জনগণের প্রতিশ্রুতি পূরণে বিএনপি অঙ্গীকারবদ্ধ
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, দেশের মানুষ এখন পরিবর্তন চায়, প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন চয়ই। জনগণের রায় নিয়ে আমরা মানুষের প্রতিশ্রুতি পূরণে কাজ করতে বিএনপি অঙ্গীকারবদ্ধ। তিনি বলেন, আগামীর নীতি জনগণের উন্নয়নের রাজনীতি। ভোটের অধিকার ও বাক স্বাধীনতা নিশ্চিত করবে বিএনপি। জনগণই বিএনপির একমাত্র শক্তি। বিএনপি মানুষের আকাক্সক্ষাকে ধারণ করে কাজ করছে উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশের মানুষ আর কথামালার রাজনীতি চায় না। মানুষ পরিবর্তন চায়, প্রতিশ্রুতি চায় না। চায় প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন। জনগণের সেই প্রত্যাশা পূরণে বিএনপি বেশ কিছু পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। যেগুলো বেসিক জিনিস আমরা সেখান থেকেই শুরু করব।সোমবার জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান, শোক ও বিজয়ের বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে রাজধানীর ইঞ্জনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল আয়োজিত “ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলন ও আমার না বলা কথা” শীর্ষক আলোচনা সভা এবং শহীদ পরিবারকে সম্মাননা প্রদান প্রধান অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।এরআগে এ সমাবেশে গণ-অভ্যুত্থানে প্রাণ হারানো যুবদলের ৭৮ শহীদ পরিবারকে দেওয়া হয় সম্মাননা, উপহার ও আর্থিক অনুদান। শহীদ পরিবারের পাশাপাশি এই অনুষ্ঠান থেকে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে সম্মাননা দেওয়া হয়। যুবদলের সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্নার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়নের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ও যুবদলের সাবেক সভাপতি মির্জা আব্বাস, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মেহেদি আমিন, মানবাধিকার কর্মী সাইয়েদ আবদুল্লাহ, ঢাকা মহানগর দক্ষিন যুবদলের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন, দীর্ঘদিন গুম হয়ে থাকা অ্যাডভোকেট সোহেল রানা, জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের হাসপাতালে জরুরী বিভাগের চিকিৎসক সায়েম আল মনসুর ফয়েজী, শহীদ মোসলেহ উদ্দিনের ছেলে আপন, ইয়াহিয়া আলীর মেয়ে তাইয়েবা খাতুন, হাফিজুর রহমান সুমনের স্ত্রী বিধী আখতার, নাদিম মিজানের স্ত্রী তাবাসসুম আখতার নেহা।এ সময় অনুষ্ঠানের উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সহ-সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম রাসেল, আবদুস সাত্তার পাটওয়ারী, যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি রেজাউল করিম পল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক এনামুল হক, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক শরিফ উদ্দিন, যুবদল নেতা মজিবুর রহমান সবুজ, মাহফুজুর রহমান, গিয়াস উদ্দিন মামুনসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।যে নেতৃত্ব জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারে, সেই-ই প্রকৃত নেতা- যুবদলকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরও বলেন, গত সাড়ে ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে যুবদলের বহু নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন। বিএনপির পরিকল্পনা গুলো জনগণের কাছে তুলে ধরা। কারণ জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারলেই আপনি নেতা, জনগণ প্রত্যাখ্যান করলে আপনি নেতা নন।তিনি বলেন, প্রশাসনিক সহায়তায় নেতৃত্ব প্রদর্শন করা যায় আর জনগণ সমর্থন দিলে নেতা হওয়া যায়। তাই জনগণের আস্থায় থাকুন।ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে যুবদল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে জানিয়ে তিনি বলেন, অতীতের সাফল্যই নয়। জনগণের আস্থার মধ্যদিয়ে ভবিষ্যতের পথও নির্ধারণ করবে। আমি যুবদলের প্রতি আহ্বান জানাই, জনগণের প্রতি আস্থা রাখুন, তাদের আস্থার প্রতিদান দিন। কারণ যে নেতৃত্ব জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারে, সেই-ই প্রকৃত নেতা। আর জনগণ প্রত্যাখান করলে নেতৃত্ব দেওয়া সম্ভব নয়।তারেক রহমান বলেন, বিএনপি জনগণের আকাঙ্ক্ষা ধারণ করে রাজনৈতিক কর্মসূচি প্রণয়ন করছে। দেশে-বিদেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও নিরাপদ কর্মপরিবেশ সৃষ্টি করাই আমাদের লক্ষ্য। তিনি বলেন, বিএনপি দেশের প্রত্যেক মানুষকে তার নিজ অবস্থানে থাকে সাবলম্বী করার উদ্যোগ নেবে। যুবসমাজের কর্মসংস্থান তৈরি করা হবে। দেশব্যাপী ভাষা শিক্ষা কোর্স চালু করবে বিএনপি। একাধিক ভাষা শেখার মাধ্যমে বিদেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টির সুযোগ বাড়বে। বিএনপি কর্মমুখী শিক্ষা বাস্তবায়নে কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, মানুষের জীবনমান উন্নয়নে সকল কাজ করবে বিএনপি। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পকে বিশ্ববাজারে ছড়িয়ে দিতে কাজ করবে সরকার। বিএনপি সরকারে এলে কর্মক্ষম জনগণকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তৈরি করে কর্মসংস্থান তৈরি করবে। এমনকি বিভিন্ন ভাষায় প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের বিদেশে কাজ করার সক্ষমতা তৈরিতে কাজ করবে বিএনপি। তারেক রহমান বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে সারা দেশে হেলথ কেয়ার চালু করা হবে। এখানে বেশির ভাগ কর্মী হবে নারী। সরকার গঠন করলে শহীদ জিয়াউর রহমানের খালখনন কর্মসূচি আবারও শুরু করবে বিএনপি।তারেক রহমান জানান, ভবিষ্যতে নারী-পুরুষ উভয়কে উদ্যোক্তা ও বিনিয়োগকারী হিসেবে গড়ে তোলা হবে। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের প্রসার ঘটানো হবে। শিক্ষিত বেকার সৃষ্টির পেছনে বর্তমান শিক্ষা কারিকুলাম দায়ী উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে শিক্ষা কারিকুলাম যুগপোযোগী হিসেবে গড়ে তোলা হবে। এ লক্ষ্যে বিএনপির বিশেষজ্ঞ টিম কাজ করছে। তাছাড়া প্রান্তিক পর্যায়ে জনগণের কাছে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেবে বিএনপি।তারেক রহমান আরো বলেন, বিএনপি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় গেলে দেশের কৃষি ও মেহনতী মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সেই ঐতিহাসিক খাল খনন কর্মসূচি আবার চালু করবে। তাছাড়া বন্যা খরা থেকে রক্ষা পেতে দেশব্যাপী ২৫ কোটি গাছের চারা রোপন করা হবে।ভোরের আকাশ/জাআ