাশাপাশি শিগগিরই সেমিকন্ডাক্টরের (চিপস) উপরও শুল্ক বসানো হতে পারে। এ ধরনের শুল্ক যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওষুধ প্রস্তুতকারক, যেমন এলি লিলি, মার্ক ও ফাইজারের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে। কারণ, তারা অনেক ওষুধ বিদেশে উৎপাদন করে। এতে দেশটির সাধারণ ভোক্তাদের ওষুধের দাম বাড়তে পারে। একইভাবে সেমিকন্ডাক্টরের ওপর শুল্কের প্রভাব পড়বে অ্যাপল ও স্যামসাংয়ের ল্যাপটপ ও স্মার্টফোনের ওপরও। বাংলাদেশও যুক্তরাষ্ট্রে ওষুধ রপ্তানি করে। দেশের ওষুধের বৃহত্তম বাজার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দেশের ওষুধ শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা বলছেন, ট্রাম্পের এই ধরনের ঘোষণা প্রভাব পড়বে আমাদের এখানেও। ওষুধের দামও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। আগামী ১ আগস্ট থেকে যে পাল্টা শুল্ক কার্যকর হতে যাচ্ছে, এসব নতুন শুল্ক তার সঙ্গেই কার্যকর হতে পারে। গত মঙ্গলবার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাবিষয়ক সম্মেলনে অংশ নিয়ে ফেরার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সাংবাদিকদের এ কথা বলেন ।ট্রাম্প আরও বলেন, শুরুতে ওষুধে স্বল্প হারে শুল্ক আরোপ করা হবে। এক বছর পর শুল্কহার অনেক বেড়ে যাবে। তবে যুক্তরাষ্ট্রে নিজস্ব উৎপাদন কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য কোম্পানিগুলোকে সময় দেওয়া হবে। ব্লুমবার্গের সূত্রে ইকোনমিক টাইমস এ খবর দিয়েছে।ট্রাম্প আরও জানান, সেমিকন্ডাক্টরের ক্ষেত্রে সময়সূচি প্রায় একই রকম, তবে এসব পণ্যের ওপর শুল্ক বসানো অপেক্ষাকৃত সহজ হবে। এর আগে এপ্রিল মাসে দেশটির ফেডারেল রেজিস্ট্রার দপ্তরের এক নোটিশে এই তথ্য জানিয়েছিল।এরপর মঙ্গলবার ট্রাম্প সে কথার পুনরাবৃত্তি করলেন। এপ্রিলে ফেডারেল রেজিস্ট্রার দপ্তরের ঘোষণায় বলা হয়েছিল, জাতীয় নিরাপত্তার কারণে ওষুধ ও চিপে শুল্ক আরোপের কথা বলেছেন ট্রাম্প। কিন্তু বিশ্লেষকেরা মনে করেন, ওষুধ কোম্পানিগুলো যাতে যুক্তরাষ্ট্রে কারখানা চালু করে, সেই চেষ্টা চালাচ্ছেন ট্রাম্প। এ জন্য শুল্কের বোঝা চাপিয়ে দেওয়ার পথে হাঁটছেন। তিনি আরও বলেছিলেন, ‘আমাদের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, আমাদের বাজার বড়। তাই শিগগির আমরা ওষুধ ও চিকিৎসাসামগ্রীর ওপর বড় ধরনের শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেব।’ মূলত ওষুধের ক্ষেত্রে বিদেশি নির্ভরতা কমাতে চান তিনি।এ ছাড়া ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, তামার ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। ওষুধ আমদানির ওপর শুল্ক এক বছরের মধ্যে ২০০ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। তার দাবি, বিদেশি ওষুধের দাপটে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ছে। এ নিয়ে তিনি ১৯৬২ সালের ট্রেড এক্সপ্যানশন অ্যাক্টের ধারা ২৩২ অনুযায়ী তদন্তও শুরু করেছেন। ট্রাম্প সম্প্রতি বেশ কিছু দেশকে চিঠি পাঠিয়ে একতরফাভাবে শুল্কের হার জানিয়ে দিয়েছেন। যদিও তিনি বলেছেন, দর-কষাকষি চলবে।গত মঙ্গলবার তিনি জানান, ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। চুক্তিতে প্রস্তাবিত ৩২ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে ১৯ শতাংশ করা হয়েছে। এর বিনিময়ে দেশটি যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের জ্বালানি ও ৪৫০ কোটি ডলারের কৃষিপণ্য ও ৫০টি বোয়িং বিমান কিনবে।ট্রাম্প আশা করছেন, ১ আগস্টের আগেই তিনি আরও ‘দুটি বা তিনটি’ বাণিজ্য চুক্তি করতে পারবেন। এসব চুক্তির মধ্যে ভারতের সঙ্গে একটি চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি বলে তিনি জানিয়েছেন।তিনি বলেন, ‘ভারত ছাড়াও আরও কয়েকটি দেশ আছে। তবে বলব, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এসব চিঠি দিয়ে আমি খুশি।’ছোট দেশগুলোর জন্য ‘সাধারণ শুল্ক’ আরোপের পরিকল্পনার কথাও জানান প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, যেসব দেশ নিজস্ব হারে ছাড় পায়নি, সম্ভবত তাদের পণ্যে ১০ শতাংশের কিছু বেশি হারে শুল্ক আরোপিত হবে। এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা এই সপ্তাহেই মার্কিন প্রতিনিধিদের সঙ্গে বসবেন। ইইউর জন্য ৩০ শতাংশ শুল্ক নির্ধারিত রয়েছে।ট্রাম্প জানান, দক্ষিণ কোরিয়ার মতো কিছু দেশ ইতিমধ্যে বাণিজ্যের বিষয়ে আগ্রহ দেখিয়েছে, যদিও জাপান এখনো সাড়া দেয়নি। রাশিয়ার বিরুদ্ধে হুমকি দিয়ে দেওয়া ‘দ্বিতীয় স্তরের শুল্ক’ নিয়েও কথা বলেন ট্রাম্প।সম্প্রতি তিনি বলেছিলেন, ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে না পারলে রাশিয়ার বাণিজ্যিক অংশীদারদেরও শুল্কের আওতায় আনা হবে। যদিও এতে আমেরিকানদের জ্বালানির খরচ বাড়তে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।এ বিষয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি মনে করি না যে এর প্রভাব পড়বে।’ বিশ্লেষকেরা বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের ওষুধে শুল্ক আরোপের নীতি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে উন্নয়নশীল দেশের ওষুধ কোম্পানিগুলোর উৎপাদন, রপ্তানি, প্রযুক্তি গ্রহণ ও কর্মসংস্থানে প্রভাব ফেলবে। শুধু জনস্বাস্থ্য নয়, অর্থনীতিতে এর দীর্ঘমেয়াদি ও গুরুতর প্রভাব পড়তে পারে।ভোরের আকাশ/এসএইচ
২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানের স্মৃতিচিহ্ন, শহীদদের স্মারক ও আওয়ামী লীগ সরকারের নিপীড়নের ঘটনা তুলে ধরার জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন অর্থাৎ গণভবনকে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর’ করা হচ্ছে।আগামী ৫ আগস্টের মধ্যে জাদুঘরের রূপান্তরের কার্যক্রম সমাপ্ত করতে যে ধরনের নির্মাণ বা সংস্কারকাজ করতে হবে, সেই কাজ হবে সরাসরি ক্রয়পদ্ধতিতে, অর্থাৎ দরপত্র ডাকা হবে না। অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে গত মঙ্গলবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি এ বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।এতে মোট ব্যয় হবে ১১১ কোটি ১৯ লাখ ৮১ হাজার টাকা। এ সংবাদে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে টিআইবি। দুর্নীতিবিরোধী বেসরকারি সংস্থাটি বলেছে, সরকারি অর্থ ব্যয়ে ক্রয়ের ক্ষেত্রে যেভাবে বিদ্যমান আইন ও নীতিমালা এড়িয়ে সরাসরি ক্রয়পদ্ধতির যুক্তিতে কাজ দেওয়া হয়েছে, তা রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের অঙ্গীকারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।গতকাল বুধবার টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান এক বিবৃতিতে বলেন, অভ্যুত্থানের স্মৃতিচিহ্ন, শহীদদের স্মারক ও আওয়ামী লীগ সরকারের নিপীড়নের ঘটনা তুলে ধরার জন্য গণভবনকে জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর করার প্রশংসনীয় উদ্যোগটি এখন প্রশ্নের মুখে পড়ার ঝুঁঁকি সৃষ্টি হয়েছে। সরকারের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, জাদুঘরের রূপান্তরের কার্যক্রম দ্রুত শেষ করতে সরাসরি ক্রয়পদ্ধতিতে কাজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।বিবৃতিতে বলা হয়, এই প্রকল্পের সিদ্ধান্ত ২০২৪ সালের ডিসেম্বরেই গৃহীত হয়েছিল এবং ক্রয়নীতি অনুযায়ী উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার জন্য দরপত্র ডাকাসহ যথাযথ নীতি অনুসরণের জন্য সময়ও হাতে ছিল। অথচ প্রায় সাত মাস সময় পার করে নির্ধারিত সময়সীমার তিন সপ্তাহ আগে সরাসরি ক্রয়পদ্ধতি বেছে নিয়ে সরকারি ক্রয় বিধিমালার ৭৬(১) ও ৭৬(২) ধারাকে পাশ কাটানো হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, সরাসরি ক্রয়পদ্ধতির ব্যবহার কোনোভাবেই অবাধ প্রতিযোগিতা এড়াতে বা নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রতি আনুকূল্য প্রদর্শনের জন্য করা যাবে না এবং এই পদ্ধতিতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি না থাকায় এর প্রয়োগ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণের প্রক্রিয়াটি কোনো বিশেষায়িত ক্রয় নয় উল্লেখ করে টিআইবি বলছে, ‘এ প্রকল্পে বিদ্যুৎ ও যান্ত্রিক (ইএম) এবং পূর্ত খাতের প্রায় ১১১ কোটি টাকার কাজ দুটি ভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে সরাসরি দেওয়া হয়েছে। প্রশ্ন হলো, নিয়মিত এ ক্রয়ের জন্য কেন সরাসরি ক্রয়পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে? এ কাজের জন্য যে দুটি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হলো তা কিসের ভিত্তিতে? কোন যুক্তিতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্বাচিত করা হলো; কার্যাদেশের মূল্য নির্ধারণের ভিত্তিই-বা কী। এত বড় অঙ্কের অর্থের কাজ কোনো উন্মুক্ত দরপত্র ছাড়া প্রদান করায় রাষ্ট্রীয় সম্পদের যথাযথ ও সদ্ব্যবহারের প্রশ্নে অন্তর্বর্তী সরকারের অঙ্গীকারকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে বলে মন্তব্য করেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক।তিনি বলেন, একদিকে যেখানে সরকার দুর্নীতি দমনসহ রাষ্ট্র সংস্কারের অভীষ্টের কথা বলছে, সেখানে সরকারি ক্রয়ে এ ধরনের মূলনীতি লঙ্ঘন আত্মঘাতী ও স্ববিরোধী। ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর যথেষ্ট সময় থাকার পরও কেন বিলম্ব হলো, দরপত্র ছাড়া কাজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজন কেন হলো, পুরো বিষয়টি কি উদ্দেশ্যমূলক, এ ধরনের প্রশ্নের নিরপেক্ষ তদন্ত ও সুস্পষ্ট ব্যাখ্যার দাবি জানাই।’বিবৃতিতে আরও বলা হয়, টিআইবি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, দুর্নীতিবিরোধী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য রাষ্ট্রীয় অর্থ ব্যবহারে পর্যাপ্ত স্বচ্ছতা ও প্রতিযোগিতা নিশ্চিত না হলে সব সংস্কার ও উত্তরণের কথা কেবল লোকদেখানো হয়েই থাকবে, যার ফল হবে দুর্নীতিকে স্বাভাবিকতা প্রদানের ধারাকে অব্যাহত রাখা ও উৎসাহিত করা।ভোরের আকাশ/এসএইচ
ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে একটি উদীয়মান শক্তি হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে বাংলাদেশ। ফলে বিশ্বের শক্তিধর রাষ্ট্রগুলোর চোখ এখন বাংলাদেশের দিকে। ভূ-রাজনীতিতে গুরুত্বতার পাশাপাশি ঝুঁকিও বেড়েছে দেশটির।কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরায়েল ছাড়া বিশ্বের সকল দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে বিশ্বাসী বাংলাদেশ। কিন্তু বর্তমানে ভূ-রাজনীতি বিশেষ করে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রকে সমানতালে সামাল দিতে গিয়ে দেশটিকে বারবার বিপাকে পড়তে হচ্ছে। বিশ্বরাজনীতির অন্যতম শক্তি চীন ও আঞ্চলিক শক্তি ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ভৌগোলিক নৈকট্য এবং দক্ষিণ এশিয়াসহ এ অঞ্চলে এই দুই দেশের প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাংলাদেশ বিষয়ে আলোচনায় অনেক আগেই এক নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে। এ বিবেচনায় এবার যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য বৈশ্বিক শক্তির কাছে বাংলাদেশ সাম্প্রতিক সময়ে গুরুত্ব পাচ্ছে।কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই থেকেই নানা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সমস্যা মোকাবিলা করেই দৃপ্তপথে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ঠিক সেই সময়ে দেশটির বিরুদ্ধে চলছে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্ত। তারা বিভিন্নভাবে অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে এদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে আঘাত করছে। তাই এখন সবার একটাই প্রশ্ন-পরাশক্তিগুলো কি পারবে বাংলাদেশকে তাদের ভূরাজনীতির দাবার ঘুঁটি বানাতে, নাকি বাংলাদেশই হবে আঞ্চলিক ভূরাজনীতির কেন্দ্র?ভূ-রাজনীতিতে বাংলাদেশের অবস্থান : কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, গত এক দশকে অবস্থার বদল ঘটেছে একাদিক্রমে চীনের উত্থান, বিশ্ব পরিসরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব হ্রাস, দক্ষিণ এশিয়ায় আধিপত্য বিস্তারের জন্য ভারতের সুস্পষ্ট প্রয়াস এবং তার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি এবং তার আলোকে বাংলাদেশের অনুসৃত পররাষ্ট্রনীতির কারণে।১/১১-এর হামলার পর মুসলিমপ্রধান দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে বিবেচনার কারণে বাংলাদেশ সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ বৃদ্ধি পায়। নিরাপত্তার বিষয়কে প্রাধান্য দেওয়া এবং বুশ প্রশাসনের তথাকথিত ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের’ বিবেচনা থেকে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত হয় নিরাপত্তা সহযোগিতার বিষয়। জর্জ ডব্লিউ বুশের আমল থেকেই যুক্তরাষ্ট্র মূলত ভারতের চোখেই বাংলাদেশকে দেখে এসেছে। এর পেছনে একটা বড় কারণ হচ্ছে, এ অঞ্চলে ভারতীয় আধিপত্য নিশ্চিত করে যুক্তরাষ্ট্র পরাশক্তি চীনকে ঠেকাতে চায়।চীন কেবল বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অস্ত্র সরবরাহকারীই নয়, এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার। বৈশ্বিক পরাশক্তি হিসেবে চীনের উত্থানের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে চীনের বিনিয়োগ লক্ষ করা যায়। ২০১৬ সালে বাংলাদেশ ও চীন একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করে, যেখানে চীন ২৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ঋণ প্রতিশ্রুতি। যদিও চীনের দেওয়া ঋণের ডিসবার্সমেন্ট খুবই কম।চীনের সঙ্গে এ চুক্তি স্বাক্ষরের কয়েক মাস আগেই বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে দুই বিলিয়ন ডলারের উন্নয়ন প্রকল্প ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর করে। কিন্তু ভারতের এ ঋণে যুক্তির চেয়েও বড় বিষয় হচ্ছে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে তার সম্পর্ক রাজনৈতিক। বাংলাদেশের ন্যায্য পাওনা না মিটিয়ে, বাংলাদেশের সঙ্গে অসম বাণিজ্য বহাল রেখে ভারত যে সব ধরনের কৌশলগত ও অর্থনৈতিক সুবিধা লাভ করে, তার কারণ এটিই। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ভারতের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা সুস্পষ্ট।প্রায় এক দশক ধরে ভারত আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশে কর্তৃত্ববাদী সরকারব্যবস্থা টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করেছে। ভারতের কূটনীতিক এবং রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তাদের কাছ থেকে আওয়ামী লীগ ২০১৪ ও ২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে যে দ্বিধাহীন সমর্থন পেয়েছিল, তার মাধ্যমেই এ বিষয়ে ভারতের অবস্থান পরিষ্কার। ভারত আওয়ামী লীগকে প্রশ্নহীনভাবে সমর্থন দিয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর একটি অংশের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। কিন্তু এটা প্রশ্নাতীত যে ভারতের প্রত্যক্ষ প্রভাববলয়ের মধ্যে আছে বাংলাদেশ।যদিও বাংলাদেশের বর্তমান সরকার রাজনৈতিকভাবে ভারতেরই কাছের বন্ধু, তবু চীনের জন্য তাদের দরজা কিন্তু বন্ধ নয়। এর কারণ কেবল অর্থনৈতিক সুবিধা নয়। সাম্প্রতিক সময়ে পশ্চিমা দেশগুলো, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও গণতান্ত্রিক পরিসর সংকোচন নিয়ে সমালোচনা রয়েছে। সম্প্রতি আল-জাজিরা টেলিভিশনে প্রচারিত একটি তথ্যচিত্রে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর জাতিসংঘ দুর্নীতির তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।মানবাধিকার বা গণতন্ত্রের সংকটের ইস্যুগুলোতে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের যদি অবনতি ঘটে, সে ক্ষেত্রে বিকল্প হিসেবে চীনকে হাতে রাখতে চায় সরকার। অন্যদিকে, এ অঞ্চলে চীনের মিত্র পাকিস্তান, তাই বাংলাদেশের সঙ্গে মিত্রতার মাধ্যমে চীন ভারতের দুই দিকে মিত্রতার বলয় গড়তে পারবে ও ভারত মহাসাগরে তাদের আধিপত্য বিস্তার করতে পারবে, এমন আশা থেকেই চীন বাংলাদেশের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠতা তৈরি করতে চায়। বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত চীন ও ভারতের মধ্যে একটা ‘ব্যালান্সিং গেম’ বা ভারসাম্য নীতি বজায় রেখেছে। কিন্তু এ ভারসাম্য রাখাটা কঠিন ও ঝুঁকিপূর্ণ, কারণ ভারসাম্য রাখতে ব্যর্থতা যেকোনো একটি দেশের সঙ্গে শত্রুতা তৈরি করতে পারে। তাই বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির সফলতা নির্ভর করবে কতটা দক্ষতার সঙ্গে বাংলাদেশ এ ভারসাম্যের ‘দড়িতে’ হাঁটতে পারে।মিয়ানমারের আরাকানকেন্দ্রিক জটিলতাকূটনৈতিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য যাকে আমরা আরাকান নামে জানি, সেই আরকান আজ আন্তর্জাতিক ভূরাজনীতির এক নতুন যুদ্ধক্ষেত্র। আরাকানে চীনের কাইউকফিউ-ইউনান গ্যাস ও তেলের পাইপলাইন রুট, যা তাদের জ্বালানি নিরাপত্তার এক বিকল্প করিডর। এই পাইপলাইনের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্য থেকে আনা তেল ও গ্যাস বঙ্গোপসাগর থেকে চীনের উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলে প্রবাহিত হয়। এই পাইপলাইনের মাধ্যমে জ্বালানি সরবরাহ ব্যাহত হলে চীনকে মালাক্কা প্রণালির মাধ্যমে অনেক পথ ঘুরে এই সরবরাহ করতে হবে, যা শুধু ব্যয়বহুলই নয়, কিছুটা বিপজ্জনকও বটে। যেকোনো সংঘাতময় পরিস্থিতিতে ভারত ও পশ্চিমা শক্তিগুলো এই সরু সরবরাহ সমুদ্রপথ আটকে দিতে পারে। ভারতের শিলিগুড়ি করিডরের ‘চিকেন নেক’-এর মতো এটিও চীনের জন্য এক ‘চিকেন নেক’।মিয়ানমারের এ গৃহযুদ্ধের বর্তমান পরিস্থিতি ক্রমে ঘোলা হয়ে উঠছে। এখন আরাকান আর্মি (এএ) রাখাইন রাজ্যের বেশির ভাগ এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে এবং চীনের পাইপলাইন ও ভারতের কালাদান-মাল্টিমোডাল করিডর এলাকায় এই যুদ্ধ চলছে। মিয়ানমার সেনাবাহিনী পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে এবং কোনো রকম সিত্তেসহ কয়েকটি এলাকা দখলে রেখেছে। এ পরিস্থিতি ঘিরে আন্তর্জাতিক কূটনীতি দ্রুত জটিল হয়ে উঠছে। আরাকান আর্মি ও রোহিঙ্গা সংগঠনগুলো বর্তমানে সেই অস্থিরতার উৎস হয়ে উঠেছে। যদিও এগুলোর কার্যক্রম মূলত মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে; তবু চীনা অর্থনৈতিক করিডরও এখন তাদের হামলার আওতায় এসেছে।ব্রিগেডিয়ার জেনারেল(অব.) তুষার কান্তি চাকমা বলেন, রাখাইন এখন আর শুধুই মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংকট নয়-এটি হয়ে উঠছে বিশ্বশক্তির ভূ-রাজনৈতিক টানাপোড়েনের কেন্দ্র। যুক্তরাষ্ট্র যদি আরাকান আর্মিকে চীনা পাইপলাইন বাধাগ্রস্ত করতে উৎসাহ দেয়, তাহলে এই ছায়াযুদ্ধ শুধু রাখাইনে সীমাবদ্ধ থাকবে না - তার ধাক্কা লাগবে বাংলাদেশের সীমান্ত, অর্থনীতি ও পররাষ্ট্রনীতিতে।বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত নিরপেক্ষ থাকলেও যুক্তরাষ্ট্র-চীন প্রতিযোগিতা এবং ভারত-মিয়ানমার সামরিক সমীকরণে ঢাকা বিশাল চাপের মুখে পড়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ চাইছে চট্টগ্রাম বন্দরকে আঞ্চলিক ট্রানজিট কেন্দ্রে রূপান্তর করতে; কিন্তু আরাকানের অস্থিরতা এবং মার্কিন-চীন সংঘর্ষ যদি বন্দরের পাশেই রণাঙ্গনের রূপ নেয়, তবে বাংলাদেশের স্বপ্ন ক্ষতিগ্রস্ত হতে বাধ্য। যুক্তরাষ্ট্র-চীন-ভারত তিন পক্ষের সঙ্গেই ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা। যেন বাংলাদেশ কোনো পক্ষের সঙ্গে যুক্ত না হয়ে পরে।চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ফরিদুল আলম বলেন, বিশ্ব রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্র এমন এক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে, যেখানে কেবল সামরিক শক্তি ব্যবহারই তার রাজনৈতিক কর্তৃত্ব অক্ষুন্ন রাখতে পারে। এখানে সত্যিকার অর্থে শান্তি প্রতিষ্ঠা, পারস্পরিক সহাবস্থান এবং শক্তির ভারসাম্য সৃষ্টি করার মতো রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব চীন ও রাশিয়ার মতো দেশকেও উগ্রপন্থার দিকে ঠেলে দিয়েছে।অর্থনীতিবিদ ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে এ ধরনের পরস্পরবিরোধী পদক্ষেপের প্রভাব বাংলাদেশের ওপর পড়বেই। পদক্ষেপ দীর্ঘমেয়াদী হলে তা বৈশ্বিক অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির গতিকে ধীর করবে এবং এর ফলে বৈশ্বিক কর্মসংস্থানে ও বাংলাদেশের মতো স্বল্প মাত্রায় রপ্তানি করে এমন দেশগুলোর ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ারও আশঙ্কা রয়েছে।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ ড. দেলোয়ার হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার বাস্তবতায় ভারত-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের ভিন্ন মাত্রা রয়েছে সত্য, কিন্তু এই দুই রাষ্ট্র এ অঞ্চলকে পর্যবেক্ষণের ক্ষেত্রে একই আঙ্গিকে দেখবে, এমনটি প্রত্যাশা করা যায় না। দৃষ্টান্ত হিসেবে মিয়ানমারের কথা বলা যেতে পারে। মিয়ানমারের সঙ্গে চীনের কৌশলগত সম্পর্ক রয়েছে। মালাক্কা উভয় সংকটের কারণে চীন মিয়ানমারের সঙ্গে আরও বেশি যুক্ত হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে চীনের সঙ্গে মিয়ানমারের ব্যাপক অংশীদারত্ব আমরা দেখেছি। তাছাড়া নিরাপত্তা ও সামরিক ক্ষেত্রেও দুই দেশের মধ্যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে। বর্তমান বিশ্বে মিয়ানমারের সবচেয়ে বড় বন্ধু রাষ্ট্র চীন। পাশাপাশি চীন ও মিয়ানমার অর্থনৈতিক করিডর গড়ে তুলতে শুরু করেছে। এতদসত্ত্বেও মিয়ানমার প্রসঙ্গে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিন্ন অবস্থান লক্ষণীয়। যেমন রোহিঙ্গা ইস্যু ও মিয়ানমারের সামরিক সরকার থাকা সত্ত্বেও মিয়ানমারের সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্ক রয়েছে। অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারের ওপর নানা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। বার্মা আইন নামে একটি নতুন আইনও জারি করেছে। মিয়ানমারবিরোধী জোট কর্তৃক গঠিত জাতীয় ঐক্য সরকারকে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন করছে। সংগত কারণেই প্রশ্ন জাগে, ভূ-রাজনৈতিক উদাহরণ সামনে থাকার পরও কোনো কোনো আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষক কীভাবে প্রত্যাশা করেন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি একই হবে? বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ভূরাজনৈতিক ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট রয়েছে। এই প্রেক্ষাপট ভারতের কাছে যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি বাংলাদেশের কাছেও গুরুত্বপূর্ণ। একই কথা যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নাও হতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বাংলাদেশ বৈশ্বিক রাজনীতির কৌশলের অংশ হিসেবে বিবেচিত। ভারতের ক্ষেত্রে তা আঞ্চলিক বাস্তবতা ও তাদের রাষ্ট্রীয় স্বার্থের সঙ্গে জড়িত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মৌলিক স্বার্থ বিবেচনায় কানাডা কিংবা মেক্সিকোর যে গুরুত্ব বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তেমন গুরুত্ব প্রত্যাশা করা ঠিক হবে না। একইভাবে ভারতের ক্ষেত্রে বলা যায়, বাংলাদেশের সঙ্গে দেশটির দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের গুরুত্ব অপরিসীম। বিগত দেড় দশকে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের দিকে দৃষ্টিপাত করলে বিষয়টি দিবালোকের মতো পরিষ্কার মনে হবে।ভোরের আকাশ/এসএইচ